পশ্চিম মেদিনীপুর: বছরভর হাতির হানায় সন্ত্রস্ত থাকেন জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। বিঘের পর বিঘে খেতের ফসল হাতি নষ্ট করে দেওয়ায় হাহাকার ওঠে ঘরে ঘরে। হাতির হানায় ভাঙে ঘর। হতাহত হওয়ায় ঘটনাও ঘটে আকছার। হাতিকে কেন্দ্র করে বন দফতরের সঙ্গে স্থানীয় মানুষজনের কাজিয়াও নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু একেবারে নতুন, সেই হাতির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে শ্রাদ্ধ শান্তির আয়োজন। এমন ঘটনায় অবাক বন দফতরও।
বেশ কিছুদিন ধরে হাতির তাণ্ডবে জেরবার হচ্ছিলেন গুরগুরিপালের মানুষজন। ২০- ২৫ টি হাতির একটি দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল গোটা এলাকায়। গত ১২ জানুয়ারি নেপুরার কাছে মৃত্যু হয় দুটি হাতির। মাঠের মধ্যে ঝুলে থাকা হাইভোল্টেজ ইলেকট্রিক তারের থেকে স্পর্শেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছিল বন দফতর।
নেপুরা গ্রামের যেখানে হাতি দুটির মৃত্যু হয়েছিল সেখানে আজ সকালে দুটি হাতির মূর্তি বসিয়ে শুরু হয় পুজোপাঠ। রীতিমতো আচার মেনে। সঙ্গে প্রায় তিন হাজার লোকের পাত পেরে খাওয়ার ব্যবস্থা। গ্রামের একদল মানুষ যখন ব্যস্ত পুজোপাঠে, তখন আরেকদল ব্যস্ত খিচুরি রান্নার তদারকিকে।
গ্রামের মানুষজনই দিয়েছেন চাল, আলু, টাকা, যে যেমন পেরেছেন। তাই দিয়েই রান্নার আয়োজন। মৃত হাতির স্মৃতি তর্পণ হলেও একে আবার শ্রাদ্ধ বলতে নারাজ গ্রামের মানুষজন। গ্রামেরই এক বাসিন্দা বিধুভূষণ ঘোষ বলেন, “হাতিকে তো আমরা দেবতা হিসেবে পুজো করি। তাই শ্রাদ্ধ করছি, বলতে পারি না। তবে মৃত হাতিদের স্মৃতিতর্পণ বলা যায়। আবার হাতি দেবতাকে তুষ্ট রাখার জন্যও এই পুজো, এমনটাও বলতে পারেন।”