উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ তাপস পাল সম্প্রতি স্থিতিশীল সবুজায়ন শহরের প্রশিক্ষণ নিয়ে এলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার সুরাভায়া শহর থেকে। স্থিতিশীল উন্নয়নের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জ ২০৩০ এর মধ্যে দুই লক্ষ এগারো হাজার স্থিতিশীল শহর গরবার উদ্দেশ্যে নিয়ে একটি লক্ষমাত্রা ধার্য করেছে বলে জানা যায়। রাষ্ট্রপুঞ্জ এই উদ্দেশ্য নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাভা সরকারের আর্থিক অনুদানে এই লক্ষ মাত্রাকে সফল করতে ইন্দোনেশিয়ার সুরাভায়াতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ১২টি দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব,বিভিন্ন দেশের আধিকারিক,বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একটি কর্মশালায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। যেখানে কর্মশালার মূল বিষয়বস্তু ছিল সাস্টেনেবল সিটি,কালচারাল ট্যুরিজম ও সবুজায়ন শহর।
লাওস,পূর্বতিমির,বাংলাদেশ,পাকিস্তান,নেপাল, ভুটান, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড,মালোএসিযা ও দক্ষিণ কোরিয়ার মোট ৩০জন প্রতিনিধি এই আন্তর্জাতিক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ তাপস পাল মোট ৬ দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাই নয়, তিনি মাস্টার ডিগ্রি লেবেলের ছাত্রদের আন্তর্জাতিক ট্যুরিজমের উপর ক্লাস নিয়ে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম আন্তর্জাতিক মানচিত্রে তুলে ধরেছেন। ডঃ তাপস পাল বলেন তিনি ভূগোল বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের তার বিদেশ থেকে লব্ধ অভিজ্ঞতা তিনি তাদের দিতে চান।
তিনি বলেন, যে সমস্ত বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনা হয়েছে যার মধ্যে আইস ব্রেকিং,চ্যালেঞ্জ রিলেটিভিটি,চ্যালেঞ্জ ওভার কাম ও নলেজ ফেয়ার এই বিষয়গুলো রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের ছাত্র ছাত্রীদের পঠনপাঠন দিয়ে তিনি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের মান আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাবার ইচ্ছা পোষণ করেন। অধ্যাপক তাপস বাবু বলেন সুরাভায়াতে থাকা কালীন সেখানকার মেয়র তাদেরকে মারগো রিজ চাওয়া নামক জায়গার রিসাইক্লিং ভিলেজে নিয়ে গিয়ে দেখান কি ভাবে রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল, ওয়াস্ট মেটেরিয়াল কাজে লাগিয়ে পরিবেশকে সংরক্ষণ করা যেতে পারে, কি করে একটি শহরকে সবুজায়ন করা যায় তার অভুতূর্ব কর্মকান্ড। কিভাবে বায়ো মানিওর ব্যবহার করে সবুজ গ্রাম তৈরী করা যায় দেখিয়েছেন এবং হাতে কলমে তা শিখিয়েছেন।
রাস্তার ফেলে দেওয়া কাগজের টুকরো কে আর্ট এন্ড হ্যান্ডিক্রাফট শিল্পে পরিণত করা যেতে পারে।ফেলে দেওয়া টায়ার দিয়ে কি ভাবে ডাস্টবিন তৈরী করে তাতে গাছের চারা লাগিয়ে গাছের জন্ম দিয়ে রাস্তার দুপাশে গাছ লাগিয়ে শহরকে নান্দনিক করা যায় তা দেখে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় জরা গেছে।কিভাবে বৃক্ষের গায়ে দাবকলমের মাধ্যমে নাম লিখে নান্দনিক পরগাছার মাধ্যমে বিদেশী অতিথিদের সন্মান জানানো যায় নিজেদের সংস্কৃতির মাধ্যমে। এই সব ছোট ছোট কাজের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ইন্দোনেশিয়ার সুরাভায়া শহরটি বিশ্বের দরবারে বিশ্বের স্থিতিশীল শহরের মর্যাদা পেয়েছে তা এক কথায় অভূতপূর্ব সাথে সাথে অবিশ্বাস্য ঘটনা।
এদিকে ডাক্তার তাপস বাবু জানান, তার স্থিতিশীল ও সবুজায়ন শহর গড়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই তিনি কোমর বেধে নেমে পড়েছেন বিভিন্ন জায়গায় জায়গায়। তারি লক্ষ্যে তিনি সম্প্রতি রায়গঞ্জ পৌরসভার পৌর পতির কাছে তার চিন্তাভাবনা একটি প্রতিলিপি তুলে ধরেন। যেখানে তিনি বলেছেন রায়গঞ্জ শহরকে স্থিতিশীল ও সবুজায়ন করার লক্ষ্যে কি করা উচিত। তারই চিন্তাভাবনা আন্তরিকতার সাহায্যে গ্রহণ করেন রায়গঞ্জ পৌরসভার পৌরপতি সন্দীপ বিশ্বাস বলে জানা যায়। এদিকে তার এই চিন্তা ভাবনার ভূয়শী প্রশংসা করেন তারই কলেজের এক অধ্যাপক প্রহললাত মন্ডল।