কলকাতা: জনসংঘ থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি। প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নাম সর্বজনবিদিত। কিন্তু কোথায় বসে এই জনসংঘ তৈরীর পরিকল্পনা হয়েছিল তা সকলেরই অজানা। প্রথম আলোচনায় শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আর কে কে ছিলেন?
দুঃস্প্রাপ্য নথি পাওয়া গেল বালিগঞ্জ রাসমনি ভবনে শ্যামলী দাসের গ্রন্থাগার থেকে। ভারতীয় জনতা পার্টি ( জনসংঘ)-র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল অতীন্দ্রনাথ এস্টেট থেকেই। তখন জানবাজারেরর জমিদার রাসমনির নাতি অতীন্দ্রনাথ দাস। তাঁর খ্যাতি তখন ঈর্ষনীয়। বর্তমান রানি মা শ্যামলী দাস জানান, ১৯৫০ সাল নাগাদ জনসংঘ স্থাপন নিয়ে বাংলার বিশিষ্টজনেরা আলোচনা শুরু করেন। অতীন্দ্রনাথ দাস, এন সি চট্টোপাধ্যায় , শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী, হরিপদ ভারতী, বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী সহ বাংলার গন্যমান্য ব্যক্তিগন এই নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করে এই নতুন সংগঠন গড়ে তুলতে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। এমনকি নির্বাচনে অংশগ্রহনেররও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি আদায় করে নিতে দেরি করেননি। প্রতীক পান প্রদীপ।
শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী পার্কসার্কাস থেকে বিধানসভা নির্বাচনে নামেন। নির্বাচিত হন তিনি। শ্যামলীদেবীরর বক্তব্য থেকে জানা যায়, তখনকার সময়ে অতীন্দ্রনাথ দাসের এস্টেট থেকে বিধানসভা ভোটের খরচ বহন করা হয়। এস্টেট অ্যাটর্নি ছিলেন অসীম কৃষ্ণ দত্ত। তারপর অ্যাটর্নি হয় অশোককৃষ্ণ দত্ত। সেই সঙ্গে অ্যাটর্নি ছিলেন কে কে দত্ত। অশোককৃষ্ণ দত্ত জনতা ট্রাস্টের সূচনা করেন। ওই জনতা ট্রাস্ট থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি ১৯৮০ সালে তৈরী হয়। শ্যামলী দাস আরও বলেন, যেহেতু এই এস্টেটের মালিক ছিলেন অজয়নাথ দাস, যিনি অতীন্দ্রনাথ দাস এস্টেটের মূল মালিক ছিলেন।
২০০১ সালে প্রয়াত হন অজয়নাথ দাস। বর্তমানে মূল মালিক শ্যামলী দাস। তাঁর দুই পুত্র অমিতাভ দাস ও অম্লান দাস। শ্যামলীদেবীর দাবি, এখন থেকেই উৎপত্তি বিজেপির (জনসংঘ)। তাই ভারতীয় জনতা পার্টি অতীন্দ্রনাথ দাসের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে মানুষের পাশ দাঁড়াক। এমনটাই চাইছেন তিনি। অতীন্দ্রনাথ দাস এবং তাঁর সহধর্মিণী রানি সুহাসিনী দাসের এবং নাবালক পুত্র অজয়নাথ দাস (প্রয়াত) স্বপ্ন পূরন করুক বিজেপি। মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করুক এই দলের সকলে। যে বাড়ি থেকে এমন জাতীয় দলের জন্ম সেই দল মানুষের হয়ে কাজ না করলে, পুরনো ইতিহাস ভুলে গেলে মানুষ ক্ষমা করবে না বলেই মনে করেন শ্যামলীদেবী।