পশ্চিম মেদিনীপুর: বসয়ের ভার যে তাকে এখনো কাবু করতে পারেনি তা আবার প্রমান করে দিল জঙ্গলমহলের ৫৫ বৎসরের যুবক রণজিৎ মাহাত। মারাঠা জয় করে তিনি সমগ্র মেদিনীপুর জেলার নাম ভারতের বুকে স্বর্ণাক্ষরে লিখে দিলেন। জঙ্গলমহল ভুক্ত শালবনীর পচাকুঁয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক তিনি। মনের জোর আর অদম্যইচ্ছা শক্তির জোরে অখ্যাত এক গ্রাম থেকে ছুটে যান সুদুর মহারাষ্ট্রে। অংশগ্রহণ করেন ২১ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায়। সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বাঘা বাঘা প্রতিযোগিদের পরাজিত করে ২১ কিমি ম্যারাথন প্রতিযোগিতা সম্পুর্ণ করেন মাত্র ১ ঘন্টা ২৬ মিনিটে। এবং প্রতিযোগিতায় ৩ য় স্থান অর্জন করেন।
পেশায় কৃষক রণজিৎ বাবু দুই ছেলে এক মেয়ে আর স্ত্রী কে নিয়ে ছোটো সংসার। মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলের মধ্যে বড়ো ছেলে মঙ্গল সামান্য বেতনে ট্যাঁকশালে কিছুদিন হলো কর্মরত। ছোটো ছেলে অমল কলেজ পড়ুয়া। আর স্ত্রী ভারতী মাহাতো পুরোপুরি গৃহবধু। একাহাতে সংসার সামলেও শরীর চর্চা করতেন প্রতিনিয়ত। একদিকে সংসারের ঝামেলা, অন্যদিকে মনের সুপ্ত বাসনা। সমান্তরাল ভাবে লালন করে চলেছেন দুটিই। আর তার এই স্বপ্ন কে তিনি স্বার্থক করলেন মারাঠা জয়ের মধ্য দিয়ে। তার এই জয়ে খুশী স্ত্রী ছেলে মেয়ে দের পাশাপাশি পুরো জঙ্গল মহল।
স্ত্রী ভারতী দেবী বলেন যে,” সত্যি স্বামীর জন্য আমার গর্ব হচ্ছে। এই বয়সেও যে প্রবল ইচ্ছাশক্তি তার ফল পেয়েছে”। বড়ো ছেলে মঙ্গল মাহাতো বলেন যে, ” আমরা যা করতে পারিনি সেটা বাবা করে দেখিয়েছে। গর্ব তো হবেই”। আর শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও যুব নেতা সন্দীপ সিংহ বলেন, “রণজিৎ মাহাতো আমাদের শালবনীর মুখ উজ্জ্বল করেছে। জঙ্গল মহলের মানুষ যে কোনো অংশে কম নয় তা তিনি মহারাষ্ট্রে গিয়ে প্রমান করে দিয়েছেন। শালবনী ব্লক প্রশাসন তার ও তার পরিবারের পাশে অবশ্যই থাকবে”।