বীরভূম: বাইক বাহিনীর ক্রমাগত তান্ডবে যখন অতিষ্ট স্কুল ছাত্রীরা। তখন ক্যারাটের প্যাঁচে এক দুষ্কৃতীকে ঘায়েল করে অপহরনের ছক বানচাল করল বোলপুর গার্লসের একাদশ শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী পারমিতা ভট্টাচার্য। বর্তমানে ক্যারাটেয় ব্লু বেল্ট এই ছাত্রী রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় গোল্ড পেয়েছে। এই ছাত্রীর কাছ থেকে জানা গেল বেশ কিছুদিন ধরে তার এক বান্ধবীর সাথে অভদ্র আচরণ করছিল এক বাইক আরোহী। ফাঁকা রাস্তায় একা পড়তে যাওয়ার সময় ঐ ইভটিজার তাকে বিভিন্ন ভাবে উত্তক্ত করত। এই ঘটনা জানার পরেই ঐ দুষ্কৃতীকে ধরার জন্য বান্ধবীর সাথে নিজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পারমিতা। বুধবার সকাল আটটা নাগাদ উত্তর নারায়ণপুর এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে ঐ বাইক আরোহীর খপ্পরে পড়ে দুই ছাত্রী। তবে এবার ঐ দুষ্কৃতী পারমিতাকে টার্গেট করে। তার হাত ধরে টানতেই ক্যারাটের মারে ঘায়েল হয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতী।
পারমিতা জানায় এদিন হঠাৎ পেছন থেকে এসে আমার হাত ধরতেই আমি বুঝে যাই এই সেই ব্যাক্তি। আর কালক্ষেপ না করে চকিতে বাইক আরোহীর পেট লক্ষ্য করে দুটো পাঞ্চ করতেই বাইক নিয়ে বেসামাল হয়ে যায় সে। ঘটনায় হতচকিত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পারমিতা ফের তার হাতে কষিয়ে দেয় ক্যারাটের চপার। মোক্ষম জবাব পেয়ে কোনোরকমে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় ঐ বাইক আরোহী। পারমিতা বলে আমি চেষ্টা করেছিলাম ঐ দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিতে। প্রায় তিন বছর ধরে গোয়ালপাড়া এলাকায় এক শিক্ষকের কাছে কঠোর ক্যারাটে প্রশিক্ষণ নিয়ে চলেছে এই ছাত্রী। মেয়ের এহেন সাহসিকতায় গর্বিত তার বাবা কামদেব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন ও অনেকদিন ধরেই ক্যারাটে শিখছে।
আজ এইভাবে সেটা কাজে লাগবে বুঝতে পারি নি। তবে এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশও করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য মেয়েরা ঐ এলাকা দিয়ে একা পড়তে যায়। কখন কি হয় বলা যায় না। এখন বোলপুর, শান্তিনিকেতন এলাকায় ইভটিজারের সংখ্যা বেড়ে গেছে। প্রায়ই তাদের হাতে হেনস্থা হতে হচ্ছে মেয়েদের। পুলিশ এই বিষয়ে কোনো কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর পর ঐ দুষ্কৃতী যদি তৈরি হয়ে আসে তাহলে কি হবে সেটা ভেবেই আমি আতঙ্কিত। তবে অকুতোভয় পারমিতার জবাব এবার এলে আর ফিরে যেতে দেবো না। এই ঘটনায় এদিন শান্তিনিকেতন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে দুই ছাত্রী ও তাদের পরিবার।