পশ্চিম মেদিনীপুর: ক্ষিরপাই! পশ্চিম মেদিনীপুরের এই জনপদের নামটি শুনলেই মিষ্টি প্রিয় বাঙ্গালীর প্রথমেই মনে পড়ে বাবরশার কথা। কিন্তু অতি জনপ্রিয় এই মিষ্টির এমন অদ্ভুতূড়ে নাম কেন তা নিয়ে প্রচুর লোককথা প্রচলিত আছে। তবে এখনো পর্যন্ত এবিষয়ে প্রামাণ্য তথ্য মেলেনি।
অনেকে বলেন, সম্রাট বাবরকে খাওয়ানোর জন্য এই মিষ্টি তৈরী করেছিলেন তৎকালীন সময়ের মিষ্টি তৈরীর কারীগরেরা। আর সেকারণেই এই মিষ্টির নাম ‘বাবরশা’। আবার অন্য পক্ষের যুক্তি ১৭৪০ থেকে ১৭৫০ খ্রীষ্টাব্দের মাঝামাঝি পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষিরপাই শহর বেশ কয়েকবার বর্গীদের হাতে আক্রান্ত হয়। সেই সময় বর্গীদের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই এই শহর ছাড়তে শুরু করেন।
ঠিক সেই সময় এডওয়ার্ড বাবরশ্ নামে এই ইংরেজ সাহেব বর্গিদের হটিয়ে শহরে শান্তি ফিরিয়ে আনেন। আর এই ঘটনার কৃতজ্ঞতা স্বরুপ স্থানীয় এক মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী বিশেষ এক ধরণের মিষ্টি তৈরী করেন এবং ঐ ইংরেজ সাহেবকে উপহার দেন। একই সঙ্গে তাঁর নামকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে নতুন ঐ মিষ্টির নামকরণ করেন বাবরশা।
নাম করণ আর উৎপত্তি নিয়ে যতোই বিতর্ক থাক বাবরশা আর ক্ষিরপাই পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। যেমন বর্ধমান মানেই সীতাভোগ-মিহিদানা, শক্তিগড় মানেই ল্যাংচা, জনাই মানেই মনোহরা, বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় মানেই মেচা, ছাতনা মানেই প্যাঁড়া। তেমনই পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষিরপাই মানেই যে বাবরশা এক কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। মিষ্টিপ্রিয় বাঙ্গালী বাবরশার টানে খুঁজে খুঁজে ঠিক পৌঁছে যান পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্যতম এই জনপদ ক্ষিরপাইয়ে ।