কারবালার ঘটনা-মহরম মাসের গুরুত্ব

আশুরার দিনের ঘটনা:

মুহরম মাসের দশম দিন ইসলামে বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন একটি দিন, কারণ এই দিনে ইসলাম ধর্মমতে অনেক ঘটনার অবতারণা হয়েছে। বিভিন্ন ঘটনাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

এই দিনে প্রথম মানব আদি পিতা আদম-কে সৃষ্টি করেন ঈশ্বর (আল্লাহ)।

আদম-কে এদিনেই স্বর্গ বা বেহেশতে স্থান দেয়া হয়, এবং পরবর্তীতে এই দিনেই পৃথিবীতে পাঠিয়ে আল্লাহ তাকে প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন।

নূহ-এর সময়কালে এই দিনে মহাপ্লাবন হয়।

ইব্রাহীম [আ.] জন্ম নেন এই দিনে, এবং হযরত মুসা আঃ ও তার বাহিনী ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার পানও এই দিনে।

মুসা সমসাময়িক ফেরাউনকে আল্লাহ এই দিনে নীল নদের পানিতে ডুবিয়ে মারেন।

ইউনুস মাছের পেট থেকে মুক্তি পান এই দিনে।

আইয়ূব রোগ মুক্তি পান এই দিনে।

ঈসা (খ্রিস্টধর্মমতে যিশু) এই দিনে জন্ম নেন এবং পরবর্তিতে তাকে সশরীরে ঊর্ধ্বাকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয় এই দিনে।

নবী মুহাম্মদ-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন এই দিন কারবালার ময়দানে ইয়েজিদের সৈন্যদের হাতে মৃত্যুবরণ করেন।

কারবালার ঘটনা:

হিজরী ৬০ সনে পিতার মৃত্যুর পর ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া নিজেকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা হিসাবে ঘোষণা করে। অথচ ইয়াজিদ প্রকৃত মুসলমান ছিল না বরং মোনাফেক ছিল। সে এমনই পথভ্রষ্ট ছিল সে ইসলামে চিরতরে নিষিদ্ধ মধ্যপানকে সে বৈধ ঘোষণা করেছিল। অধিকন্তু সে একই সাথে দুই সহোদরাকে বিবাহ করাকেও বৈধ ঘোষণা করেছিল। শাসক হিসেবে সে ছিল স্বৈরাচারী ও অত্যাচারী। এ সকল কারণে হযরত হোসাইন (রাঃ) শাসক হিসেবে ইয়াজিদকে মান্য করতে অস্বীকৃতি জানান এবং কূফাবাসীর আমন্ত্রন ও ইসলামের সংস্কারের লক্ষ্যে মদীনা ছেড়ে মক্কা চলে আসেন। এখানে উল্লেখ্য যে, উমাইয়াদের শাসনামালে ইসলাম তার মূল গতিপথ হারিয়ে ফেলেছিল। হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) মক্কা থেকে কুফার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি কারবালার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এ সময় উমর ইবনে সা’দ আবি ওক্কাসের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য কারাবালায় প্রবেশ করে। কয়েক ঘন্টা পর ইসলামের জঘন্য দুশমন শিমার ইবনে জিলজুশান মুরাদির নেতৃত্বে আরো বহু নতুন সৈন্য এসে আবি ওক্কাসের বাহিনীর সাথে যোগ হয়। অবশেষে বেজে ওঠে যুদ্ধের দামামা। এ যুদ্ধ সত্য এবং মিথ্যার দ্বন্ধের অবসান ঘটানোর সংগ্রাম। কারবালায় দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। নানা নাটকীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়। এই অসম যুদ্ধে ইমাম হোসাইন (রাঃ) এবং তার ৭২ জন সঙ্গী শাহাদৎ বরণ করেন। শিমার ইবনে জিলজুশান মুরাদি নিজে ইমাম হোসাইনের কণ্ঠদেশে ছুড়ি চালিয়ে তাকে হত্যা করে। আর সে বেদনাহত দিনটা ছিল হিজরী ৬১ সালের ১০ মহরম।

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন দোহাল

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোহাল আজ বেজিংয়ে, ভারত- চায়না বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের আলোচনায় অংশ নেবেন।…

4 days ago

ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন

আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতীয় নাগরিকরা শ্রীলঙ্কায় বিনা শুল্কে ভিসা পাবেন। ৩৯ টি দেশের…

4 days ago

তারা আর কোনো চাকরির পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সী’- NTA, আগামী বছর থেকে শুধুমাত্র প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা…

4 days ago

গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অস্থিরতার প্রেক্ষিতে এবারের গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে।…

4 days ago

‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি :সুকান্ত

রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণে ন্যাশনাল ‘ব্যাম্বু মিশন’ অভিযানের কাজ এই রাজ্যে এগোয়নি বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা…

4 days ago

বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে নিবন্ধিকৃত হতে হবে

সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া SEBI জানিয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাইলে…

4 days ago