ছবির মতো সবুজ শ্যামল শোভায় ভরা একটি গ্রাম—নাম তার ‘তেওতা’। এই ‘তেওতা’ গ্রামের পাশ ঘেঁষে কল্কল্ ছল্ছল্ করে বয়ে গেছে নদী যমুনা। যমুনার স্বচ্ছ জলধারায় পলিমাটি উজাড় করে ভরিয়ে দিয়েছে ফুল, ফল আর ফসলের সম্ভারে। এই গ্রামের কাঁদা মাটির বুকে জন্ম নিয়েছেন মধ্যযুগের কবি ঈশান নাগর, প্রজাহিতৈষী রাজা শ্যামাশঙ্কর রায়চৌধুরী, ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলার মহারাজার মন্ত্রী উমাকান্ত দাশগুপ্ত, সিপাহী বিদ্রোহের ইতিহাস লেখক রজনীকান্ত দাশগুপ্ত ও ভারতবর্ষের সংগ্রামী কংগ্রেসী নেতা কিরণশঙ্কর রায় প্রমুখ।
এ গ্রামের রাজা শ্যামাশঙ্কর রায়চৌধুরীর শৈল্পিক নন্দিত সুরম্য অট্টালিকা রাজপ্রসাদ ঘিরে এক সময় ছিল কর্মচাঞ্চল্য। রাজ কর্মচারী, প্রজাদের পদভারে আর পাইক-পেয়াদারের হাঁকডাকে অষ্টপ্রহর ছিল মুখরিত। নবরত্ন দোলমন্দিরে সকাল-সন্ধ্যা বেজে উঠতে কাঁসর ঘণ্টা। কাঁসর ঘণ্টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা ছুটে আসতো মন্দির প্রাঙ্গনে। পুরোহিতের কাছ থেকে দু’হাত ভরে ভোগের সামগ্রী নিয়ে আনন্দে ফিরতো ঘরে।
বৃহত্তর ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান মানিকগঞ্জ জেলার) শিবালয় থানার ‘তেওতা’ গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী সেন পরিবারের বাসিন্দা বসন্তকুমার সেনগুপ্ত। বসন্তকুমার সেনগুপ্তের প্রথম পত্নী আঙুরিদেবীর ঘরে কোনো সন্তান না হওয়ার দরুণ গিরিবালা দেবীর সঙ্গে দ্বিতীয় বিবাহে আবদ্ধ হন। বিয়ের কিছুদিন পর ১৩১৬ সালের ১৭ বৈশাখ (১৯০৯, মে) মা-বাবার-ঘর উজ্জ্বল করে ভূমিষ্ট হন ‘তেওতা’ গাঁয়ের দুলি নামের একটি মেয়ে। দেরীতে হলেও মা-বাবার আশা পূরণ হয়েছে বলে কন্যা সন্তানের নাম রাখলেন—আশালতা সেনগুপ্তা। আশালতা দেখতে ছিলেন চাঁপাকান্তি রূপ-লাবণ্যে প্রতিমার মতো অপরূপা। মা-বাবা আদরে করে ডাকতেন কখনও দোলন আবার কখনও দুলি নামে।
দু’মায়ের একমাত্র কন্যা সন্তান। আদর সোহাগের কোনো কমতি নেই। এক মায়ের বুকে মাথা রেকে আরেক মায়ের কোলে তুলতুলে পা রেখে পরম সুখে ঘুমিয়ে পড়েন ছোট্ট মেয়েটি। আবার ঘুম থেকে জেগে ওঠে ফোকলা দাঁতে খিলখিল হাসিতে মায়েদের মন আকুল করে তোলেন। মা একমাত্র আদুরের মেয়েটির কচি দু’হাত ধরে ঝুলিয়ে ছড়া কাটেন : ‘ঝুলে ঝুলেরে/যাবে মায়ের কোলেরে’। ছোট্ট মেয়ে দুলি এক মায়ের কাছ থেকে আরেক মায়ের কাছে যেতে বাড়িয়ে দেয় সুন্দর কচি দুটি হাত। পরিবারের আদর সোহাগে ‘তেওতা’র ধুলোবালি, কাদা-মাটিতে বেড়ে ওঠেন দুলি। খেলার সাথীদের নিয়ে টইটই করে ঘুরে বেড়ান বন-বাদাড়ে। আম-জাম, বেতস, করমচা কুড়িয়ে ফ্রকের কোচড় ভরে ফিরেন ঘরে। আবার কাঁসর ঘণ্টার আওয়াজ শুনে এক দৌড়ে ছুটে যান রাজবাড়ির নবরত্ন দোল মন্দিরে। পুরোহিতের কাছ থেকে ভোগের সামগ্রী তুলে নেন দু’হাত ভরে। সন্দেশ, বাতাসা খেয়ে গাঁয়ের জামায় হাত মুছে শোনেন কীর্তন কিংবা ভক্তিগীতি। খেলার সাথীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছুটে যান গাঁয়ের তেমাথা রাস্তার ধারে। বরইগাছের মগডালে চড়ে কাঁটার সঙ্গে লাল মরিচ গেঁথে দিয়ে এসে সাথীদের চিত্কার করে ডেকে বলেন, ‘ভট্টু, ওই দেখ বরই গাছে লাল লঙ্কা ধরেছে।’ খেলার সাথীরা দুলির দুষ্টুমী না বুঝে অবাক হয়ে পড়ে। ‘তেওতা’ গ্রামের চপলা-চঞ্চলা শ্যামলাবতী দুলি নামের মেয়েটি খেলার সময় খেলে। কিন্তু স্কুলের সময় হলে খেলা ফেলে ঠিকই বই হাতে নিয়ে যায় স্কুলে। স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফিরে এসে খেতে না খেতে স্টিমারের হুইসেল শুনে যমুনার পাড়ে দে ছুট। এমনিভাবে খেলাধুলায় আনন্দে আহ্লাদে দিন কাটতে থাকে দুলির।
দুলির বাবা বসন্তকুমার সেনগুপ্ত ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের নায়েব। কর্মস্থল ত্রিপুরায় তাঁর আকস্মিকভাবে মৃত্যু হয়। এতে সংসারে নেমে আসে দুঃখের কালো ছায়া। দুলিদের দেখাশোনা করার মতো গ্রামে তেমন কোনো অভিভাবক নেই। যার দরুণ বড় মা আঙুরি দেবীকে ‘তেওতা’য় রেখে মা গিরিবালা দেবীর সঙ্গে চলে যান কাকা ইন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের বাসায়। কাকা ইন্দ্রকুমার সেনগুপ্ত ছিলেন কুমিল্লায় কোর্ট অব ওয়ার্ড-এর ইন্সপেক্টর। তিনি সপরিবারে এই কান্দিরপাড়ের বাসায় বসবাস করতেন। দুলি কাকার বাসায় থেকে পড়াশোনা করতে থাকেন ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে। দুলি পড়াশোনায় ছিলেন যেমন মনোযোগী, তেমনি উত্সাহী ছিলেন সাহিত্য-সংগীত চর্চায়। কুমিল্লার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দুলি ও তাঁর কাকাতো বোন কমলাদেবী বাচ্চি সংগীত পরিবেশন করে দর্শক শ্রোতাদের মন জয় করতে সক্ষম হন। দুলির কাকাতো ভাই বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্ত ছিলেন ঈশ্বর বিদ্যালয়ের একজন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। তাঁর অনুপ্রেরণায় দুলি লেখাপড়া,,,।
(“প্রমিলা নজরুল লাইব্রেরী” বেওতা, শিবালয়, মানিকগঞ্জ থেকে তথ্য সংগ্রহ)
Samsung Galaxy M05 (Mint Green, 4GB RAM, 64 GB Storage) | 50MP Dual Camera | Bigger 6.7" HD+ Display | 5000mAh Battery | 25W Fast Charging | 2 Gen OS Upgrade & 4 Year Security Update | Without Charger
₹6,999.00 (as of রবিবার,১৭/১১/২০২৪ ১৬:৩৯ GMT +05:30 - More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)TIMEWEAR Analog Day Date Functioning Stainless Steel Chain Watch for Men
Now retrieving the price.
(as of রবিবার,১৭/১১/২০২৪ ১৬:৩৯ GMT +05:30 - More infoProduct prices and availability are accurate as of the date/time indicated and are subject to change. Any price and availability information displayed on [relevant Amazon Site(s), as applicable] at the time of purchase will apply to the purchase of this product.)