ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তেই সোমবার সাতসকালেই দেওয়াল দখলে স্ব-দলবলে নেমে পড়লেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। বাংলার ভোট মানে সবার নজর আরাবুল-অনুব্রত জুটির দিকে। এই জুটি নির্বাচনের সময় কখন?কোথায়?কি করছেন ?বা কি বলছেন? তা দেখার বা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে থাকেন তৃণমূলের নিচুতলার কর্মী থেকে সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও।
রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই রাতেই ভোট ময়দানে নেমে পড়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অপরদিকে ভাঙড়ের তাজা নেতা খ্যাত আরাবুল ইসলামও পিছিয়ে থাকতে চাননি।তিনি সোমবার সাত সকালেই স্ব-দলবলে নেমে পড়লেন দেওয়াল দখলের লড়াইয়ে। ভাঙ্গড় ২ নম্বর ব্লকের পোলেরহাট ১ নম্বর অঞ্চলের পোলেরহাট বাজারে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আরাবুল ইসলাম নিজেও রং-তুলি নিয়ে সামিল হন। প্রার্থীর নাম ঘোষণা না হওয়ার কারণে এদিন শুধুমাত্র দেওয়ালে চুনকামের কাজটি করা হয়।
রবিবার ভারতের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক নয়াদিল্লির বিজ্ঞানভবনে ২০১৯ লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেন। নির্ঘণ্ট অনুযায়ী সারাদেশে মোট সাতটি পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পশ্চিমবাংলা থেকে ৪২ টা আসনের জন্যও সাত দফাতেই ভোট গ্রহণের কথা ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সেই অনুযায়ী আগামী ১৯ মে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হওয়ার কথা। ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র যেহেতু যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীনস্থ, সেই কারণে বেশ কিছুটা হলেও ভোট যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে লম্বা সময় হাতে পাবেন ভাঙড় তৃণমূল কংগ্রেস। তবুও আরাবুল ইসলাম বলে কথা, যিনি কথায় নয়, কাজে পরিণত করতেই বেশি অভ্যস্ত। তাই লম্বা সময় হাতে থাকলেও বিশ্রাম না নিয়ে নেমে পড়লেন নির্বাচনের মহাযুদ্ধে।
যেকোনো নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া মানেই আরাবুল ইসলামের কলা-কৌশল। অতি সাম্প্রতিককালে ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলে থেকেও জয়লাভ করেছিলেন আরাবুল ইসলাম। রাজ্যবাসীর কাছে একটা বার্তা দিয়েছিলেন তিনি, যে, আরাবুল ইসলাম যেখানেই থাকুক না কেন? সেখান থেকেই তিনি নির্বাচন পরিচালনা করতে পারেন এবং জিততে পারেন। অথবা দলের কোন প্রার্থীকে জেতাতে পারেন।২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে আরাবুল ইসলামকে প্রার্থী করেনি তৃণমূল। তবে প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান করে দল আরাবুল ইসলামের ঘাড়ে গুরু দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন। কারণ দল জানে নির্বাচন বৈতরণী সহজে পার করতে হলে আরাবুলকেই দরকার। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে আরাবুল ইসলাম এবং কাইজার,নান্নু,ওহিদুলসহ অন্যান্য তৃণমূল নেতাদের প্রচেষ্টায় ৬৪ হাজারেরও বেশি ভোটে ভাঙড় থেকে লিড পেয়েছিলেন সুগত বসু।
এদিন আরাবুল ইসলাম বলেন,দিদির উন্নয়ন দেখে মানুষ তৃণমূলকেই ভোট দেবে।গত লোকসভায় ভাঙড় থেকে ৬৪ হাজার লিড পেয়েছিল তৃণমূল।এবার তা ছাড়িয়ে একলক্ষে দাড়াবে।ভাঙড়ের গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আরাবুল বলেন,আমাদের মধ্যে যাই থাক নির্বাচনের সময় আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করব।বিগত নির্বাচন গুলিতে বিরাট ব্যাবধানে তৃণমূলের জয় তারই প্রমাণ।