ঝাড়গ্রাম: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাস করেন-রাজ্যের কোনও মানুষ অভুক্ত নেই। সেকথা তিনি আজ ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনীর প্রশাসনিক সভাস্থলে দাঁড়িয়ে অকপটে জানিয়ে দিলেন। অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন- ‘আজ ১০০ ভাগ মানুষ দু’টাকা কিলো চাল পায়। কেউ যদি আমাকে এখনও বলে মানুষ খেতে পায় না আমি বিশ্বাস করি না।’ একই সঙ্গে ঝাড়গ্রামের মানুষকে বলেন-“আপনারা পেট ভরে ভাত খান। মনে রাখবেন, মাথার উপর একটা আশ্রয়, খাদ্য, শিক্ষা, বিনা পয়সায় চিকিৎসা আর কি চাই!”
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খাদ্যের উপর আলোকপাত করেন এই কারণে যে কিছুদিন আগে এই জঙ্গলমহলেই সাত শবরের মৃত্যু হয়েছিল। এক শ্রেণীর সংবাদ মাধ্যম সেটাকে অনহার বলে চালানোর চেষ্টা করে পরে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিল। কারণ, কেউ অনাহারে নয় মদ খেয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পরেন। বলেন-” কেউ যদি আমাকে এখনও বলে মানুষ খেতে পায় না আমি বিশ্বাস করি না। কারণ, আমরা একদিন ছোট ছিলাম। বাবা মারা গিয়েছিল ছোট্ট বয়সে। কারও কাছ থেকে কোনও সাহায্য পাইনি। আজকে আর কিছু করতে পারি না পারি দু’টাকা কিলো চাল করে দিয়েছি।”
এরপর তাঁর আদিবাসীদের কাছে প্রশ্ন- আজকে লালগড় জঙ্গলমহলের আদিবাসীরা কত করে চাল পায়?’ এর জবাব পক্ষনে তিনি দেন। বলেন-“আট কেজি চাল তিন কেজি গম। ১১ কেজি একজন পায় মাসে। তার মানে একটা পরিবারে যদি পাঁচজন আদিবাসী মেম্বার থাকে ৫৫কেজি পায়। এটা মাথায় রাখবেন। তারপরেও যদি কেউ বলে বেচারা ভাত খেতে পায়নি। এটা আমি বিশ্বাস করি না। বরং আমার কাছে উলটো খবর যায়-এত চাল লাগে না। অনেকে নাকি বিক্রি করে দেয়। এটাও আমি শুনেছি। আমি আমাদের অনুরোধ করব-পেট ভরে ভাত খান। মোটা কাপড়-মোটা ভাত। মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নে রে ভাই দীনদুখিনী মা যে মোদের তার বেশি আর সাধ্য নাই। পেট ভরে ভাত খান। মনে রাখবেন মাথার উপর একটা আশ্রয়, খাদ্য, শিক্ষা, বিনা পয়সায় চিকিৎসা আর কি চাই!”
“কেন্দুলি তুলতে যেত-কত পেত? ৩৭টাকা এরকম পেত। আমাদের সরকার ডবলের ডবল করে দিয়েছে। আজ যারা কেন্দু পাতা তুলতে যায় তাদের জন্য স্কিম করা হয়েছে। ৬০ বছর বয়স হলে পেনশন পাবে। টাকা পাবে। আজকে উইডো পেনশন অনেকেই পাচ্ছেন। কিষান পেনশন অনেকেই পাচ্ছেন।” বলেন মমতা।