Categories: রাজ্য

নিশানায় দমকল দফতর, ঘরে-বাইরে চাপে শোভন চট্টোপাধ্যায়

বিকাশচন্দ্র ঘোষ—-

কলকাতা: ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন ঘটনায় এমনিতেই মেয়র তথা রাজ্যের দমকল মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় খুব একটা সুনজরে নেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বেশ কয়েকবার ককড়েছেন তাঁর ‘কানন’ কে। সাম্প্রতিক সসময়ে দায়িত্ব পালনে তাঁর ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে নিজের দলের মধ্যেই।এবার বাগড়ি মার্কেটের আগুন আরও অনেকটা ব্যাকফুটে ঠেলে দিল কলকাতার মহানাগরিককে। রাজ্যের পুর ও নগোরন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম প্রকাশ্যেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে শোভনবাবুর দমকল দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। বাগড়ি মার্কেটের অগ্নিকান্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখন প্রশ্নের মুখে ওই বহুতলের ছাড়পত্র মেলার বিষয়টি।

গতছ’মাস আগে ছাড়পত্র পায় ববাগড়ি মার্কেট। কোন ভিত্তিতে এই ছাড়পত্র মিলেছিল, এর পিছনে অন্য কোন অসৎ উপায় ছিল কিনা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি, বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা সহ বিরোধী অনেক নেতাএই ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে সরাসরি রাজ্য প্রশাসনকেই দায়ি করেছেন। রানি রাসমনি পরিবারের বর্তমান বংশধর তথা অতীন্দ্রনাথ দাস এস্টেটের প্রধান শ্যামলী দাস কলকাতা পুরসভার ও দমকল বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বুধবার তিনি দাবি জানান, বাগড়ি মার্কেটের ছাড়পত্র দেওয়ার পিছনে আসলে কি কি বিষয় খতিয়ে দেখা হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখা উচিত। আদতে কোন কিছু খতিয়ে দেখা হয়েছিল কিনা তাও তদন্ত হোক। দাবি রানি রাসমনির নাত বউ শ্যামলী দাসের।

এদিকে দলের অন্দরেও যথেষ্ট চাপে মেয়র তথা দমকল মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এখন বিদেশ সফরে। তিনি মন্ত্রী গোষ্ঠী তৈরী করে দিয়ে গিয়েছেন। এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ে নবান্নে মন্ত্রীগোষ্ঠীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মেয়র পদ ও দমকল মন্ত্রী হিসাবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গোটা বিষয়টি দেখবার জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। অগ্নিকান্ডের মত ঘটনা, সেখানে দমকল মন্ত্রীকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বলেই নবান্ন সূত্রের খবর। বলা যায় ঘরে ও বাইরে যথেষ্টই চাপের মধ্যে রয়েছেন শোভনবাবু।

এদিকে এতবড় আগুন, কোটি কোটি টাকা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েও কেন সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়া হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্যামলী দাস থেকে শুরু করে বিমান বসু সহ একাধিক মানুষ। শ্যামলী দাস বলেন, যদি সেনাবাহিনীকে নিয়ে আসা যেত তাহলে হেলিকপ্টারের সাহায্যে ওপর থেকে জল দেওয়ার ব্যাবস্থা করা যেত। আগুন এই ভয়াল রূপ নিতে পারত না। তাঁর কথায়, এরকম বিপর্যয়ের সময় রাজনীতি করা উচিত নয়। কেন্দ্র ও রাজ্য এক হয়ে কাজ করলে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কমত।

admin

Share
Published by
admin

Recent Posts

স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী

আজ, ১২ জানুয়ারি ২০২৫, আমরা উদযাপন করছি স্বামী বিবেকানন্দের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী। এই দিনটি কেবল তাঁর…

2 months ago

কবি এ কে সরকার শাওনের প্রথম উপন্যাস “অতল জলে জলাঞ্জলি” প্রকাশিত।

১০ জানুয়ারি ২০২৫ এর বই মেলা উপলক্ষে বাজারে এসেছে কবি এ কে সরকার শাওনের প্রথম…

2 months ago

উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া আপডেট

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চল ও সিকিমের আবহাওয়া রইবে বিশেষভাবে পরিবর্তনশীল। পার্বত্য অঞ্চল ও…

2 months ago

সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের উপর কড়া নির্দেশ জারি

রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশিকা জারি করল…

2 months ago

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ আজ, অপেক্ষা ভোটের দিন ঘোষণার

জাতীয় নির্বাচন কমিশন আজ দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করবে। দুপুর ২টায় এক সাংবাদিক সম্মেলনের…

2 months ago

নেপাল-তিব্বত সীমান্তে তীব্র ভূমিকম্পে ৫৩ জনের মৃত্যু, আহত ৬২ জন

নেপাল-তিব্বত সীমান্তে ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ৫৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আরও ৬২…

2 months ago