আমার প্রিয় বারান্দাতে থামল ঢাকের বোল , উঠোন জুড়ে আজ বিষণ্ণতার সুর, শিউলি ফোটা ভোরের আবছায়া হয়ে গেল কিছু মুহুর্ত। পুজো শেষ, টানা চার দিনের রেশ আজ থামল। মণ্ডপের সামনে নেই আজ ভিড়। আমার প্রানের উৎসবে থামল ঢাকের আওয়াজ। তাদের আজ ঘরে ফেরার পালা। সবাইকে ছেড়ে মা পাড়ি দিলো কৈলাসে। মন খারাপের বারান্দা জুড়ে নেই কোন বোলের আওয়াজ। শান্ত পাড়া, নেই কোলাহল। ক্লান্ত শহর মাখল শিশির ভোর। এই শারদ প্রাতে চোখের কোনে জমছে জল। শিউলি ফোটা সুগন্ধে নেই আজ কোন সুর। জনজোয়ার তিলোত্তমার মুখ গুলো আজ ভারি অচেনা। গঙ্গার ঘাটে ঘাটে আজ নিরঞ্জনের পালা। সুরেলা দিন গুলোর আজ শব্দহীন।
আবার এসো মা। প্রতীক্ষার এক বছরের। সময়ের স্রতে আবার ভাসবে এ জনজীবন। বালক বালিকারা আবার ফিরবে পাঠশালায়। প্রানের পুজো প্রানেই থাকুক, থাকুক আনন্দের রেশ। সুপ্ত ধারা উজ্জল আলোকে নব কিরনে উন্মোচিত হোক প্রতিটি হৃদয়। সকলের মন ভারাক্রান্ত , এই বিষাদের সুর আজ আকাশে বাতাসে। অবাধ আনাগোনার আজ আর কোন হিসাব নেই, শারদীয়ার ম্যাগাজিন জুড়ে আজ শুধু সৃতি। ক্লান্ত দিঘির পাড়, একটু থামতে চাই মনের স্টেশান, কোথাও থামতে চায় প্রেমিকের ইন্সপিরেশান।
ঝলমলে হয়ে ওঠা কলকাতা আজ কিছুটা নিঝঝুম। অনেক না লেখা চিঠি গুলো হয়ত পৌঁছল না ডাকপিয়নের কাছে। অনেক অজানা গল্পের ইতি রয়ে গেল চিঠির খামে। কেউ নেই কিছু নেই , কণ্ঠের ভাষা নেই, অথবা দু পাশে মেঘের খুনসুটি আজ আর নেই। শরতের ঝিল্মিল আলো নেই। গোলাকার পৃথিবীর ঘুম নেই , লুকিয়ে রাখা গল্পের দিন শেষ। কিছু প্রিয় মুখের আবছায়া মাখা ভোরে ইতি দিয়ে গেল এই শরত। শুভ বিজয়া ।।