আধুনিকতার ছোঁয়ায় চাহিদা হারাচ্ছে মৃৎ শিল্পীদের মাটির তৈরী শিল্পপণ্য। একসময় মাটির তৈরী তৈজসপত্রের প্রচুর ব্যবহার ও চাহিদা ছিল। তবে আজ আধুনিকতার ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে চাহিদা হারাচ্ছে মাটির তৈরী শিল্পপণ্য। বাবা ঠাকুর দার আমল থেকেই এই মৃৎ শিল্পীরা ভালবাসা ও মমতা দিয়ে তাদের নিপুণ হাতের কারু কাজের মাধ্যমে মাটি দিয়ে তৈরী করে থাকেন নানা তৈজসপত্র। তাদের জীবন জীবিকার হাতিয়ার হচ্ছে এই মাটি।
কিন্তু কালের বিবর্তনে তাদের ভালবাসার জীবিকা আজ ফিকে হতে চলেছে। দিন যতই যাচ্ছে বাড়ছে আধুনিকতা এই আধুনিকতার ছোঁয়ায় চাহিদা হারাচ্ছে মাটির তৈরী শিল্পএর। মাটির জায়গায় স্থান করে নিয়েছে আলুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈরী পন্য। এসবের দাম বেশি হলে টেকসই হওয়ায় সবাই ঝুকছে সেই দিকে। আর তাই প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে না পেওে অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন এই পেশা। তবে যারা আজ ও এই পেশার সাথ এ যুক্ত তাদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
এক সময় কালিয়াগঞ্জ এর মুস্তাফা নগরে প্রায় শতাধিক কুমোর পরিবার বসবাস করত। কিন্তু এখন হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার ছাড়া কারও দেখা মেলেনা। তাদের মধ্যে একটি হল কয়েকটি পরিবার সরাসরি মৃৎ শিল্পের উপর নির্ভরশীল। দিনরাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে মাটি দিয়ে তৈরী করছে বিভিন্ন মৃৎ পণ্য। পণ্যেও নায্য দাম না পেয়ে এ পেশায় টিকে থাকতে হিমসিম খাচ্ছে কারিগররা। বিলুপ্তপ্রায় এ শিল্পটি অস্তিত্ব সঙ্কটে পরে জীবন জীবিকা চালাতে হিমসিম খাচ্ছে কুমাররা।
মুস্তাফা নগরের পালপাড়া য় খোকন পাল (৩৫) জানান, প্রায় ৫ বছর ধরে এ পেশার সাথে থাকলেও বর্তমানে আর টিকে থাকতে পারছেনা। আনন্দপাল (৫৫)জানান, আজ বহু বছর ধরে সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা তারা পাইনি। তাদের না আছে আবাস যোজনার বাড়ী। না পেয়েছে শিল্পী ভাতা। তাই অভাবে নিজেদের পেশা তে টিকে থাকতে না পেরে অনেকেই আর এ পেশায় আগ্রহী হচ্ছেনা। তবে বাপদাদার পেশা ধরে রাখতে অনেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
হাট-বাজারে বিক্রি করেও যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির এযুগে আর জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছেনা। প্রয়োজনীয় পুঁজিরও অভাব রয়েছে কুমারদের। তাই ছেলেমেয়েদেও লেখাপড়া শিখিয়ে চাকুরী করতে চান। এ পেশায় তাঁদেও সন্তানদের আগ্রহী করছেন না। ফলে অদূরভবিষ্যতে এ পেশা ধরে রাখতে কঠিন হয়ে পড়বে।