পশ্চিম মেদিনীপুর: কোলদের এর ভাষা হো কে ভারতীয় সংবিধান অষ্টম তফসিলি ভুক্ত করণ ও পশ্চিমবাংলায় স্বীকৃতি প্রদান করতেই হবে এই দাবিতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ধরনায় বসলো অখিল ভারতীয় আদিবাসী সমাজ। এই দিন তারা মেদিনীপুর জেলায় এক বিরাট মিছিল এর মাধ্যমে জেলাশাসককে ডেপুটেশন দেয়। মূলত 13 দফা দাবি ছিল তাদের স্মারকলিপিতে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আদিবাসীদের পিছিয়ে পড়া সমাজ কোল সমাজ তাদের ভাষা হো কে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে , পিছিয়ে পড়া আদিবাসী মহিলা সমাজের বিশেষ করে মুন্ডা মহিলা সমাজের উন্নতি সাধন করা।
আদিবাসী মৎস্যজীবীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা কারণ মেদিনীপুর শহরের উপকেন্দ্র রাজা বাজার , মিয়া বাজারে যেভাবে মৎস্যজীবীরা ব্যবসা করেন তাতে তাদের জীবন দুর্বিষহ উঠেছে ,না আছে শৌচাগার না আছে পানীয় জলের ব্যবস্থা। এছাড়াও মিয়া বাজারের মাছ বাজারের অবস্থা আরো শোচনীয় না হয় পরিষ্কার না হয় আবর্জনামুক্ত ফলে এক দুর্গন্ধ এলাকায় বসবাস করেন এলাকার মানুষ সঙ্গে মৎস্যজীবীরা। তাই অবিলম্বে সেই সব জায়গার মৎস্যজীবীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে এরকমই মোট 13 দফা দাবির ভিত্তিতে এদিন জেলা শাসক গেটে অবস্থান বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি তুলে দিল আদিবাসী সমাজের মানুষজন।
এই আদিবাসী সমাজের অভিযোগ বিগত সরকারের ন্যায় বর্তমান সরকারও তাদের দাবি দাওয়া গুলি পূরণ করছে না। তাই দীর্ঘ 96 সাল থেকে তাদের অসন্তোষ পুঞ্জীভূত হয়ে রয়েছে , অভিযোগ উঠেছে আদিবাসীদের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান ও শ্মশানে দখল করে নেওয়ার ,সেই সব অভিযোগ ও এদিন স্মারকলিপিতে। নেতৃত্বে ছিলেন ঝরনা আচার্য ,তারক বাগ ,কার্তিক হেমব্রম সহ বিশিষ্ট আদিবাসী নেতৃত্ব। এদিন তারা তাদের ধামসা মাদল ও তীর-ধনুক নিয়ে হাজির হন জেলা কালেক্টরেট গেটে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন , আদিবাসী মেয়েরা নৃত্যের মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
মূলত আদিবাসীরা ভারতের অধিবাসী হিসেবে চিহ্নিত ,ইতিহাস থেকে জানা যায় আদিবাসী আমরা তাদেরকে বলি যারা ভারতের মূল অধিবাসী কিন্তু বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন সময়ে তাদের প্রতিশ্রুতি দেয় উন্নয়নের কিন্তু তা প্রতিশ্রুতি কেবলমাত্র প্রতিশ্রুতি রয়ে যায় উন্নতিসাধন আর করা হয়ে ওঠে না এরকমই অভিযোগ রয়েছে আদিবাসী সমাজের। দীর্ঘ বামফ্রন্ট সরকার যেমন উন্নতি করেনি করেনি বর্তমান সরকার ও তাই তাদের বিক্ষোভ জারি থাকবে।
এদিন দাবি গুলি তুলে ধরেন বিভিন্ন নেতৃত্ব, দাবি গুলির মধ্যে অন্যতম ছিল আদিবাসী SHG গ্রুপগুলোর সরকারি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অনুদানের ব্যবস্থা করা ,আদিবাসী শিক্ষক নিয়োগ ও পঠন পাঠন চালু করা তার সাথে তাদের দাবি ছিল আদিবাসী হোস্টেল গুলিতে ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া। এছাড়াও বৈগা সম্প্রদায়ের শংসাপত্র চালু করা , খড়গপুর এর বিভিন্ন এলাকায় সরকারি ভাবে আদিবাসীদের দখল হওয়া ধর্মীয় স্থান গুলো কে অবিলম্বে আদিবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া। এই সকল দাবি দাওয়া এদিন অবস্থান-বিক্ষোভ বক্তব্য রাখেন আদিবাসী নেতৃবর্গ। এদিন তারা দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভে অনড় থাকেন এবং জেলাশাসকের গেটে তারা দীর্ঘক্ষণ ধরনায় বসে থাকেন।