হাওড়া: হাওড়া জেলার আমতা খোশালপুর অঞ্চলের কাষ্টসাংড়া গ্রামের বাসিন্দা সইফা খাতুন বয়স মাত্র ১২ বছর কোনও স্কুলের নিয়মিত ছাত্রীও নয় তা সত্বেও মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে সকলকে অবাক করেদিল। এবারে মাধ্যমিকে বসেছে বিস্ময় বালিকা সইফা খাতুন। পরীক্ষায় বসার অনুমতি চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সইফার বাবা সেখ আইনুল। সইফার বাবা একজন গ্রামীন চিকিৎসক। মা সাহানারা বেগম গৃহবধূ।
সইফার ছোট দুই ভাইয়ের একজন প্রথম শ্রেণীতে পড়ে,অন্যজন, এখনো স্কুলে যাওয়া শুরু করে নি। ছোটবেলা থেকেই মেয়ের প্রতিভা নজরে এসেছিল আইনুল সাহেবের। বয়স যখন ৬ বছর তখন প্রাথমিক স্তরের পাঠ শেষ করে ফেলে সইফা। ওই বয়সে সইফাকে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি করাতে গেলে ভর্তি নেন নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।কারন নিয়মানুসারে বয়স হয়নি এবং প্রাথমিক স্তরের কোনো সার্টিফিকেট নেই তার।
এই অবস্থায় মেয়েকে পেছন দিকে তাকাতে দেননি সইফার বাবা। স্কুল পর্ষদের সিলেবাস অনুযায়ী বই বাজার থেকে কিনে মেয়েকে নিজেই পড়াতেন। বাবা ও মায়ের কাছে পড়াশোনা করতেন ছোট্ট সইফা। মাত্র ১২ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে সইফা। মেয়েকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার অনুমতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজ্যপাল শিক্ষামন্ত্রী থেকে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন সইফার বাবা আইনুল সাহেব। মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রহে সইফাকে এবার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
সেইমতো স্পেশাল অনুমতির ভিত্তিতে হাওড়ার এ এস হাইস্কুলে মাধ্যমিকের পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে হাওড়ার যোগেশচন্দ্র গার্লস হাই স্কুল থেকে স্টেট পরীক্ষা দেয় সইফা। মাধ্যমিক টেস্টে ষাট শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চমক দেয় সাইফা।ভাবা যায় । যে মেয়েটি স্কুলের ছায়া মাড়ায়নি হঠাৎ করে এবারে মাধ্যমিকে টেস্টে বসে ৬০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে গেল।
২০১৯ সালে বিস্ময় প্রতিভা সহিফা মাধ্যমিকে বসেছে।১২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে।তার মাধ্যমিকে সিট পড়েছে হাওড়া শহরে পদ্মপুকুর রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দির স্কুলে। আইনুল সাহেবের বিশ্বাস মেয়ে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে। অভাবের সংসারে মেয়ের জন্য কোন গৃহশিক্ষক রাখা যায়নি। বাঁশ,মাটি, প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা দেওয়াল ও টালির ছাউনির এক চিলটের ঘরে লালিত হচ্ছে ১২ বছরের সইফার স্বপ্ন।