পণের বাকি টাকা না পাওয়ায় স্ত্রীকে মোটরবাইক থেকে ফেলে দিয়ে শরীরের উপর দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে নিয়ে এবং ব্যাপক মারধর করে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ থানার বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের মন্ডলপাড়া এলাকায়। মৃতার নাম সারজানা খাতুন (২২)। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামী সামিদুর রহমান, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দেওরের বিরুদ্ধে শারীরিক অত্যাচার ও খুন করার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে রায়গঞ্জ থানার কৃষ্ণপুর ঘোড়াডাঙি এলাকার বাসিন্দা আবদুল জলিলের ছেলে সামিদুর রহমানের সাথে বিয়ে হয় বড় বরুয়া গ্রামের মন্ডলপাড়ার বাসিন্দা বদির মহম্মদের মেয়ে সারজানা খাতুনের। বিয়ের সময় পণ হিসেবে ৩ লক্ষ টাকা নগদ ও একটি মোটরবাইক দাবি করে পাত্র পক্ষ। দুলক্ষ টাকা ও মোটরবাইকটি দিয়ে দেওয়া হয়। ১ লক্ষ টাকা বাকি থাকে। পণের বাকি এক লক্ষ টাকার জন্য বিয়ের পরদিন থেকেই গৃহবধূ সারজানার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে স্বামী সামিদুরসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন এমনটাই অভিযোগ মৃতা গৃহবধূ সারজানার পরিবারের। বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য একাধিকবার সারজানার পরিবার সামিদুরের বাড়িতেও যায়। অভিযোগ, মিমাংসার বদলে পালটা মারধর হুমকি দেয় সামিদুরের পরিবারের লোকেরা। এরপর গৃহবধূ সারজানা শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি মন্ডলপাড়ায় চলে আসে। শনিবার বিকেলে স্বামী সামিদুর রহমান সারজানার বাড়িতে এসে তাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে মোটরবাইকে বসিয়ে নিয়ে যায়। অভিযোগ, বড় বড়ুয়া এলাকায় নিয়ে যাওয়ার পর সামিদুর স্ত্রী সারজানাকে মোটরবাইক থেকে ফেলে দিয়ে তার শরীরের উপর দিয়ে মোটরবাইক চাপা দেয়।
এরপর সারজানাকে ব্যাপক মারধর করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তার ধারে অচৈতন্য রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। রবিবার সকালে গৃহবধূ সারজানা খাতুনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় রায়গঞ্জের বড় বড়ুয়া মন্ডলপাড়া এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। মৃতা গৃহবধূ সারজানার আত্মীয় আজিজুর রহমানের অভিযোগ, পণের টাকা না পেয়েই সারজানার উপর শারীরিক অত্যাচার চালাত স্বামী সামিদুর রহমানসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শনিবার সারজানাকে মোটরবাইক থেকে ফেলে দিয়ে চাকায় পিষে ও ব্যাপক মারধর করে মেরে ফেলে স্বামী সামিদুর রহমান। মৃতা গৃহবধূ সারজানা খাতুনের বাবা বদির মহম্মদ সামিদুর রহমান, মেয়ের শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দেওরের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পাশাপাশি পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক মৃতার স্বামী সামিদুর রহমানসহ শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও দেওর।