হাওড়া: সেই নৃশংস ঘটনার পর কেটে গিয়েছে দেড় মাসেরও বেশি। ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্বু কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের গাড়িতে হওয়া বিস্ফোরণে কেঁপে গিয়েছিল গোটা দেশ। শূন্য হয়েছিল অনেক পরিবার। কেউ হারিয়েছিলেন স্বামী। কেউ বাবা। কেউ বা ছেলেকে। বেশিরভাগই মেতে উঠেছেন আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। কিন্তু কী অবস্থায় দিন কাটছে সেই নিরীহ পরিবারগুলির?
খোঁজ নিতেই যোগাযোগ করা হয় বাউড়িয়ার চককাশিপুর গ্রামে। শুরুর দিনগুলিতে তৎপরতা থাকলেও সময়ের নিয়মে তাতে এসেছে ভাঁটা। বিশেষত কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। যাদেরই অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত ছিলেন শহিদ সিআরপিএফ জওয়ান বাবলু সাঁতরা।সাত বছরের মেয়ে পিয়াল বুঝতেই পারেনি কত বড় একটা জিনিস হারিয়ে ফেলল সে। এখনও তার দিন কাটে সেভাবেই। মাঝেমধ্যেই মা মিতার কাছে জানতে চায়, বাবা কোথায়?আড়ালে গিয়ে চোখ মোছা ছাড়া কোনও উত্তর দিতে পারেন না মিতা।
বাবলুর ভাই কল্যাণ সাঁতরার বললেন, কোনও কিছুতেই যে আমাদের পরিবারের অভাবপূরণ করা সম্ভব নয়। তবু বউদি আর বাচ্চাটার ভবিষ্যতের জন্য চেষ্টা করছি সরকারি ক্ষতিপূরণগুলো পাওয়ার। রাজ্য সরকারের টাকা পেয়ে গিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের কোনও খবর নেই। কল্যাণ সাঁতরা বলেন, যেহেতু লোকসভা ভোট। তাই হয়তো সব ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে। যে ভোটের জন্য ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে সব, সেই ভোটে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে অবশ্য পিছিয়ে থাকছে না শহিদ পরিবার। নিয়ম মেনে তাঁরা যাবেন সাংবিধানিক কর্তব্য পালন করতে।
তবে বাবলুর পরিবার অবশ্য সার্জিকাল স্ট্রাইকেপ্রলেপ দিচ্ছে নিজেদের মনের ক্ষতে। ঘটনার সতেরো দিনের মাথায় খুলে গিয়েছিল লেথাপোরার সেই অভিশপ্ত রাজপথ। স্বাভাবিক নিয়মে যাতায়াত শুরু করেছিল গাড়ি-ঘোড়া। কিন্তু এখনও চেনা ছন্দে জীবনের পথে ফিরতে পারেনি শহিদ পরিবার। তা অবশ্য কোনওদিনই সম্ভব নয়। তবু যে সাহায্যগুলি প্রাপ্য ছিল সাঁতরা পরিবারের, তার সব মেলেনি এখনও। কবে মিলবে নেই কোনও উত্তর। তবু দিনগোনা।