পুঁথিগত বিদ্যায় পিছিয়ে থাকলেও নতুন নতুন যন্ত্র আবিষ্কারের নেশায় মশগুল বছর চোদ্দর অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র প্রমিত সাহা। ব্যাটারিচালিত টু সিটারের চার চাকার গাড়ি তৈরি করে চমক দিয়েছে উদ্ভাবনী শক্তির জগতে। পড়াশুনার জন্য বাড়িতে ও স্কুলে বকাঝকা খাওয়া ছেলে আজ উত্তর দিনাজপুর জেলার কাছে গর্ব।প্রমিতের আবিষ্কৃত গাড়িতে দুজন বসতে পারবেন। গাড়িটি ঘন্টায় ৪০ কিমি বেগে পাড়িও দেবে।
রায়গঞ্জ শহরের অশোকপল্লীর বাসিন্দা বিপ্লব সাহার পুত্র সন্তান প্রমিতের পড়াশুনার থেকে বেশী মনযোগ ছিল পরিত্যক্ত জিনিস দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করার। রায়গঞ্জের একটি বেসরকারি ইংরাজী মাধ্যম স্কুলের ছাত্র হলেও পড়াশুনার মানে তার স্থান থাকে পেছনের বেঞ্চেই। এরজন্য স্কুল শিক্ষক থেকে বাড়িতে বাবা মায়ের কাছে ” ভালো ছেলে ” এই সুনাম অর্জন করতে পারেনি সে। কিন্তু নতুন কিছু আবিষ্কারের নেশাতেই বুঁদ হয়ে থাকত প্রমিত। গতমাসেই গগুলে সার্চ করতে করতে ব্যাটারিচালিত গাড়ি তৈরির চিন্তাভাবনা মাথায় আসে তার। কিন্তু ব্যাটারিচালিত গাড়ি তৈরি করতে তো অনেক টাকারই প্রয়োজন। বাবা বিপ্লব সাহার কাছে বায়না ধরে গাড়ি তৈরি করবে।
শেষমেশ বিপ্লব বাবু ২০ হাজার টাকা দেন ছেলে প্রমিতকে। গাড়ি তৈরির কাজে নেমে পরে সে। রায়গঞ্জ শহরের শিলিগুড়ি মোড়ে গাড়ি মেরামতের গ্যারেজগুলি থেকে পুরানো গাড়ির যন্ত্রাংশ, টায়ার সংগ্রহ করে দুমাসের প্রচেষ্টায় বানিয়ে ফেলে তার স্বপ্নের ব্যাটারিচালিত চার চাকার গাড়ি। আপাতত প্রমিতের বানানো গাড়িতে দুজন বসতে পারবেন, তবে কিছু সংস্কার করে সেটা ফোর সীটের করা যাবে। ব্যাটারিচালিত এই খুদে ইঞ্জিনিয়ারের গাড়ি একবার ফুলচার্জ করলে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলবে। প্রমিত জানায়, বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবনা ছিল নিজে একটা গাড়ি তৈরি করবো।
সেইমতো বাবার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে গ্যারেজগুলি থেকে পুরানো যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে দূষনমুক্ত পরিবেশ বান্ধব এই ব্যাটারিচালিত গাড়িটি তৈরি করতে পেরেছি। তার কথায় গাড়ীটিতে নতুন ব্যাটারি লাগাতে পারলে এর গতিবেগের আরও বৃদ্ধি ঘটবে। তার ইচ্ছে নিজের আবিষ্কৃত এই গাড়িতে চেপেই সে স্কুলে যাবে। বাবা বিপ্লব সাহা খুশী ছেলের এই অভাবনীয় কীর্তি দেখে। তবে ছেলে প্রমিতকে ভালো করে পড়াশুনা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তৈরি করা গাড়িতে প্রমিতের স্কুল যাওয়ার আবদার মেনে নেননি বিপ্লব বাবু। তবে অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র প্রমিতের এই আবিষ্কার সকলকেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে।