রাজনীতি হল মানবিক সেবার একটি বৃহত্তম প্লাটফর্ম।কিন্তু আজ সেটা হয়ে উঠেছে অবৈধ আয়ের ও সুবিধা ভোগের মাধ্যম।স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে রাজনীতি বারবার হয়েছে কলুষিত।বাস্তবতার নিরিক্ষা করে অনেকের ইচ্ছা থাকলেও রাজনীতিতে নামতে দুবার ভাবেন অনেকে।সমাজ রাজনীতি নামক বীষয়বস্তুকে দেখে ঘৃণার নজরে।সমাজের জন্য,দেশের জন্য,মানুষের জন্য কিছু করার অভিপ্রায়ে কেউ রাজনীতিতে নামতে চাইলেও আসে পারিবারিক বাধা।আসাটাও স্বাভাবিক কারণ পরিবার বিলক্ষণ প্রত্যক্ষ করছে রাজনীতির নানামুখি কুফল।
রাজনীতির মাধ্যমে আজ আর সমাজসেবা করতে দেখা যায়না।ব্যক্তিগত সেবা ও স্বজনসেবা অবশ্য চলছে।বর্তমানে বিশেষকরে তৃণমূলের প্রধান,উপ-প্রধান এমনকি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদেরকেও দেখা যায় স্করপিও-বোলেরো গাড়িতে চেপে বেড়াতে।শুধু গাড়ী নয় বাড়ীও রাজকিয় ঢঙে।দুতলা কিংম্বা তিনতলা কার ও আবার কেনা আছে বহুতল আবাসনের ফ্লাট।জীবন ধারন,চাল চলন ও অন্যরকমের।
ব্যতিক্রম কিন্তু ভাঙড়ের খয়েরপুর গ্রামের জব্বার মালি।দীর্ঘ ২৫ বছর পোলেরহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য।তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে এবার ও জয়ী হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।সর্বসম্মতিক্রমে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন উপ-প্রধান পদে।উল্লেখ প্রধান পদটি মহিলা সংরক্ষিত।জব্বার মালির জীবীকা বলতে চাষাবাদ আর পোলেরহাট সবজি বাজারে একটি ছোট্ট দোকান।ছোট্ট দোকানটির সামনে ফুটপাথেই বসে বিক্রি করেন আলু,পেঁয়াজ,আদা।উপ প্রধান হয়েও বদলায়নি পূরানো পেশা।এখন ও আলু পেঁয়াজ বিক্রি করেই নির্বাহ করেন জীবীকা।নিয়মিত মাঠে যান।
হাট মাঠ সবকিছু সামলেও নিয়মিত পঞ্চায়েতে আসেন তিনি।চাইলে ভাঙড়ের আরসব নেতাদের মতো তিনিও বিলাসিতা করতে পারতেন।কিন্তু বিলাসিতা তাকে স্পর্শ প্রর্যন্ত করেনি তাঁকে।ভাঙড়ের তৃণমূল নেতাদের চেনার একটি উপায় বলাযেতে পারে বোলেরো স্করপিও গাড়ী থাকবে সঙ্গে ঝাঁচকচকে বাড়ী।সেখানে তৃণমূলের প্রতিকে জিতে উপ প্রধান হয়েও ভিড়ে যায়নি অন্যনেতাদের স্রোতে।
বাম আমল থেকেই টানা ছবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়লাভ কর আসছেন জব্বার মালি।ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির পোলেরহাট ১ জিপির খয়েরপুর গ্রাম থেকে তিনি ভোটে লড়াই করেন।প্রথমে তিনি ১৯৮৯ সালে কংগ্রেসের হাত চিহ্নে জয়ী হন।দ্বিতীয়বার ও কংগ্রেস থেকেই জয়ী হন।১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি হলে যোগদেন তৃণমূলেই।তৃণমূল থেকেও চারবার নির্বাচিত হন।অপরাজিত সর্বমোট ষষ্ঠবার নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড করেন জব্বার মালি।২০১৮ সালে দল তাঁকে উপ প্রধানের জন্য মনোনীত করে।এর আগেও তিনি একবার উপ প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।তবে সালটা মনে করতে পারজেন না।
ছবারের পঞ্চায়েত সদস্য এবং দুবার উপ প্রধান নির্বাচিত হয়েও আগের মতো ফুটপাথে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি শুধু করেন তাই নয় নিড়েল-কোদাল নিয়ে যান নিয়মিত মাঠে।বিলাশ ব্যাসনে জীবন কাটানোর সুযোগ আসার পর ও সাদামাটা জীবন যাপন সম্পর্কে জব্বার মালিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,আমার মায়ের নির্দেশ রয়েছে যে,অবৈধ ভাবে কোন উপার্জন করবেনা।আমার মায়ের সেই নির্দেশ কে মাথায় রেখে আমি বৈধ উপায়ে আয় করে সংসার চালাই।আর রাজনীতি করা মানুষের জন্য,নিজের জন্য নয়।আর ইসলাম ধর্মে মানব সেবার কথা বলা আছে।