সাত বছর পরে ভাঙড়ে তালা ভেঙে পার্টি অফিস খুলে বিস্ফোরক বিকাশ


মঙ্গলবার,৩০/০৪/২০১৯
946

বাংলা এক্সপ্রেস---

সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে, ভাঙড়:তৃণমূলের দামালছেলে আরাবুলের খাসতালুক ভাঙড়ে পার্টি অফিস খুললো সিপিআইএম।ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজারে দীর্ঘ সাত বছর পার্টি অফিসটি তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল বলে জানা গিয়েছে। সিপিআইএম নেতা তথা যাদবপুরের বামপ্রার্থী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সোমবার সকালে কর্মীদের নিয়ে পার্টি অফিস খোলেন।ইট দিয়ে তালা ভাঙেন ভাঙড় ২ ব্লক সিপিআইএমের সম্পাদক রশিদ গাজী। সঙ্গে ছিলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবতী, ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিআইএমের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষসহ স্থানীয় নেতৃত্ব।

তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সিপিআইএমের এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়টিতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। ক্রমশ ক্ষষ্ণীয় শক্তিতে পরিণত হওয়া ভাঙড়ের সিপিআইএম কর্মীরা এতদিন পার্টি অফিস খোলার সাহস দেখিনি। জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে ধীরে ধীরে শক্তি বৃদ্ধি করে সিপিআইএম।।কিছুটা হলেও শক্তি কমে আরাবুল এবং তৃণমূলের।এদিন পার্টি অফিস খুলে কিছুটা হলেও শক্তি বাড়িয়েছে সিপিআইএম। কর্মীদের দেখেও যথেষ্ট উজ্জীবিত মনে হয়েছে।

পার্টি অফিস খুলে সুজন চক্রবর্তী, তুষার ঘোষ,রশিদ গাজীদের সঙ্গে নিয়ে ভাঙড় বিজয়গঞ্জ বাজার পরিক্রমা করেন বিকাশ বাবু।পৌঁছে যান অলিগলিতে।কথা বলেন এবং আশীর্বাদ চান বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। অনেক সবজি ব্যবসায়ী, দোকানদার এবং পথ চলতি শিশুদের সঙ্গে আলিঙ্গন এবং করমর্দন করতে দেখা যায় যাদবপুরের বাম প্রার্থীকে।তিলোত্তমা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশ বাবু হেবিওয়েট প্রার্থী হয়েও নিজেকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে রাখেননি। মানুষের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন,মিশে যান তাদের। প্রখর রোদ থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য এদিন তাঁর মাথায় ছিল ক্যাপ।

এদিন তালা ভেঙে পার্টি অফিস খুলে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিকাশ বাবু বলেন, একটা রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিস দীর্ঘদিন তালাবন্ধ করে রেখেছিল তৃণমূল। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে ,তৃণমূলের দুস্কৃতিরা কি পরিমানে মানুষের উপর জুলুম করেছিল। এই দখলদারির রাজনীতি তৃণমূল ২০১১ সালের পর থেকে শুরু করেছিল।শাসকদলের দ্বারা বন্ধ পার্টি অফিস গুলো আমরা পর্যায়ক্রমে খুলছি।শুধু ভাঙড় নয় সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্ধ থাকা পার্টি অফিস গুলো আমরা খোলার চেষ্টা করছি। মানুষ কিছুদিন চুপ ছিল,এখন তারা সংঞ্জবদ্ধ হচ্ছে।আবার যদি পার্টি অফিস বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়, তবে প্রতিরোধ করা হবে। আমরা ছাড়ব না, আমাদের যুবকরা মেরে তাড়িয়ে দেবে।

এবিষয়ে বাম পরিষদীয় দলনেতা তথা যাদবপুরের বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, শুধু পার্টি অফিস কেন?বিরোধীদের যেকোনো সাধারণ কর্মকাণ্ডতেও বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। কোন রাজনৈতিক দল তাদের পার্টি অফিস খুলবে কিনা? তাও কারও পারমিশন লাগছে! পুলিশ এবং প্রশাসন নির্বিকার! ভাঙড়ে দীর্ঘদিন পর পার্টি অফিস খোলাতে সিপিআইএম কর্মীরা উৎসাহ পেলেন বলে জানান সুজন বাবু।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিআইএমের পার্টি অফিসে তালা মারার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ওহিদুল ইসলাম।তিনি বলেন, কোন স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসে আমরা তালা মারতে যাব কেন?তৃণমূল কংগ্রেসের স্বভাব এটা নয়। ভাঙড়ে যেককোন দল তাদের রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে পারে।আমরা কাউকে বাধা দেইনা। আমাদের দলের কোন কর্মী যদি জড়িত থাকে তবে পুলিশ বলুক ।ওদের পার্টি অফিসের পাশেই আমাদের বড় পার্টি অফিস রয়েছে। আমরা সেখান থেকেই আমাদের দলীয় কাজ কর্ম পরিচালনা করি। বিকাশ বাবুদের প্রচারে লোক হচ্ছে না,তাই ভুলভাল কথা বলছে।

বিজয়গঞ্জ বাজার ছাড়াও ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে প্রচার চালান বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। মেঠো পথ ধরে পৌঁছে যান প্রত্যন্ত গ্রামের ভিতরে।ভাঙড়ের বিতর্কিত তৃণমূল প্রধান মোদাচ্ছের হোসেনের এলাকা ভোগালি ২ অঞ্চলের কাঁঠালিয়া,ভূমরু, কাঁটাডাঙ্গা, চিলাচলা, জামিরগাছি প্রভৃতি গ্রামের মধ্যদিয়ে যায় বিকাশের প্রচার গাড়ী। সেখানে সিপিএম কর্মীরা তাঁকে হাত নেড়ে নেড়ে অভিবাদন জানান। এছাড়া আরও কয়েকটি অঞ্চল পরিক্রমা করে পোলেরহাট ১ নম্বর অঞ্চলের স্বস্থ্যায়নগাছি গ্রামে গিয়ে এদিনের সকালের প্রচার শেষ হয়।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট