বারাসাত : বুধবার গোটা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে এক বর্ণাঢ্য স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করল বারাসত এর হজরত সুমাইয়া গার্লস মাদ্রাসা। অনুষ্ঠান উপলক্ষে এদিন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে সম্প্রীতির বার্তাও। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ছাত্রছাত্রী, বহু গুণীজন এবং এলাকার অনেক উৎসাহী মানুষ।
৭২ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে এদিন সকাল থেকেই সাজ সাজ রব পড়ে যায় বারাসত বড়া মনসুরপুরের এই ছাত্রী মাদ্রাসা টি তে। আগের দিন থেকেই নিরলস পরিশ্রম আর নিখুঁত পরিকল্পনার মাধ্যমে মাদ্রাসার ছাত্রীবৃন্দ এবং শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানস্থল টিকে জাতীয় পতাকার তিন রঙে যেন মুড়ে দেন। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথি নহাটা জে.এন.এম.এস মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং নজরুল চর্চা কেন্দ্রের রাজ্য সভাপতি ড. শেখ কামাল উদ্দিন মহাশয় ও তরুণ শিক্ষক বাবলু সরকার মহাশয় এর হাত দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এরপর কবি ইকবাল এর “সারে জাঁহা সে আচ্ছা” গানটি গেয়ে অনুষ্ঠানের মূল সুরটিকে বেঁধে দেন মাদ্রাসার ছাত্রী জেসমিরা খাতুন। এরপর ছাত্রীদের নানান দেশাত্মবোধক সঙ্গীত, নৃত্য এবং নাটক সঠিক উপস্থাপনা ও পরিকল্পনার গুনে অনুষ্ঠানস্থল সম্প্রীতির বার্তায় মজবুত হয়ে ওঠে। এদিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আব্দুল হামিদ সাহেব। সিরাতের বারাসাত ইউনিট এর সম্পাদক তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী রিয়াজুল ইসলামের সুন্দর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলাদা উদ্দীপনার সঞ্চার হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. শেখ কামাল উদ্দিন সাহেব এদিন তাঁর ভাষণে দেশের ছাত্রছাত্রীদের সমাজ সচেতন করার উদ্দেশ্যে সঠিক ইতিহাস পাঠ করানোর কথা বলেন। পরবর্তী বক্তা সমাজকান্ডারী শিক্ষক তথা ‘নজরুল চর্চা কেন্দ্রের’ রাজ্য সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজসেবী বাবলু সরকার বলেন সমাজের পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পারলে তবেই স্বাধীনতা তার লক্ষ্যে পৌঁছবে এবং সেই উদ্দেশ্যেই আমাদের কাজ করে যেতে হবে। আবু সিদ্দিকি খান তাঁর ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের পিছনে হিন্দু মনীষীদের পাশাপাশি মুসলিম মনীষীদের অবদানের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন এই স্বাধীনতা হিন্দু মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের মাধ্যমেই অর্জিত হয়েছে। একথা ভুললে চলবে না। এইভাবে নানান বক্তাদের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে উঠে আসে সম্প্রীতি এবং একতার মাধ্যমে স্বাধীনতার সুমহান আদর্শকে রক্ষার বার্তা।
এদিনের অনুষ্ঠানে উক্ত বক্তাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন, ‘নজরুল চর্চা কেন্দ্র ‘এর সহ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তথা সমাজসেবী গোলাম মোস্তাফা, বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্য সিদ্দিকি আলী, সমাজসেবী আব্দুল আলিম, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রশিদ তরফদার, সুবিখ্যাত বক্তা ক্কারী আব্দুস সালাম, ক্কারী সফিউল্লাহ, মাদ্রাসার সভাপতি হাজি আহাম্মাদ আলী, জমিয়তের বারাসাত শাখার সম্পাদক হাসান আলী খান, ইমাম হাজেজ সফিকুল ইসলাম সহ আরও বহু বিশিষ্ট জন। স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলিম মনীষীদের রূহে মাগফিরাতের দোয়া জানিয়ে এদিনের এই মহতী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন সুমাইয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হাফেজ ক্কারী নাসিরুদ্দিন সাহেব।
বাংলা এক্সপ্রেস মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করুন