স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বেহালায় একটি অনুষ্ঠানে দিদি বলেছিলেন, প্রকৃত স্বাধীনতা আসবে বিজেপি ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর। তারপর থেকেই ঘন ঘন ফোন পাচ্ছি। ফোন তুললেই লোক জিজ্ঞাসা করছে, দাদা আমরা কি পরাধীন? দেশের যা পরিস্থিতি তাতে দিদির এই মন্তব্য নিয়ে কিন্তু কোন বিতর্কের অবকাশ নেই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, তা একদম সঠিক। তিনি প্রকৃত অবস্থাটাকেই তুলে ধরেছেন। আজকে আমাদের দেশে স্বাধীনতার অর্থ হল, আসামে নাগরিক পঞ্জি তৈরির নামে ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে অন্যায়ভাবে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে রাতারাতি দেশছাড়া করার স্বাধীনতা! মেহুল চোকসি, নীরব মোদীর মত লোকদের দেশকে অবাধ লুণ্ঠনের স্বাধীনতা! গোরক্ষার নামে ভিন্ন ধর্মের মানুষদের খুন করা ও তাদের খাদ্যাভাসের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার স্বাধীনতা! বুক-জলে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা তোলা হায়দর আলি খানকে ‘বিদেশি’ ঘোষণার স্বাধীনতা! বিরোধিতা সহ্য করতে না পারা ধর্মান্ধ গুন্ডাদের ওমর খালিদকে খুনের চেষ্টা, গুজরাতের দলিত নেতা জিগ্নেশ মেবানি আর উত্তরপ্রদেশের চিকিৎসক কাফিল খানকে খুনের হুমকি দেওয়ার স্বাধীনতা! স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় তার বিরোধিতা করার ইতিহাস পিছনে নিয়ে যারা আজ দেশের ক্ষমতার তখত-এ বসেছেন তারা আজ স্বাধীনতার সংজ্ঞা বদলে দিয়েছেন। “তুমি মহারাজ, সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে?”
স্বাধীনতা বলতে মোদীরা বোঝেন দেশের কোটি কোটি গরীব মানুষকে রাতারাতি নিঃস্ব করে দিয়ে নোটবন্দী করার স্বাধীনতা। যে রামরথ দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়েছিল, আবার তা চালু করার কর্মসূচি নিয়ে গোটা দেশের হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়কে আড়াআড়ি ভাবে বিভাজিত করার স্বাধীনতা। স্বাধীনতার কথা আজ যারা বলছেন তারা স্বাধীনতা কথাটার অর্থই বোঝেন না। বোঝেন না অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীদের তফাৎ। মানেন না অনুপ্রবেশ ও শরণার্থীদের তফাৎ করা ও আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের স্বীকৃত ঘোষণা। ক্ষমতার দম্ভে বঙ্গবিদ্বেষী এই দলটির টিভিতে মুখ ভাসানো চার আনা, ছ-আনা নেতারা বাংলা নামক ভূখণ্ডটির ইতিহাস ভুলে গেছেন। ভুলে গেছেন বলেই অন্তত ছ-সাত বার পূর্ব বাংলা থেকে আগত মানুষদের এরাজ্যে আশ্রয় দেওয়ার সহনশীলতার ইতিহাস বিস্মৃত হয়েছেন। সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর উত্তেজনায় ভুলে গেছেন, পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে লাগাতার কর্মপ্রার্থী মানুষদের এরাজ্যে জায়গা করে দেওয়ার সংস্কৃতি। ভুলে গেছেন, নিজেরা অনেক কষ্ট ও বঞ্চনার শিকার হলেও বাংলায় বিভেদপন্থা ও অসহিষ্ণু হওয়ার জায়গা নেই। সত্যি বলতে কী, আসামে এনআরসি তালিকা ঘোষণা করার দিনই বাংলায় তো বটেই গোটা দেশে বিজেপির শেষ হওয়ার ঘন্টা বেজে গিয়েছে। বিভেদ সৃষ্টিকারী মোদী-অমিতদের মুখে স্বাধীনতার কথা মানায় না, তাই দিদি বলেছেন, দেশ থেকে বিজেপিকে উৎখাত করলেই আমাদের প্রকৃত স্বাধীনতা আসবে। সত্যিই তো, তা না হলে নিজেদের পরাধীন বলা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই।
বস্তুত মোদী-অমিতরা আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সবভাবেই পরাধীন করে রেখেছেন। তারা একটি রাজ্যের সঙ্গে আরেকটি রাজ্যের বিভেদ উস্কে দিচ্ছেন নিজেদের সংকীর্ণ রাজনীতির মধ্যে দিয়ে। অর্থনৈতিকভাবে আমরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছি। বিশ্ববাজারে পড়ছে টাকার দাম। অর্থনীতিতে যত আমরা পিছনে হাঁটছি দেশজুড়ে ততই বাড়ছে কর্পোরেটদের অবাধ লুণ্ঠনের স্বাধীনতা। ধর্মীয় মেরুকরণকে ত্বরান্বিত করার জন্য সরকারি মদতে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে একশ্রেণীর ধর্মান্ধদের যে তাণ্ডব চলছে, আগমার্কা হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী একশ্রেণীর উচ্চবর্ণের হিন্দুদের হাতে দলিতদের যে লাঞ্ছনা হচ্ছে তা দেশের সামাজিক ঐক্যকেই ভেঙে দিচ্ছে। দেশের শাসকদলের সংস্কৃতির কথা যত কম বলা যায় ততই ভাল। ইন্টারনেট থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ার জন্ম অবধি তারা যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন তাতে দেশের লেখাপড়া জানা মানুষেরা থেকে থেকে চমকে উঠছেন। সাহিত্য থেকে সিনেমা সবকিছুর ওপরই নাগাল পরাতে চাইছেন তারা। গোটা দেশজুড়ে চালু হয়ে গেছে এক অঘোষিত জরুরি অবস্থা। বিজেপি বুঝে গেছে তাদের দিন মোটামুটি শেষ হয়ে আসছে তাই আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক শৃঙ্খলাকে ভেঙে দেওয়ার জন্য তারা শেষ কামড় দিচ্ছে। এমন অবস্থাকে পরাধীনতা ছাড়া আর কীই বা বলা যেতে পারে?
‘স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায়’। সঠিকভাবেই দিদি বলেছেন, এ সরকার না গেলে দেশে প্রকৃত স্বাধীনতা আসবে না। অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার আগেই আমাদের প্রত্যেকের এখন নিজের নিজের যুক্তিবুদ্ধি, বিচার বিবেচনা এবং সামর্থ্য অনুযায়ী তার পাশে দাঁড়ানো দরকার। ইংরেজ শাসকদের মতই মোদী-অমিতরা মানুষে মানুষে লড়াই বাধিয়ে দিয়ে দেশ শাসন করতে চাইছে। আমাদের নিজেদের মধ্যে অনেক মতের অমিল থাকতেই পারে। কিন্তু তা ভুলে মোদী-অমিতদের হটানোটাই আমাদের এই দেশব্যাপী লড়াইয়ের প্রধান অভিমুখ হওয়া উচিৎ। এটা দিদি বুঝেছেন বলেই বিজেপিকে হটানোটাই তিনি প্রধান লক্ষ্য করে নিয়ে সারা দেশে ছুটছেন। দিদির এই জেদ আর একটানা লড়াইয়ের ফল কী হয় তা বাংলার আগের শাসকরা জানেন। সোনার কেল্লা ছবিতে সেই বিখ্যাত সংলাপ ‘দুষ্টু লোক ভ্যানিশ’ এর মতই ২০১৯এর নির্বাচনে দেশের শাসন ক্ষমতা থেকে মোদী ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের সরে যাওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
₹199.00 (as of শুক্রবার,২৭/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹6,390.00 (as of শুক্রবার,২৭/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹223.00 (as of শুক্রবার,২৭/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹299.00 (as of শুক্রবার,২৭/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
₹14,999.00 (as of শুক্রবার,২৭/১২/২০২৪ ১৫:২২ GMT +05:30 – More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)
সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, সৌদি আরব সহ বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ পাকিস্তানের অন্তত ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন…
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ৭১ হাজারেরও বেশি প্রাপকের হাতে চাকরীর নিয়োগ পত্র…
ডিসেম্বর মাসে ভারতীয় পুঁজিবাজার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের (এফপিআই) কাছ থেকে ব্যাপক লগ্নি লাভ করেছে। পুঁজিবাজারে জমা…
কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে গতকাল আইএসএল ফুটবলে কেরালা ব্লাস্টার্স এক দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ৩-০ গোলে মহামেডান…
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর আজ থেকে হয়ে উঠেছে ঐতিহ্যের এক নতুন উজ্জ্বল মঞ্চ। সূচনা হয়েছে ৩৭তম বিষ্ণুপুর…
প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী ও গুরু পৌষালী মুখোপাধ্যায় প্রয়াত। শনিবার কলকাতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস…