কোলকাতা:বড়দিন ও নববর্ষের আগে শহরবাসীকে হিডকোর উপহার আইফেল টাওয়ার।প্যারিসের স্বাদ এখন থেকে কলকাতাতে বসেই আস্বাদন করার সুযোগ করে দিল হিডকো কর্তৃপক্ষ।নিউটাউনের ইকো টুরিজম পার্কে সোমবার এক অনুষ্ঠানে উদ্ভোধনের পর হিডকো চেয়ারম্যান দেবাশীষ সেন ও অন্য আধিকিরিকরা টাওয়ারটির চারপাশ ঘুরে দেখেন।সঙ্গে ছিলেন পুলিশের আধিকিরিকরাও।
ভ্রমণ কার না ভালো লাগে।সে পাহাড়,জঙ্গল ,সৈকত কিংম্বা স্থাপত্য যেখানেই হোক না কেন।ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির শীত মানেই যেন বেড়ানোর মরশুম।শীত আসলেই বন্ধু বান্ধব অথবা সপরিবারে তল্পিতল্পা নিয়ে বেড়িয়ে পড়া।ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্সের রাজধানী শহর প্যারিসে অবস্থিত আইফেল টাওয়ার পৃথিবীর সাতটি স্থাপত্যের একটি।ইউনেস্কোর ঘোষিত সপ্তমাচর্যের তালিকায় প্রথম সারিতে এটি।আইফেল টাওয়ার চাক্ষুষ করার সবার কাছে স্বপ্নের মতো।কথায় বলে সাধ থালেও সাধ্য নেই।বিরাট অঙ্কের টাকা ও সময় খরচ করে সম্ভব হয়না প্যারিসে গিয়ে আইফেল টাওয়ার দেখার।স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়
এবার স্বপ্ন পূরণের স্বাদ নিতে চলে আসতেই পারেন ইকো টুরিজম পার্কে।দুধের স্বাদ অন্তত ঘোলে মেটানোর সুযোগ এখন তিলোত্তমা কোলকাতার নিউটাউনেই।এখানে ঝাঁচকচকে আলো ঝলমলে বিশাল টাওয়ার আকাশে উঁকি দিচ্ছে।আর আপনিও উঁকি দিতে পারেন টাওয়ারের উপর থেকে শহরের অলিগলিতে।উপভোগ করতে পারবেন তিলোত্তমার অবরুপ সৌন্দর্য।
হিডকো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,টাওয়ার নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে।প্যারিসের আইফেল টাওয়ার উচ্চতায় ৩২৪ মিটার দীর্ঘ হলেও মহানগরের আইফেল টাওয়ারের উচ্চতা উচ্চতায় মাত্র ৫৫ মিটার।কাছাকাছি কোলকাতা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের অবস্থানের জন্য ছাড়পত্র না মেলার কারণে উচ্চতা বাড়ানো সম্ভব হয়নি।নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে দর্শনার্থীরা অবশ্য ২০ মিটার অবধি উঠতে পারবে।এক সঙ্গে ২৫ জনের বেশি উঠতে পারবেন না।টাওয়ারে ওঠার জন্য রয়েছে লিফ্টের ব্যবস্থা।
পৃথিবীর সপ্তমাচর্যের একটি হল আগ্রার তাজমহল।এটাই একমাত্র আমাদের দেশে অবস্থিত।কিছুটা হলেও মেরেকেটে দিল্লি অবধি পৌঁছে তাজমহল দেখার সুযোগটাই মিলতে পারে।সপ্তমাচর্যের বাকি ৬ টা স্থাপত্যই বিদেশের মাটিতে।সাধারণ ভ্রমণ পিপাসু বাঙালিদের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপারেরণায় হিডকোর পরিকল্পণা সপ্তমাচার্য নির্মাণের।আইফেল টাওয়ার ছাড়াও নিউটাউনের ইকো টুরিজম পার্কে নির্মীত হয়েছে তাজমহল,চিনের প্রাচীর ও মিশরের পিরামিড।
বড়দিন ও নববর্ষের প্রাক্কালে এমনিতেই ভিড় বাড়ে ইকো টুরিজম পার্কে।তাজমহল,চীনের প্রাচীর,মিশরের পিরামিড,নৌকা বিহার,টয়ট্রেন প্রভৃতির আকর্ষণে আট থেকে আশি সবাই চলে আসেন এখানে।এই সময় ভিড় সামলাতে হিমশিম ক্ষেতে হয় পুলিশ ও পার্কের নিরাপত্তা রক্ষীদের।এবছর আইফেল টাওয়ার আগামী কাল ২৪ ডিসেম্বর থেকে খুলে যাচ্ছে দর্শকদের জন্য।স্বাভাবিক কারণে তাই ভিড় আরও বাড়ার সম্ভাবনা।ফলে হিমশিম খেতে হবে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের।ভিড় সামলাতে অবশ্য পুলিশ ও পার্ক কর্তৃপক্ষ বিশেষ পরিকল্পনা করছে। বলে জানা গেছে।
পার্ক থেকে বেড়িয়ে দর্শনার্থীদের গাড়ী ধরার জন্য রাস্তায় কিংম্বা যাত্রী পতিক্ষালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।১ এবং ২ নং গেট থেকেই বাসে উঠতে পারবে তারা।৪ নং গেটে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী বাসস্টান্ড।২ নং গেট থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বেশির ভাগ টিকিট কাউন্টার।অতিরিক্ত ১৭ টি টিকিট কাউন্টার খোলা হচ্ছে।নিয়োগ করা হচ্ছে অতিরিক্র নিরাপত্তা কর্মী।গড়ে তোলা হচ্ছে অস্থায়ী শৌচালয়।রাজ্য পরিবহণ অতিরিক্ত ৭০ টি বাস চালাবে এই কদিন।
সোমবার উদ্ভোধন হলেও আজ থেকে দর্শকদের জন্য খুলে যাচ্ছে আইফেল টাওয়ার।এবিষয়ে হিডকো চেয়ারম্যান বলেন,মুখ্যমন্ত্রী অনুপ্রেরণাতে আমরা এটা তৈরি করেছি।ভ্রমণ পিপাসু মানুষ যাতে বিদেশ ভ্রমণের স্বাদ এখান থেকেই নিতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা।হিডকোর এক আধিকারিকের কথায়,আইফেল টাওয়ার এবছরের বড়দিন ও নববর্ষের উপহার শহরবাসীর জন্য।