ঝাড়গ্রাম:- ধামসা মাদলের তালে, গানে ও নৃত্যের ছন্দে করম উৎসবে মেতে উঠলেন মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে ছোট থেকে বড় প্রায় প্রত্যেকেই। করম পূজা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও ঝাড়গ্রাম করম থানে পূজো দিতে আসেন সবাই। এবছর ৩৩ এ পা দিল করম পূজা সেই সঙ্গে রাতভর চলল ঝুমুর নাচ প্রতিযোগিতা। উৎসবকে কেন্দ্র করে ঝাড়গ্রাম জুড়ে ছিল সাজো সাজো রব।
সাঁওতাল মাহলি ভূমিজ উপজাতিদের এক জনপ্রিয় লোকউৎসব। গ্রামের পুরোহিতদের সঙ্গে জঙ্গলে গিয়ে করম গাছের ডাল এনে বাড়ির অঙ্গনে বা মাঠের মাঝে পুঁতে দেন গ্রামের কুঁচবরণ কুমারীরা। তার পর নাচগানে মেতে ওঠেন মাদলের তালে তালে। উৎসবের প্রস্তুতি চলছে। গ্রামের পুরোহিত পাহাড়ঘেরা মাঠের মাঝে করম চারা পুঁতে সূচনা করলেন সাঁওতাল মাহলি ভূমিজ আদিবাসীদের জনপ্রিয় করম পরব। এই উৎসব নতুন ফসলের আবাহনের। দূরদূরান্তের গ্রাম, পাহাড়ের হাতা বেয়ে রঙিন পোশাক পরা মানুষেরা তাঁদের কুটুম বাড়িতে আসছেন। রুখা শুখা মাটিতে সবুজ ফসলের আশায় এই উৎসবের আয়োজন। নতুন পোশাক পরে তাঁরা নাচে-গানে মেতে ওঠেন। ঝিরিঝিরি বৃষ্টিধারায় লালপেড়ে সফেদ শাড়ি, মিশকালো চুলের খোঁপায় হলুদ গাঁদা ফুলের আভাস, কিশোরী কোমর দুলে ওঠে, পায়ের চলন সামনে পিছনে হয়, মাদলের একটানা দ্রিমি-দ্রিমি-দ্রাম-দ্রামের প্রতিধ্বনির অনুরণনে গেয়ে ওঠে লুপ্তপ্রায় জাওয়া গান। যে গানে লুকিয়ে আছে নারী সমাজের প্রাত্যহিক জীবনচর্চার বেদনামধুর বর্ণনা। কোনও বোঙ্গা (দেবতা), মন্দির, বিগ্রহ ছাড়া শুধুই গাছকে ঘিরে এই পরব।