যে সমস্ত সাংবাদিকরা এতদিন বিভিন্ন নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনের খবর করার পর নির্বাচনের গণনার খবরে ব্যস্ত থাকতেন আজ সেই সব সাংবাদিকরা নিজেদের সংগঠনের উন্নয়নের স্বার্থে সংগঠনের নেতা বাঁচতে ভোট দেওয়া থেকে ভোট গণনার সময় চরম উৎকণ্ঠায় প্রায় দেড় ঘন্টা সময় কাটালেন। কি হবে ফলাফল। গণনার সময় দেখা যায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তবে এই লড়াই ছিল একদমই চার দেয়ালের মাঝেই। তবে শেষ পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করার পর ৩৮ -৪৪ ভোটে জয়ী হলেন বিদায়ী উত্তর দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অলিপ মিত্র।
জয়ী হওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান উত্তর দিনাজপুর প্রেসক্লাব যেভাবে কাজ করে চলছে তা রাজ্যের মধ্যে এক নজির । এদিন তাকে যেভাবে প্রেস ক্লাবের সদস্যরা পুনরায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত করলেন তার জন্য প্রেস ক্লাবের সকল সদস্যদের তিনি ধন্যবাদ জানান।
এদিকে গতকাল এই সম্মেলনের উদ্বোধন করে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সরকারি মেন্টর অসীম ঘোষ জানান সমাজ গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য, একদিকে যেমন সাংবাদিকরা সরকারপক্ষের বিভিন্ন ভুল দিকগুলো সমালোচনার মাধ্যমে সরকারের ভুল গুলি ধরিয়ে দেয়, অপরদিকে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ গুলি ও তারা তুলে ধরে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে সরকারের সাফল্যের বার্তা পৌঁছে দেয় নিষ্ঠা ও নিরপেক্ষভাবে।
অপরদিকে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌরপতি কাত্তিক চন্দ্র পাল বলেন আজকের দিনে সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন সাংবাদিকদের গঠনমূলক লেখনীর মাধ্যমে আজকে শহরের উন্নয়নে অনেক পরিকল্পনা নিয়ে তাকে কাজ করতে অনেকটাই সাহায্য করছে। শুধু তাই নয় সাংবাদিকদের গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে কাজ করতে গিয়ে যে সমস্ত ভুল ত্রুটি গুলি হচ্ছে তার সেগুলো সাংবাদিকরা যেভাবে তুলে ধরছে তাতে তিনি অনেকটাই সজাগ হচ্ছেন তার ভুল ত্রুটি গুলি শুধরে নিতে। তিনি প্রেস ক্লাবের সদস্যদের তাই ধন্যবাদ জানিয়ে সম্মেলনের সাফল্য কামনা করেন।
এদিন টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় উত্তর দিনাজপুর প্রেসক্লাবের দশম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন সম্মেলন। কালিয়াগঞ্জ শহরের প্রতিক্ষা লজে সকাল ১১ টার সময় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপস্থিত হন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরা। জেলার মোট ১০৬ জন সাংবাদিকদের মধ্যে ৯১ জন সাংবাদিক উপস্থিত হন এই সম্মেলনে । সর্বপ্রথম সভাপতিমণ্ডলীর গঠন করা হয় সাংবাদিক কৌশিক সেন, প্রসেনজিৎ চৌধুর স্বপন মজুমদার, তপন চক্রবর্তী্অলিপ মিত্র দের নিয়ে। সভার শুরুতে সংগঠনে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক অলিপ মিত্র সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পাঠ করেন ।আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন বিক্রমাদিত্য বিশ্বাস।
তারপর শুরু হয় সম্পাদকীয় প্রতিবেদন এর উপর সাংবাদিকদের পর্যালোচনা । সম্পাদক এর জবাব ভাষণ এর পর মধ্যাহ্ন ভোজন হয়। দ্বিতীয় পর্বে প্যানেল জমা দেওয়ার কাজ শুরু হলে প্রথমে তিনটি প্যানেল জমা পড়ে । কিন্তু পরবর্তীতে একটি প্যানেল প্রত্যাহার করে নিলে দুটি প্যানেলের মধ্যে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাভুটি হয়। ৯১ জন ভোটারের মধ্যে ২ জন ভোটদানে অনুপস্থিত থাকায় ৮৯ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করে।
এরপর চলে টানটান উত্তেজনা। কি হবে ? কি হবে ? সাংবাদিকদের মধ্যেই চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে প্রত্যেকের মধ্যে একটাই প্রশ্ন কে জিতবে কে হারবে ? অবশেষে এ প্যানেল ভোট পায় ৪৪ টি এবং বি প্যানেল ভোট পায় ৩৮ টি ৭ টি ভোট বাতিল হওয়ায় সভাপতিমণ্ডলী এ প্যানেল কে জয়ী বলে ঘোষণা করেন। এদিন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি ২৮ জনের একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়।
সেখানে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অলিপ মিত্র, সভাপতি অমিত সরকার। সহ সভাপতি বিনোদ রুনণ্টা, সুশান্ত নন্দী , স্বরূপ দত্ত ও কৌশিক সেন। কার্যকারী সভাপতি শংকর কুমার রায়। সহ সম্পাদক ভবানন্দ সিংহ, মেহেদী হেদায়েতুল্লা, তন্ময় চক্রবর্তী ও গৌড় আচার্য । কোষাধক্ষ্য বিক্রমাদিত্য বিশ্বাস । হিসাব পরীক্ষক নন্দ দুলাল সরকার । উপদেষ্টামন্ডলী তরুণ দেবনাথ, হিমাংশু দাস , সুবল গোপ, অপূর্ব বিশ্বাস। এছাড়া কার্যকরী কমিটির সদস্য অনুপ জয়সোয়াল , প্রদীপ সিনহা , শীষ মুহূর্তাজ, রঞ্জিত যাদব, রাজ ঠাকুর ,রণবীর দেব অধিকারী , বিপুল শংকর বসু , অপরাজিতা জোয়ারদার ,সন্দীপ রায় , শান্তনু মন্ডল , ও আনারুল হক ।