উদয়নারায়নপুর বাজারে প্রান হাতে ব্যবসা চলছে দিনের পর দিন

হাওড়া: মাথার উপর ঝোলা বিদ্যুতের তার এই বাজারের চেনা ছবি। অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নেই, নেই ন্যূনতম পরিকাঠামো। পাশের পুকুর বুঝে আসছে আবর্জনায়। আগুন লাগলে খবর দিতে হবে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে উলুবেড়িয়া দমকল কেন্দ্রে। উদয়নারায়নপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা তেমন আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি আসতে আসতেই সব পুড়ে খাক হয়ে যাবে গোটা বাজার। প্রায় একশো বছর আগে বসতো মাছের বাজার। সঙ্গে কিছু আনাজ। এখন সেই মাছ আনাজের বাজার গড়ে উঠেছে একের পর এক পাকা দোকান।

দশকর্মা থেকে শুরু করে মুদিখানা এমনকি জামা কাপড়ের দোকানও রয়েছে সেখানে। ছোট এলাকায় গড়ে ওঠা বাজারে গ্যাস জালিয়ে ঘুগনি,আলুর দম,চা তৈরিও হয় প্রতিদিন। উদয়নারায়ণপুরের এই অন্যতম বাজারে তিনটি বিশাল কারোগেটের টিনের ছাউনি নীচে বসছে মাছ ও আনাজের বাজার। আর টিনের ছাউনির বাইরের অংশে গড়ে উঠেছে অত্যন্ত কয়েকশো পাকা দোকান। ফলে সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে পরিসর। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চারপাশে অবিন্যস্ত দোকান তৈরি হওয়ায় আনাজ বাজারে দিনের বেলায়ও অন্ধকার। সারাদিন জ্বালাতে হয় বৈদ্যুতিক আলো। অস্থায়ীভাবে তারের মাথায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বাল্ব। ফলে চতুর্দিকে তারের জাল। অভিযোগ বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা নিয়মিত মিটার পরীক্ষা করে যায় না।

বাজারের ভিতরে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের কোন দেখা মেলে না। এমনকি যেভাবে ব্যবসা চলে তাতে দমকল এসে বিশেষ কিছু উপকার করতে পারবে না বলে মনে করেন এলাকার বাসিন্দারা। ইঞ্জিন এলাকায় ঢুকতেই পারবে না। তারপর বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করতে হবে তাদের, বলছেন ক্রেতারা। লোকনাথ বিশ্বাস নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারের পিছনের সারদা চরন হাই স্কুল সংলগ্ন একটি পুকুর। কিন্তু দিনের পর দিন সেই পুকুরও আর্বজনা ভরে বুজে আসছে।বালতি করে জল আগুন নেভাতে চাইলে জলও মিলবে না।

সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু তাদের কিছু করার নেই বলেও জানান। বাজারটি এখনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। প্রায় একশো বছর আগে তৈরি করেছিলেন স্থানীয় এক জমিদার। দোকান ঘর গুলির মালিক এখনো তাঁরাই।জমিদারের উত্তরসূরিরা কলকাতায় থাকেন। ব্যবসায়ীদের একটা বড় অঙ্কের প্রশ্ন তারা কার কাছে অসুবিধার কথা জানাবেন? ব্যবসায়ীরা সকলেই নিয়মিত ভাড়া দেন। বাজার কর্তৃপক্ষের তরফে বাজার চত্বর নিয়মিত ঝাঁট দেওয়া হয়। কার্তিক রায় নামে এক ব্যবসায়ী জানান, এখানে কোন দিন আগুন লাগার ঘটনা ঘটেনি।

যদি সত্যিই এমন ঘটনা ঘটে আমরা পথে বসবো। আর বাজার চলার সময় ঘটলে পালানোর পথ পাবনা। বহু প্রাণহানি ঘটবে। উদয়নারায়নপুর ব্যবসায়ী সমিতির তরফে তরুণ রক্ষিত বলেন, পুকুরটা সংস্কার হলেও অনেকটা সুরাহা হয়। কিন্তু কে করবে? সূত্রে জানা গিয়েছে ওই পুকুরও স্থানীয় জমিদার পরিবারেরই সম্পত্তি ছিল। তাঁরা দান করে দিয়েছেন সারদাচরণ হাই স্কুলকে। ফলে সংস্কারের কাজ করতে পারে স্কুল কর্তৃপক্ষই। সারাদা চরণ হাই স্কুল এর প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত জানার বলেন পুকুর সংস্কার করার টাকা নেই। প্রশাসন এগিয়ে এলে ভালো হয়।

Susmita Sarkar

Share
Published by
Susmita Sarkar

Recent Posts

ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন দোহাল

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোহাল আজ বেজিংয়ে, ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন।…

4 days ago

ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন

আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন। ৩৯ টি দেশের…

4 days ago

তারা আর কোনো চাকরির পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী’- NTA, আগামী বছর থেকে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা…

4 days ago

গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এবারের গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।…

4 days ago

‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি :সুকান্ত

রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে ন্যাশনাল ‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা…

4 days ago

বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে নিবন্ধিকৃত হতে হবে

সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া SEBI জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে…

4 days ago