এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা দু মাস (জুন এবং জুলাই) ধরে চলল বাংলা চলচিত্র প্রদর্শন। স্কটল্যান্ডের মাটিতে এমন প্রয়াস এই প্রথমবার। বাংলা চলচিত্রকে আন্তর্জাতিক দর্শক এর কাছে আরও বেশি করে জনপ্রিয় করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য, সাথে এডিনবরার বাঙালিদের একসাথে বসে বাংলা ছবি দেখার আনন্দ। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে গবেষণারত পোস্টডক্টরেট ড. সুমিত কোনার চার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বাঙালির (তীর্থ, সম্রাট, নীলাঞ্জন ও অনিন্দ্য) সহযোগিতায় প্রতি শুক্রবার সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ সাপ্তাহিক চলচিত্র প্রদর্শন করে।
Hoichoi.tv এর সহযোগিতায় এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে এই চলচিত্র প্রদশনীর আয়োজন হয়। প্রবেশ মূল্য বিহীন একশো জনের এক প্রেক্ষাগৃহে সমবেত হয় এডিনবরায় বসবাসকারী দেশ-বিদেশ থেকে আশা চলচিত্র প্রেমী মানুষ। কৌশিক গাঙ্গুলি’র অপুর পাঁচালি, সত্যজিৎ রায়’র জন অরণ্য, গৌতম ঘোষ এর পদ্মা নদীর মাঝি, সৃজিত মুখার্জি’র চতুষ্কোণ, অনিন্দ্য চ্যাটার্জি’র প্রজাপতি বিস্কুট, বৌদ্ধায়ন মুখার্জি’র প্রথম চলচিত্র তিন কাহন, অরিন্দম শিল এর ঈগলের চোখ ইত্যাদি অনেক ধরনের এবং বিভিন্ন সময়ের চলচিত্রকে তুলে ধরা হয় ইংরেজি সাবটাইটেল সহযোগে। নির্বাক চলচিত্র আশা যাওয়ার মাঝে (পরিচালক আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত) বিদেশি দর্শকরা বিশেষ ভাবে সমাদর করেন।
এছাড়া ছিল বাংলা স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচিত্র এবং ছোটদের জন্য নির্মিত চলচিত্র সন্ধ্যা, যেখানে বাঙালি পরিচালক শ্বেতা ঘোষ (প্রথম ডকুমেন্টারী ACCSEX এর জন্য জাতীয় পুরস্কার প্রাপক) উদ্যোগ নিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন ‘Sangwari Khabariya’ নামক কিশোর কিশোরী দের সংবাদদাতার ভূমিকায় সফল ভাবে অংশগ্রহণ করানোর এক অভিনব প্রচেষ্টার। আয়োজক তীর্থ দাসগুপ্ত সম্প্রতি যুগ্ম ভাবে (সহ পরিচালক অনির্বাণ মিত্র) পরিচালনা করেছেন ডকুমেন্টারি চলচিত্র A Ray of Light যেটি সেপ্টেম্বরে এ বিনা প্রবেশ মুল্যে দেখানো হবে। সত্যজিৎ রায় পরবর্তী যুগে বাংলা চলচিত্র এর আকর্ষণ বিদেশে অনেক কমেছে; সেই হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফিরিয়ে আনার এটা এক সৎ প্রচেষ্টা। আয়োজকদের মতে এই প্রচেষ্টা অনেক্ টাই সফল; এডিনবরার বিদেশি দর্শকরা বুঝেছে যে ভারতীয় চলচিত্র মানে শুধুই বলিউড নয়। বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে এই অভিনব প্রয়াস সিনেমাপ্রেমীদের মুগ্ধ করে।