মুভি রিভিউ: অমর্ত্য ভট্টাচার্যর ‘রুনানুবন্ধ’


রবিবার,১৮/১১/২০১৮
1359

সুনন্দা হালদার---

“The dreams to trace one’s origin,
suffocates in lifeless coffin.”
“উৎসে ফেরার স্বপ্নরা, সমাধিতে বন্দী আজ ।”

২৪তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত দু’টি ছবির অন্যতম, অমর্ত্য ভট্টাচার্যর ‘রুনানুবন্ধ’, ‘The He without Him.’ রুনানুবন্ধ ( ঋণ+অণু+বন্ধ ), শব্দটা ‘পালি’ থেকে ভেঙেচুরে বাংলায় নেওয়া, মানে, ‘শরীরের স্মৃতি’…মন ছাড়া শরীরও স্মৃতি বইতে পারে ।

শতরূপা, কবি মাইকেল হেমন্ত বিশ্বাসের মেয়ে, হারিয়ে যাওয়া বাবার খোঁজে এসেছে কলকাতায়…নাটমঞ্চে সে খুঁজে পেয়েছে এক অদৃশ্য পুরুষ যে তারই জীবনের চিত্রনাট্য লিখছে যার গলার আওয়াজে বাবার গন্ধ, মুখে প্রতিবাদী হলেও যার পরিচালনায় তার ভালোলাগা । অবচেতনে বাবা বলে…’তোকে জানিয়ে দেবে ক্লান্ত বিরহধারা, আমিই ছিলাম পিতা আর আমিই হবো পুরুষ ।’ ছবির পটভূমিতে চার্নকের শহরের উত্তরের পুরোনো ঘরানা; গঙ্গা ছুঁয়ে, কুমোর পাড়ার প্রতিমার নগ্ন শরীর ছুঁয়ে, নিরঞ্জনের পর প্রতিমার কাঠ-কাঠামো ছুঁয়ে শতরূপার মনের ওঠা পড়ার অপূর্ব চিত্রায়ন ।

কবিতার নুড়ির ওপর দিয়ে গড়িয়ে গেছে গল্প, গান রয়েছে স্রোতে । কিছু সংলাপ..বেশ্যার আঁচল ধরে সংসারচ্যূত কবি বলছে : ‘মুখোশধারী বুর্জোয়ারা একটা জিনিস জানে, কবিদের কখনও ঘাঁটাতে নেই’ ; নেপথ্য পুরুষ বলছে : ‘আনুগত্যের শিক্ষিত দাস, বুর্জোয়াদের হারাবে কবে, আমার পুত্র আমার মতোই ভবঘুরে এক ভাবুক হবে !’; ‘হে যাত্রী দ্রুত, আরও দ্রুত’…আঁচড় কাটে মনে। কঠিনে কোমলে ‘নারী’, শতরূপা চরিত্রে প্রিয়াঙ্কা ঘোষ রায় সার্থক, title song এর জন্য শিল্পী রূপম ইসলামকে সালাম । সব শেষে ব্যক্তিগত পরিচিতির বাইরে বলি…কবি, বাচিক শিল্পী, আলোকচিত্রী ( গঙ্গার ধারে চৌখোপের ধরা জলে কাক, পায়রার জল খাওয়া, গর্ত থেকে এক ঝাঁক ইঁদুরের বেরিয়ে আসা যার লেন্সবন্দী ! ), সম্পাদক, পরিচালক, এক কথায় পরিপূর্ণ শিল্পী অমর্ত্যকে ( পেশা আর নেশায় যে চলে সমান্তরালে…) মাতৃভাষায় এমন একটা মন-কাঁপানো ছবি তৈরীর জন্য হাজারো কুর্নিশ !… এক ঝলক তাজা রক্তের কাছে বাংলা সংস্কৃতির প্রত্যাশা বাড়িয়ে দেয় এমন ছবি । চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হওয়ার অকুণ্ঠ শুভেচ্ছা ‘রুনানুবন্ধ’র জন্য ।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট