জয়ী হওয়া পঞ্চায়েত সমিতির এক মহিলা কর্মাধ্যক্ষকে মারধর করার অভিযোগ

তোলাবাজির প্রতিবাদ করেছিলেন ! তাই দলের টিকিটে জয়ী হওয়া পঞ্চায়েত সমিতির এক মহিলা কর্মাধ্যক্ষকে মারধর করার অভিযোগ উঠল দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শ্রীরামপুর মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পম্পা ঘুঘু। তাঁর অভিযোগ, মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ মণি সাঁপুই ও পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের সদস্য তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুদর্শন বরের বিরুদ্ধে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পম্পাদেবীর বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছেন সুদর্শনবাবু। আর একে অপরের বিরুদ্ধে এইভাবে অভিযোগ করার ফলে সামনে এসেছে ওই এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের ঘটনা।

পম্পাদেবীর অভিযোগ, ১৫ তারিখ স্থানীয় মৎস্য চাষীদের নিয়ে একটি প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল। পুরো অনুষ্ঠানটি সরকারি খরচে হওয়ার কথা থাকলেও চাষীদের থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। এরপর সোমবার তিনি BDO অফিসের মিটিংয়ের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। এর প্রেক্ষিতে ওইরাতেই বাড়িতে চড়াও হয়ে বেশকিছু মহিলা চুলের মুঠি ধরে তাঁকে ঘর থেকে টেনে এনে মারধর করে। মণি সাঁপুই ও সুদর্শন বরের নেতৃত্বে মারধর ও গালিগালাজ করা হয়। তাঁর মেয়ে আটকাতে এলে তাকেও মারধর করে অভিযুক্তরা। জামাকাপড়ও ছিঁড়ে দেয়।

এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি কর্মাধ্যক্ষ পদে থেকে জানতে পারি মৎস্য চাষীদের ওই ট্রেনিংয়ের জন্য কোনও টাকা নেওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও ওরা টাকা তুলেছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আমি ১৫ বছর জড়িত রয়েছি। বর্তমানে কর্মাধ্যক্ষও হয়েছি। তা সত্ত্বেও তৃণমূল নেতাদের কাছেই আমাকে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। তৃণমূলের একজন নেত্রী হয়ে আমার লজ্জা লাগছে এই ঘটনার কথা কাউকে জানাতে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে সুদর্শন বর বলেন, “পম্পা বিভিন্ন ভাবে টাকা তোলে। আধার কার্ড, বিভিন্ন সার্টিফিকেট ও ঋণ করে দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৫০০-১০০০ টাকা নেয়। এর জন্য আগেও ওকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে দলে নিয়ে আমি ওকে পঞ্চায়েতের কর্মাধ্যক্ষ করেছিলাম।

এমনিতে মণি সাঁপুইয়ের সঙ্গে ওর মতবিরোধ আছে। তাই মৎস্য ট্রেনিংয়ের ওকে ডাকেনি। সেই কারণে BDO অফিসের মিটিংয়ে ও টাকা তোলার অভিযোগ আনে। মৎস্য চাষীদের ট্রেনিংয়ে লোকজন বেশি হয়েছিল। তাই খাবারের জন্য চাষীদের থেকে ১০০-১৫০ টাকা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ও টাকা তোলার মিথ্যে বদনাম দিচ্ছে।আপনার নামে কেন অভিযোগ উঠছে ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার দু’বিঘা জমি লিজ় দিয়েছিলাম পম্পাকে। তারজন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, সময়মতো সেই টাকা না দেওয়ায় জমি ফেরত নিয়ে নেওয়ার কথা বলি। তাই ও আমার নামে মিথ্যে দোষারোপ করছে। দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য ওকে আগেও বহিষ্কার করা হয়েছিল। এবারের ঘটনাটিও আমরা জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে ওকে দল থেকে বহিষ্কার করার আবেদন করব।

Susmita Sarkar

Share
Published by
Susmita Sarkar

Recent Posts

মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের কড়া নজর: পর্যালোচনা বৈঠকে অমিত শাহ

মণিপুরের ক্রমশ উদ্বেগজনক হয়ে ওঠা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল নতুন দিল্লিতে…

4 hours ago

আদিবাসী সমাজের উন্নয়ন: প্রকল্প পর্যালোচনায় মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশেষ বৈঠক

আদিবাসী সমাজের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা…

4 hours ago

হাওড়া-ধর্মতলা মেট্রোতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ছে, কমছে অপেক্ষার সময়

যাত্রীদের সুবিধার্থে এবং সকাল ও সন্ধ্যার অফিসের ব্যস্ত সময়ে যাত্রী ভিড় সামাল দিতে মেট্রো রেল…

4 hours ago

রবীন্দ্র সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা: শনিবার রাতে যান চলাচল বন্ধ থাকবে

কলকাতা, ১৬ নভেম্বর ২০২৪:শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি পোর্ট ট্রাস্টের উদ্যোগে আগামী শনিবার রাত থেকে রবীন্দ্র সেতু…

3 days ago

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব বিতরণের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে, তদন্তে সিট গঠন করল কলকাতা পুলিশ

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে শিক্ষার্থীদের ট্যাব বিতরণের টাকা দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ। বহু ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা…

4 days ago

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল, বিজেপির বিক্ষোভে ধস্তাধস্তি

দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা ব্লক আজ উত্তাল আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে। বিজেপির ডাকে…

4 days ago