পশ্চিম মেদিনীপুর:- বিকল্প দেশি প্রজাতির ধান চাষে সাফল্য পেতে চলেছে নারায়ণগড় ব্লক । এবারে ফলনও হয়েছে প্রচুর স্বভাবতই খুশি চাষিরাও।সরকারিভাবে কৃষকদের নানাভাবে কৃষি কাজে ব্যবহার্য যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে দেশী প্রজাতির বিচ ধান প্রদান করা হয়েছে বহুবার ।সেই সঙ্গে কৃষকরা যাতে আরো বেশি করে চাষে উন্নতি করতে পারেন এবং বিকল্প চাষ যাতে গড়ে ওঠে ,সেই ব্যবস্থা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে চাষি ভাইদের উৎসাহিত করে চলেছে কৃষি দপ্তর ।তার ফলস্বরূপ গত কয়েক বছরের ন্যায় এবছরও বিপুল পরিমাণে বিকল্প দেশি প্রজাতির বীজ ধান চাষ করে সাফল্য পেতে চলেছে নারায়ণগড় ব্লক এর কৃষকেরা । আর্থিকভাবে এ বছর আরও বেশি লাভের অংক দেখবেন বলে মনে করছেন তারা ।
কৃষকদের সারা বছর ধরে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণও দেয়া হয় বিকল্প চাষ, দেশী প্রজাতির চাষ, উন্নত প্রজাতির চাষের,যাতে তারা অর্থনৈতিক ভাবে আরো বেশি লাভবান হতে পারেন । সেই আশা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে চলতি শংকর, লাল স্বর্ণ, মুগির পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত উন্নত দেশি এবং অপ্রচলিত গোবিন্দভোগ, বাদসাভোগর চাষ শুরু করেন চাষীরা এতে তারা লাভবান হন ।এবছর তাই গোবিন্দভোগ, বাদশা ভোগ, এর পাশাপাশি একই ভাবে দেশীয় প্রজাতির খাড়া, ব্ল্যাক রাইস, কোমল, জোহা, রাধুনী পাগল, নামক দেশীয় প্রজাতির বিকল্প ধান চাষ করেন ।ফলনও হয়েছে এবছর যথেষ্ট জানিয়েছেন কৃষকেরা ।এ বছরও গত কয়েক বছর গুলির থেকে আরও বেশি লাভের আশা দেখছেন চাষিরা । কারণ এই দেশীয় প্রজাতির বিকল্প ধান চাষের ক্ষেত্রে কোন আধুনিক কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না ।ঘরের জৈব স্যারই যথেষ্ট এই চাষের ক্ষেত্রে ।পরিশ্রম কম ।বাজারে এর চাহিদা ও বেশি । রোগের প্রাদুর্ভাব কম দেখা যায় ।সব থেকে বড় কথা এই চাষ করে তুলনামূলক গতানুগতিক চাষ থেকে আরও বেশি লাভের অংক দেখছেন কৃষকেরা । সব মিলিয়ে এ বছর নারায়ণগড় ব্লক এর চাষীরা দেশীয় প্রজাতির বিকল্প ধান চাষে সাফল্য পেতে চলেছেন ।তেমনি একজন কৃষক নারায়ণগড় এর বাসিন্দা সোমনাথ জানার কথায় -“আমরা এই বছর খাড়া, ব্ল্যাক রাইস, কমল, জোহা, রাধুনী পাগল এর মত দেশীয় প্রজাতির বিকল্প ধান চাষ করে ছিলাম। আগেই আমাদের ব্লক অফিস থেকে এই চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল ।তাই এই বছর চলতি চাষ গুলিকে ছেড়ে একটু নতুনত্ব বিকল্প চাষ করে ছিলাম আগের তুলনায় এ বছর ফলন বেশি দেখছি।এতে পরিশ্রম ও কম এবং কীটনাশকের ব্যবহার করতে হয় না জৈব পদ্ধতিতে চাষ করা যাচ্ছে ফলে আমাদের খরচটা অনেকটাই কমে গেছে ।সেই তুলনায় ফলন অনেক বেশি দেখছি ।
তাই আমরা বিকল্প দেশিও প্রজাতির ধান চাষ করে খুশি”। অপর এক চাষী নারায়ণগড় ব্লক এর নরসিংহপুরের বাসিন্দা গোবিন্দ প্রসাদ মাইতি জানান -“আমরা এ বছর দেশীয় বিকল্প প্রজাতির বীজ ধান চাষ করে অনেক ফলন পেয়েছি ।বাজারের চাহিদাও রয়েছে আমরা এই ধরনের চাষ করতে চাই ।আগে সুযোগ সুবিধা ছিল না এখন সরকারিভাবে এই বীজ ধান ধান পাওয়া যাচ্ছে , সেই সঙ্গে এই চাষের প্রশিক্ষণ পেয়ে আমরা চাষ থেকে অনেক লাভবান হচ্ছি । ব্লক কৃষি টেকনলজি ম্যানেজার বকুল কুমার সাউ জানিয়েছেন-” নারায়ণগড় এর সোমনাথ জানা চাষাবাদ করেছেন দেশীয় বিকল্প ফলনশীল ধানের।পাশাপাশি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ধানের বীজ সংরক্ষণ করে আসছেন তিনি।তার চাষ করা দেশীয় বিকল্প ধানের ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।ব্লক স্তর থেকে বিভিন্ন রকমের সাহায্য করা হয়েছে আরো বেশি সাহায্য করা হবে।পাশাপাশি কৃষক বন্ধু সোমনাথ জানাকে আরও উন্নত প্রযুক্তির চাষের ক্ষেত্রে ট্রেনিং দেয়া হবে ব্লক স্তর থেকে।যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের চাষে চাষী ভাইরা উৎসাহিত হন ।এবং চাষিদের কাছে উনি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকেন ।” ব্লক কৃষি অধিকর্তা কল্যান কুমার গাঙ্গুলী জানান-“আমরা কৃষকদের জন্য সব রকম সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি ।বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।যাতে কৃষকেরা কম খরচে, কম সময়ে, বেশি ফলন উৎপাদন করতে পারেন এবং লাভবান হতে পারেন ।এবছর তাই দেশী প্রজাতির বিকল্প ধান চাষে কৃষকদের উৎপাদিত ফলনের পরিমাণ যথেষ্ট ভালো হয়েছে । আমরা যেমন দেশীয় বিকল্প ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করে ছিলাম তেমনি তারা ভালো ফলন উৎপাদন করেছেন। লাভের অংক দেখিয়ে আমরা কৃষকদেরকে খুশি করতে পেরেছি । ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও উদ্যোগ আমরা এই অঞ্চলে করে যাব “।সব মিলিয়ে এই বৎসর নারায়ণগড় ব্লকের কৃষি দপ্তরের সাফল্য ও চাষীদের সাফল্য চোখে পড়ার মতন ।খুশি কৃষি দপ্তর থেকে চাষীরাও ।