হেমতাবাদ: বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ লাগোয়া একটি গ্রামে দুর্গাপূজা যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছে না। উৎসব প্রিয় বাঙালি যখন শিক্ত চোখে উমাকে বিদায় জানাচ্ছে তখনই হেমতাবাদ লাগোয়া রায়গঞ্জ ব্লকের খাদিমপুর এলাকায় চন্ডি মায়ের পুজো শুরু হল। দশমীর পরের দিন গোটা গ্রাম জুড়ে উৎসবের আমেজ। কমলাবাড়ি হাট ছাড়িয়ে দক্ষিণ দিকে প্রায় ১ কিলোমিটার গেলেই এই খাদিমপুর গ্রাম। সেখানেই প্রায় ৫ বিঘা জমির মধ্যে প্রাচীন একটি গাছের তলায় ইটের দেওয়াল ও টিনের চাল দেওয়া একটি ছোট্ট মন্দিরে দেবীর পূজা হয়।
প্রতি বছরের মতো এবারও দশমীর পরে বিজয়া দশমির রাতে দেবীর পূজা শুরু হয়েছে। শনিবার থেকে শুরু হলো পূজা। পুজোকে কেন্দ্র করে মন্দিরের মাঠে বসে মেলা। পূজায় পাঁঠা বলি দেওয়ার প্রচলন আছে। পূজার দিন দেবীকে সোনা ও রুপার গয়না দিয়ে সাজানো হয়। পূজা কমিটির সদস্যরা জানান আর পাঁচজন বাঙালি যেমন বছরের প্রথম থেকেই দুর্গাপূজার প্রতীক্ষায় থাকেন। ঠিক তেমনই খাদিমপুর গ্রামের বাসিন্দারা দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। কারণ দশমীর দিন থেকে এই গ্রামে শুরু হয় মা বালাইচন্ডী রূপী দুর্গার পূজা। পরিবারের মঙ্গল কামনার জন্য এই চারদিন ধরে খাদিমপুর গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে চলে নিরামিষ খাওয়া দাওয়া।
তারা আরো বলেন, দেবী দুর্গা এখানে মা চন্ডী রূপে পুজিতা হন। দুর্গার সঙ্গে এখানে মহিষ বা অসুর কেউই থাকেনা। পুজো দেখতে এই চারদিন দূরদূরান্তের মানুষ এখানে ভিড় জমান। মা বলাইচন্ডী রূপী দুর্গার কাছে ভক্তরা নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দিলে ভক্তদের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় এমনই এলাকার বাসিন্দাদের বিশ্বাস। দশমীর দিন রাতে মুল পূজা হয়। এরপর সারা বছর মন্দিরে মূর্তি রেখে মায়ের পূজা চলে। পুজো উদ্যোক্তারা আরও জানান, এই পুজো কবে শুরু হয়েছিল তা সঠিক ভাবে না বলা গেলেও আনুমানিক ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে মা বলাইচন্ডী রূপে এখানে দেবী দুর্গা পূজা হয়ে আসছে। বলাইচন্ডী রূপী মা দুর্গার পূজাকে কেন্দ্র করে রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা যায় এই সময়।
Sent from my Samsung device.