ঐতিহাসিক হুগলি মাদ্রাসা নতুন ভাবে পথচলা শুরু করল


বুধবার,০১/০৮/২০১৮
702

ফারুক আহমেদ---

ঐতিহাসিক হুগলী মাদ্রাসা নতুন ভাবে পথচলা শুরু করল। আজ হুগলি মাদ্রাসয় সভা করে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী সহ বিশিষ্ট নেতৃত্ব আজ থেকে আবার নতুন করে হুগলি মাদ্রাসার পথ চলা শুরু হলো। সরকারি হুগলি মাদ্রাসা চালু করতে উদ্যোগ নিল রাজ্যসরকার এবং রাজ্য সংখ্যালঘু দফতর। সংবাদপত্রকে এই কথা জানিয়েছিলেন, সংখ্যালঘু বিষায়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব ড. পি বি সালিম সাহেব। সংখ্যালঘুদের শিক্ষা প্রসারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাস্তবিক আন্তরিক। তিনি সংখ্যালঘুদের কল্যাণে প্রতিনিয়ত ভাল কাজ করছেন। সম্প্রতি আমাদের সবাইকেই মুগ্ধ করেছেন তিনি, মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়িত করতে ৩১ জুলাই মঙ্গলবার বিধানসভাতে বিল পাশ করালেন।

মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের আরও একটি পালক যোগ হলো মুর্শিদাবাদ জেলায়। মার্চ মাসে বাজেট বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ড. পার্থ চট্টপাধ্যায় মুর্শিদাবাদে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার ঘোষণা করেছিলেন।
রাজ্যবাসী হিসেবে ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম মা মাটি মানুষের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ড. পার্থ চট্টপাধ্যায়কে। আমরা সত্যি আজ গর্বিত আমাদের কল্যাণে অগ্রদূত মমতাময়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদা কাজ করছেন। এবার আশা রাখি শিক্ষা প্রসারে আর পিছিয়ে থাকবে না মুর্শিদাবাদ জেলা।

আমরা দেখেছিলাম সুকৌশলে আমাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল বিগত বাম সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে অনেকটাই অবসান হচ্ছে সেই চরম বঞ্চনার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপরিচালনা করতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে মুসলিম সমাজের একচেটিয়া ভোট পেয়েই তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। বিগত সাত বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে সব থেকে অবহেলিত ও বঞ্চিত মুসলিম সম্প্রদায় ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছেন। চাকরি, ভর্তি থেকে বিগত নির্বাচন গুলিতে জনপ্রতিনিধি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছিলাম বাম আমলে কোথাও সংরক্ষণ নীতির ১০০ শতাংশ রোষ্টার মানা হত না। অবশ্য তৃণমূল সরকারের সংরক্ষণ নীতির ১০০ শতাংশ রোষ্টার মানা হচ্ছে না এই অভিযোগও উঠে আসছে।

এই বিষয়ে সরকার সজাগ হলেই মঙ্গল। এখনও বামেদের কারও কারও মুখে বড় বড় কথা ও ভাষণ শুনে করুণা হয়। তারা মুখে মেকি দরদ দেখিয়ে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলে মুসলিমদের মন জয় করতে এখন চরম ভাবেই ব্যর্থ। বাস্তবিক মুসলিমরা বুঝল বামেরা কিছু করবে না এবং তাদের পিঠে দেওয়াল ঠেকে গিয়েছিল। এর অবসান করতেই তারা জোটবদ্ধ হয়েই দিদিকে দুহাত ভরে ভোট দিয়েছেন এবং জিতিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। ৬১৪ টি সরকারি মাদ্রাসায় ব্যাপক ভাবে শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় পঠন-পাঠন বিঘ্ন হচ্ছিল বাম আমল থেকেই। প্রাথমিক স্কুলে চাকরি বা অডিটস্ এন্ড অ্যাকাউন্ডস্ অফিসার নিয়গ, সমস্ত সার্ভিস কমিশন, পিএসসি, বিশ্ববিদ্যালয় সহ একাধিক সেক্টর ও অফিসে মুসলিমদের চাকরিতে প্রতিনিধিত্ব ছিল না বললেই চলে। সামন্য ডি গ্রুপের চাকরিতেও ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ কার্যকারি করতে বাম সরকার চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজত্বে এই সাত বছরে প্রতি দফতরে বাস্তবিক মুসলিমদের কর্মস্থান বাড়েনি শতাংশের হিসেবে। কোথাও ছিটে ফোটা দু একটা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের চাকরি হয়েছে তাও আবার তোষণের অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। বাস্তবিক আমরা প্রতিচি ট্রাস্ট, স্নাপ ও গাইডেন্স গিল্ডের রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে (পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের অবস্থান) বাম শাসনের থেকে বর্তমান সরকারের আমলে চাকরির ক্ষেত্রে ও সামাজিক ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের কল্যাণে মুখ্যমন্ত্রী সামন্য কিছু কাজ করেছেন। রাজ্যের গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাটাই অনকটাই বদলে গেছে। অনিল আয়নের অবসান ঘটেছে।

দক্ষ পরিচালকের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাটাই অনেকটাই বদলে গেছে যারফলে রাজ্যসরকারের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে অনেক নতুন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দ্রুত গতিতে সরকারি হুগলি মাদ্রাসাকে চালু করতে সরকারের সচিব ড. পি বি সালিম তৎপর হয়েছিলেন এবং আজ থেকে চালুও করে দিলেন।

আগামীতে বিজেপিকে আটকাতে মুসলিম ও আদীবাসীদের সমর্থন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি দ্রুত হারে বাড়ছে বলেই বামেরা অনেকেই তলে তলে বিজেপি করছে। তবে আশা রাখি তৃণমূল সরকারকে তারা টলাতে পারবে না। শিক্ষা প্রসারে হুগলি মাদ্রাসা চালু করলেন এবং আধুনিক ও ইসলামি শিক্ষার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে যথাবিহিত উদ্যেগ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনিই তো সংখ্যালঘু মন্ত্রীপরিষদের মূল দায়িত্বে আছেন তাই সবাই এখনও আশার আলো দেখছেন তিনি বাংলার কল্যাণে সেরা হবার দাবিদার হয়ে উঠছেন।

তাঁর কাছে সবিনয় আবেদন করেছিলাম মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য। তিনি উদ্যোগ নিয়েই সব ব্যবস্থা করেছেন এবং খুব তাড়াতাড়িই পঠন পাঠন শুরু হবে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। জেলাবাসীর দাবী সতন্ত্র জায়গায় মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে সরকার সঠিক উদ্যোগ নিক।

আর সেই সঙ্গে দ্রুত সংখ্যালঘুদের গর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুগলি মাদ্রাসাকে আধুনিক রূপে চালাতে সবরকম ভাবেই সরকার এগিয়ে আসুক। আর একটা আবেদন সুন্দরবনে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী ও উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী উদ্যোগ নিক। যেমন হুগলি মাদ্রাসা চালু করতে এবং নতুন পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় চালু করতে সঠিক পদক্ষেপ নিলেন। রাজ্যের বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সমাধান করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ড. পি বি সালিম সাহেব বরাবর দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন দফতরে সফলতার ও সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি এবার উদ্যোগ নিলেন হুগলি মাদ্রাসায় ইসলামি ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে। ২০০ বছরের পুরানো হুগলি মাদ্রাসা ইসলাম শিক্ষার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষা প্রসারে বড় আয়োজন করছেন। তিনি সরকারিভাবে কাজটি সফল করতে এগিয়ে এলেন এবং বাংলার ইতিহাসে হুগলি মাদ্রাসার পুরানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর হলেন। এখান আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবনায় নতুন করে আলো ছড়াবে হুগলি মাদ্রাসা।

আমরা সেই সঙ্গে আবেদন রাখছি যে সব জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেশি সেই সব জেলার ডিএম ও পুলিশসুপারের দায়িত্বে কোনও মুসলিম আধিকারিকে বসাতে হবে। এতে মানুষের প্রকৃত কল্যাণ হবে। এখন বাস্তবিক ২৩টি জেলার কোথাও কোনও মুসলিম পুলিশ আধিকারিক পুলিশসুপার পদে নেই। শুধুমাত্র একজন মুসলিম মহিলা ডিএম পদে আছেন ঝড়গ্রামে।
সকল সম্প্রদায় ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে দেশের মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বার্তাও গোটা দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু সহ সকল সম্প্রদায় এখন আশার আলো দেখছেন এতে। সবাই চাইছেন দিদিকে প্রধানমন্ত্রী করতে। ২০১৯ লোকসভা ভোটে বাংলার ৪২ টা সিট দিদিকেই উপহার দিতে তাঁরা তৈরী হচ্ছেন। মানব কল্যাণে মমতা সরকারের নীতিগত অবস্থান বড় প্রশংসার যোগ্য না হলেও বামেদের তুলানায় অনেক ভাল।

গোটা দেশ জুড়ে মোদী বিরোধী যে হাওয়া উঠেছে তাতে বাঙালি হিসেবে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। বিজেপিকে হারাতে বিরোধী জোট এখনই গুরুত্ব দিচ্ছে দেশ জুড়ে সংগঠন সাজাতে। তাই তো রাহুল গান্ধীও চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হলে তঁর কোনও আপত্তি নেই। দেশ জুড়ে এখন অসহিষ্ণুতা যে হারে বৃদ্ধ পেয়েছে তাতে করে দেশের মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠছেন। এর জবাব দিতে দেশের সাধারণ ও সচেতন মানুষ তৈরী হচ্ছেন। ২০১৯ লোকসভা ভোটে তার প্রতিফল দেখতে পাবে দেশবাসী ও কেন্দ্রীয় সরকার।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট