সরকারি হুগলি মাদ্রাসা চালু করতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যসরকার এবং রাজ্য সংখ্যালঘু দফতর। সংবাদপত্রকে এই কথা জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু বিষায়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব ড. পি বি সালিম সাহেব। সংখ্যালঘুদের শিক্ষা প্রসারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বাস্তবিক আন্তরিক। তিনি সংখ্যালঘুদের কল্যাণে প্রতিনিয়ত ভাল কাজ করছেন। সম্প্রতি আমাদের সবাইকেই মুগ্ধ করেছেন তিনি, মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার মহৎ উদ্যোগ নিয়ে।
মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের আরও একটি পালক যোগ হলো মুর্শিদাবাদ জেলায়। সম্প্রতি বাজেট বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ড. পার্থ চট্টপাধ্যায় মুর্শিদাবাদে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার ঘোষণা করেছিলেন।
রাজ্যবাসী হয়ে ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম মা মাটি মানুষের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ড. পার্থ চট্টপাধ্যায়কে। আমরা সত্যি গর্বিত আমাদের কল্যাণে অগ্রদূত মমতাময়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। এবার আশা রাখি শিক্ষা প্রসারে আর পিছিয়ে থাকবে না মুর্শিদাবাদ জেলা।
আমরা দেখেছিলাম সুকৌশলে আমাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিল বিগত বাম সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে অনেকটাই অবসান হচ্ছে সেই চরম বঞ্চনার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপরিচালনা করতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে মুসলিম সমাজের একচেটিয়া ভোট পেয়ে। বিগত সাত বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে সব থেকে অবহেলিত ও বঞ্চিত মুসলিম সম্প্রদায় ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছেন। চাকরি, ভর্তি থেকে বিগত নির্বাচন গুলিতে জনপ্রতিনিধি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছিলাম বাম আমলে কোথাও সংরক্ষণ নীতির ১০০ শতাংশ রোষ্টার মানা হত না। এখনও বামেদের মুখে বড় বড় কথা ও ভাষণ শুনলে আমাদের করুণা হয় তারা মুখে মেকি দরদ দেখিয়ে ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলে মুসলিমদের মন জয় করতো। বাস্তবিক যখন মুসলিমরা বুঝল এবং তাদের পিঠে দেওয়াল ঠেকে গিয়েছিল এর অবসান করতেই তারা জোটবদ্ধ হয়েই দিদিকে দুহাত ভরে ভোট দিয়েছেন এবং জিতিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। ৬১৪ টি সরকারি মাদ্রাসায় ব্যাপক ভাবে শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় পঠন-পাঠন বিঘ্ন হচ্ছিল বাম আমল থেকেই।
প্রাথমিক স্কুলে চাকরি বা অডিটস্ এন্ড অ্যাকাউন্ডস্ অফিসার নিয়গ, সমস্ত সার্ভিস কমিশন, পিএসসি, বিশ্ববিদ্যালয় সহ একাধিক সেক্টর ও অফিসে মুসলিমদের চাকরিতে প্রতিনিধিত্ব ছিল না বললেই চলে। সামন্য ডি গ্রুপের চাকরিতেও ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ কার্যকারি করতে বাম সরকার চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজত্বে এই সাত বছরে প্রতি দফতরে বহু মুসলিমদের কর্মস্থান হওয়ায় সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। বাস্তবিক আমরা প্রতিচি ট্রাস্ট, স্নাপ ও গাইডেস্ন গিল্ডের রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে (পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের অবস্থান) বাম শাসনের থেকে বর্তমান সরকারের আমলে চাকরির ক্ষেত্রে ও সামাজিক ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের কল্যাণে মুখ্যমন্ত্রী অনেক কাজ করেছেন তা উটে এসেছে। রাজ্যের গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাটাই বদলে গেছে। অনিল আয়নের অবসান ঘটেছে। দক্ষ পরিচালকের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। তাই তো আজ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাটাই অনেকটাই বদলে গেছে যারফলে রাজ্যসরকারের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে অনেক নতুন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
এবার দ্রুত গতিতে সরকারি হুগলি মাদ্রাসাকে চালু করতে সরকারের সচিব ড. পি বি সালিম তৎপর হয়েছেন।
আগামীতে বিজিপিকে আটকাতে মুসলিমদের সমর্থন দ্রুত হারে বাড়ছে বলেই বামেরা অনেকেই তলে তলে বিজেপি করছে। এতে আশা রাখি তৃণমূল সরকারকে তারা টলাতে পারবে না। শিক্ষা প্রসারে হুগলি মাদ্রাসা চালু করতে যথাবিহিত উদ্যেগ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনিই তো সংখ্যালঘু মন্ত্রীপরিষদের মূল দায়িত্বে আছেন তাই সবাই এখনও আশার আলো দেখছেন।
তাঁর কাছে সবিনয় আবেদন করেছিলাম মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য। তিনি উদ্যোগ নিয়েই সব ব্যবস্থা করেছেন এবং খুব তাড়াতাড়ি পঠন পাঠন শুরু হবে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আর সেই সঙ্গে দ্রুত সংখ্যালঘুদের গর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুগলি মাদ্রাসায় আধুনিক ভাবে লেখাপড়া চালু হবে। তিনি সঠিক পদক্ষেপ নিলেন এবং এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করলেন। ড. পি বি সালিম সাহেব দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন ইসলামি ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে। ২০০ বছরের পুরানো হুগলি মাদ্রাসা ইসলাম শিক্ষার সঙ্গে আবার আধুনিক শিক্ষা প্রসারে বড় আয়োজনে চালু হচ্ছে। এখান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনায় নতুন করে আলো ছড়াবে হুগলি মাদ্রাসা।
আমরা সেই সঙ্গে আবেদন রাখছি যে জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেশি সেই জেলার ডিএম ও পুলিশসুপারের দায়িত্বে কোনও মুসলিম আধিকারিকে বসাবেন। তাতে মনে হয় মানুষের কল্যাণ হবে। এখন বাস্তবিক ২৩টি জেলার কোথাও কোনও মুসলিম পুলিশ আধিকারিক পুলিশসুপার পদে নেই। একজন ডিএম আছেন। সকল সম্প্রদায় ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে দেশের মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বার্তাও গোটা দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু সহ সকল সম্প্রদায় আশার আলো দেখছেন এতে। দিদিকে প্রধানমন্ত্রী করতে ২০১৯ লোকসভা ভোটে বাংলার ৪২ টা সিট দিদিকেই উপহার দিতে তাঁরা তৈরী হচ্ছেন। মানব কল্যাণে মমতা সরকারের নীতিগত অবস্থান বড় প্রশংসার যোগ্য। তাই গোটা দেশ জুড়ে মোদী বিরোধী যে হাওয়া উঠেছে তাতে বাঙালি হিসেবে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। বিজেপিকে হারাতে বিরোধী জোট এখনই গুরুত্ব দিচ্ছে দেশ জুড়ে সংগঠন সাজাতে। তাই তো রাহুল গান্ধীও চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হলে তঁর কোনও আপত্তি নেই।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক উদার আকাশ।