হাইকোর্টের নির্দেশে তৃণমূলের অফিস ভাঙল প্রশাসন

পাণ্ডুয়া : গতরাতে পাণ্ডুয়ার তেলিপাড়া মোড়ে তৃণমূলের অফিসটি ভাঙা হয়। GT রোডের পাশে ওই জায়গাটি মইনুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর ভাইদের। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সঞ্জয় ঘোষ জোর করে সেখানে তৃণমূলের জয় হিন্দ বাহিনীর অফিস তৈরি করেন বলে অভিযোগ। জমি ফেরাতে একাধিক জায়গায় আবেদন করে কোনও লাভ হয়নি। ফলে হাইকোর্টে যান মইনুর ও তাঁর পরিবার। সেই মামলার রায়েই গতকাল তাঁদের জমি ফিরে পান তাঁরা। সেই নির্দেশমতো হুগলির মহকুমাশাসক অরিন্দম বিশ্বাসের উপস্থিতিতে একতলা নীল-সাদা অফিসটি ভেঙে ফেলা হয়।

তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ জানান, হাইকোর্টের নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে প্রশাসন এই অফিসটি ভেঙে ফেলেছে। পাণ্ডুয়ার GT রোডে দু’টি দাগের উপর ৪০ শতক জায়াগা আছে মইনুর, আনিসুর ও তাঁদের ভাইদের নামে। গত বছরের মে মাসের শেষের দিকে সঞ্জয় ঘোষের বিরুদ্ধে এই জায়গা দখলের অভিযোগ আনা হয়। পাণ্ডুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই সঙ্গে শাসকদলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীদের কাছে আবেদন জানান তাঁরা। কোনও সমাধান বের না হওয়ায় গত বছরের জুনে হাইকোর্টে যান। দীর্ঘ একবছর মামলা চলার পর ২২ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এই বিল্ডিংটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

সেইমতো গতকাল সন্ধে ৭টার পর ১৪৪ ধারা জারি করে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সঞ্জয় ঘোষ ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সামনেই অফিসটি ভাঙা হয়।মইনুর রহমানের ভাই আনিসুর রহমান বলেন, “ওই জায়গার ৭০ থেকে ৮০ বছরের রেকর্ডের কাগজ আমাদের কাছে আছে। আমি হাইকোর্টের রায়ে খুশি। আমরা এই সম্পত্তি ফিরে পেয়েছি। প্রশাসন আমাদের জায়গা ফিরিয়ে দিলেই সম্পত্তি আমরা দখল করব।” পরিবারের আর এক সদস্য শেখ নইম বলেন, “এই জায়গায় আমাদের বাবা-কাকারা ব্যবসা করতেন। এখানে জোর করে পার্টি অফিস তৈরি করা হয়েছিল। আমরা মীমাংসা চেয়েছিলাম। কিন্তু, তা না হওয়ায় হাইকোর্টে বিচারের জন্য যাই। এই রায়ে আমরা যথেষ্ট খুশি।”

এদিকে সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “সরকারি খাস জায়গায় আমি অফিস করেছিলাম। অনেকে আমাকে সমর্থনও করেছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে পার্টি অফিস ভাঙা হচ্ছে। বর্তমানে আমরা সরকারে আছি তাই হাইকোর্টের অবমাননা করব না। হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে দাঁড়িয়ে থেকে আমি ভাঙার কাজে সাহায্য করছি। এই জায়গা, সরকারি জায়গা নিয়ে আমরা কোর্টে আবারও আপিল করেছি। আমি তৃণমূলের হয়ে কাজ করি। এবারও পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমিতি ও জেলা পরিষদে জয়লাভ করেছি। আমরা মমতাদির সঙ্গে থেকে কাজ করতে চাই। অফিসের জন্য কোনও সমস্যা হবে না।”

Susmita Sarkar

Share
Published by
Susmita Sarkar

Recent Posts

মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের কড়া নজর: পর্যালোচনা বৈঠকে অমিত শাহ

মণিপুরের ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে ওঠা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল নতুন দিল্লিতে…

1 day ago

আদিবাসী সমাজের উন্নয়ন: প্রকল্প পর্যালোচনায় মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশেষ বৈঠক

আদিবাসী সমাজের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা…

1 day ago

হাওড়া-ধর্মতলা মেট্রোতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ছে, কমছে অপেক্ষার সময়

যাত্রীদের সুবিধার্থে এবং সকাল ও সন্ধ্যার অফিসের ব্যস্ত সময়ে যাত্রী ভিড় সামাল দিতে মেট্রো রেল…

1 day ago

রবীন্দ্র সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা: শনিবার রাতে যান চলাচল বন্ধ থাকবে

কলকাতা, ১৬ নভেম্বর ২০২৪:শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি পোর্ট ট্রাস্টের উদ্যোগে আগামী শনিবার রাত থেকে রবীন্দ্র সেতু…

4 days ago

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব বিতরণের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে, তদন্তে সিট গঠন করল কলকাতা পুলিশ

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের ট্যাব বিতরণের টাকা দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। বহু ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা…

5 days ago

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল, বিজেপির বিক্ষোভে ধস্তাধস্তি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লক আজ উত্তাল আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে। বিজেপির ডাকে…

5 days ago