উত্তর দিনাজপুর: সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার করে যেতে পারলে তবে যাওয়া যাবে সেই আফ্রিকা মহাদেশ । আর তখনই আপনি চাক্ষুষ লক্ষ্য করতে পারবেন আফ্রিকা মহাদেশের ঘন বন জঙ্গলে ভরা সেই দেশের প্রাচীন আদিবাসী দের লোকসংস্কৃতি। পৃথিবীর আদিম এই উপজাতির সংস্কৃতির দর্শন কার না দেখতে ভালো লাগে । কিন্তু এত দূরে, এত টাকা খরচ করে যাওয়ার সাধ্য সবার থাকে না সে ক্ষেত্রে বাদ সাধে অর্থের, কিন্তু এবার আর চিন্তা নেই আফ্রিকা মহাদেশের সেই প্রাচীণ উপজাতি দের সাংস্কৃতি ঝলক দেখা যাবে আপনার একদম ঘরের পাশেই। আর সেই সুযোগ এই বার করে দিয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর হরিহরপুর নসিরহাট বারোয়ারী দূর্গা পুজো কমিটি।চলুন না তাহলে নিখরচায় একবার ঘুরে আসা যাক পুজোর চারদিন নসিরহাটে সেই আফ্রিকা মহাদেশে ।হাতে গোনা আর মাত্র কটা দিন বাকি আছে তারপর শুরু হচ্ছে বাঙ্গালীদের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। তাই এই পূজাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সমস্ত বারোয়ারি পুজো কমিটি গুলো একে অপরকে টেক্কা দিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে ।এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয় ৪৯ তম বর্ষে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ হরিহরপুর নসিরহাট বারোয়ারী দূর্গা পুজো কমিটি ও ।
তারাও আদা জল খেয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে ।এবারে এই পুজোর থিম আফ্রিকার সংস্কৃতির সঙ্গে ভারতের উপজাতি সংস্কৃতির মেলবন্ধ।যা এবার দর্শনার্থীরা চাক্ষুষ দেখতে পারবে ।একদিকে যেমন আফ্রিকার বেঞ্জো নিত্য তেমনই ভারতের আদিম উপজাতিদের নৃত্য ।পুজো কমিটির সম্পাদক স্বপন কুমার সরকার জানান এখানকার এবারের পুজো সারা জেলার মধ্যে যে একটা বিশেষ স্থান করে নিবে সে বিষয়ে একশ শতাংশ নিশ্চিত তিনি। স্বপন বাবু আরও বলেন প্রতি বছরই কালিয়াগঞ্জ এর হরিহরপুর নসিরহাট বারোয়ারী দূর্গা পুজো আলাদা আলাদা চিন্তা ভাবনা নিয়ে এখানে পুজো করে থাকে ।যা প্রতি বছরই সাধারন মানুষদের কাছে নতুন মাত্রা পায় । এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয় । পুজো কমিটির সভাপতি রমেন্দ্র নাথ রায় বলেন , প্রতি বছরই আমাদের পুজো কোনো না কোনো থিম কে তুলে ধরে দর্শকদের উপহার দেয় । এবারও তার ব্যতিক্রম নয় । তিনি বলেন এবার আফ্রিকার সংস্কৃতির সাথে ভারতের আদিম সাংস্কৃতি কে তুলে ধরে অসাধারণ এক মেলবন্ধন ঘটানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ।
তিনি বলেন সাধারণ মানুষদের আফ্রিকায় গিয়ে সেই সংস্কৃতি দেখা দুষ্কর ব্যাপার । কারণ বহু অর্থে ব্যাপার। তাই সাধ থাকলেও সাধ্য হয়ে উঠতে পারে না । তাই এবার সাধারন মানুষদের কথা চিন্তা করে এই ধরনের আয়োজন করা হয়েছে । এদিকে যিনি এই আফ্রিকা ও ভারতের আদিবাসী সংস্কৃতি কে সুন্দর করে তুলতে ব্যস্ত হয়ে আছেন সেই বটুকা ভৈরব চৌধুরী বলেন তারা এবার এখানে আফ্রিকা ও ভারতের আদিবাসীদের সাংস্কৃতিকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন ফেলে দেওয়া টায়ার, টিন ও থার্মোকলের মাধ্যমে ।তিনি আরো বলেন এই কাজ তারা গত দুমাস ধরে করে চলছেন। অপর দিকে ক্লাবের সদস্য তথা এলাকার বাসিন্দা ধ্রুব রায় জানান থিম পুজোর দৌলতে আমরা এবার একটা নতুন উপমহাদেশের চিত্র প্রত্যক্ষ করব এর চেয়ে আনন্দ আর কি হতে পারে । তিনি বলেন যেভাবে হস্ত শিল্পের মাধ্যমে শিল্প-সংস্কৃতিকে নসি হাট হরিহরপুর সার্বজনীন পূজা কমিটি তুলে ধরেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
উল্লেখ্য এই হরিহরপুর নসিরহাট বারোয়ারী দূর্গা পুজো কমিটি প্রতি বছরই জেলার মধ্যে একটা স্থান করে নেয় তাদের পুজোর নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা মধ্য দিয়ে। সেই নিরিখে এবারও এ পুজো কমিটির কতটা আফ্রিকা ঊপমহাদেশ চিন্তা ভাবনা জনগণের মধ্যে মনের দাগ কাটবে সেটা সময়ই বলবে। তবে যাই হোক না কেন আফ্রিকা মহাদেশ যে পুজোর চার দিন নাসির হাটেই থাকছে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।তাই পুজোর চারদিন একটু সময় নিয়ে চলূণ না ঘুড়ে আসি এই আফ্রিকা ঊপমহাদেশে একবার।