“কারো পৌষ মাস আর কারো সর্বনাশ”একথাটি যে হারে হারে সত্যি তা উত্তর দিনাজপুরের ফলের বাজার গুলিতে ঢুকলেই বোঝা যাবে। চারিদিকে যখন নিপা ভাইরাসের আতঙ্কে মরসুমের ফলের থেকেই দূরে দূরে থাকছেন সাধারণ সুশিক্ষিত মানুষ গুলো । ফল বাজারে ঢুকলেই ফল কিনতে ভয় পাচ্ছেন । তখন অন্য দিকে নিপার আতঙ্ক থেকে দূরে থেকে এই মুরসুমে ভালোই আম লিচুর দিব্যি মজা নিয়ে চলছেন কিছু শ্রেণীর মানুষ।তাদের বক্তব্য নিপা কি তা বুঝি না।
তবে নিপার জন্য আম লিচুর দাম সস্তায় পাচ্ছি তাই মন ভরে আম খেতে পারছি। উল্লেখ্য ফলের মরসুমের শুরুতেই নিপা ভাইরাসের দৌলতে মরতে বসেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার বহু ফল বিক্রেতারা ।মরসুমের শুরুতেই আম লিচু যেভাবে প্রতি বছর বাজিমাত করে নিতো পুরো বাজার। নিপা ভাইরাসের আশঙ্কায় ফলের রাজা ও রানীদের থেকে দূরেই থাকছেন সকলে।ফলে মুখ ভার ফল বিক্রেতাদের । রোজার মাসে ফলের চাহিদা বেশি থাকে বলে ফলের দামও চড়া হারে বেড়ে চলছিল।ফলে বেশ ভালই লাভ হচ্ছিল ফল বিক্রেতা দের।
এক ফলের ব্যবসায়ী রতন দাস জানান, সোশ্যাল মিডিয়া, সংবাদপত্র এবং টিভিতে নিপা ভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর ছড়াচ্ছে।
ফলে বিক্রি কমছে মূলত লিচু এবং আমের। তিনি বলেন, তাই আমের দাম ও একটু কমাতে হচ্ছে। লিচুর দাম যদিও একই রেখেছি।’
ফলে এখন মুখ ভার করে রয়েছেন ফল ব্যবসায়ীরা । কয়েক দিন আগেই যে আম ৫০ টাকা ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল এখন তা নিপা ভাইরাসের কবলে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে ফল বিক্রেতাদের।
তাও আবার বিক্রির পরিমাণ ও কম।উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ,কালিয়াগঞ্জ বাজারে রানাঘাটের হিমসাগর আম স্বাদে ও গন্ধে যদিও বা বাজার ভরিয়ে রেখেছে।তবে আতঙ্কেই স্বাদের প্রিয আম থেকে দূরে দূরেই থাকছেন সাধারণ সুশিক্ষিত মানুষ। তবে শুধু আম ও লিচু নয় ফলের বাজার ও যেন মন্দা চলছে এমনি বক্তব্য ফল ব্যবসায়ীদের । যদিও বা নিপা ভাইরাস ফল থেকেই ছড়াচ্ছে তা সপষ্ট এখন ও জানা যায়নি ।তবে ফল খেলেই যে বিপদ এমন ধারণায় বহু মানুষই দূরে দূরেই থাকছেন ফল থেকে। কালিয়াগঞ্জের আরেক ফল ব্যবসায়ী জানান কালিয়াগঞ্জে প্রতিবছর ব্যাপক হারে আম বিক্রি হয।যদিও বা হিমসাগর ও রানি প্রজাতির বহু আম কালিয়াগঞ্জ বাজারে ঢুকে পড়েছে । কিছু দিন পর থেকেই আসবে হিমসাগর,ল্যাঙডা ,ফজলি,গোপালভোগ ।
তবে তার আগেই নিপা ভাইরাসের আতঙ্কে মন্দা চলছে ফল বাজার । ফলে ক্ষোভ ফল বিক্রেতাদের। এই ব্যাপারে কালিয়াগঞ্জ এর বাসিন্দা তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কিছুদিন ধরে ভাগাড়ের মাংস নিয়ে কাণ্ড হল। মাংস খাওয়া বন্ধ করলাম। এখন আবার দেখছি, নিপা ভাইরাস ফলের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তাই ফল কিনতেও ভয পাচ্ছি । আর ফল কিনলেও তা বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে নিচ্ছি । কেন এমন বাছাই? তপন বাবু বলেন, ‘‘বাদুড়ে খাওয়া ফল কি না তা দেখে কিনছি। ভয়ে রয়েছি।’’ ক্রেতাদের এ হেন ভয়ের প্রভাব যে কতটা তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন ফল ব্যবসায়ীরা । ব্যবসায়ীরা জানান ‘‘লিচু আর আম তুলেছি অনেকটা পরিমাণে। কিন্তু কিছুদিন ধরে বাজারটা দুম করে পড়ে গেল।’’ একই অবস্থা ফুটপাথের ধারের লিচু-আমের ব্যবসায়ীদের।
তবে এক শ্রেণীর মানুষ যদিও বা নিপার আতঙ্কে দিন গুনছে । তবে কিছু গ্রাম্য মানুষ নিপা আতঙ্ক থেকে দূরে থেকে আম লিচুর স্বাদে ভালোই মজা নিচ্ছেন । নিপা আতঙ্কে থেকে দূরে থেকে প্রতিদিন আম কিনে ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন শংকর কুণ্ডু তিনি বলেন নিপা কি তা বুঝি নে বাপু।তবে নিপা নিপা করে বাজার গুলোতে আমের দাম ও কম পাচ্ছি । যে আম আগে দাম চড়া থাকায় কিনতে পারতাম না। আজ নিপার জন্য কম দামেই পাচ্ছি । তাই নিপার আতঙ্ক যুগ যুগ জিও। নিপার সুযোগে আমাদের মতো গরীব মানুষ গুলো আম লিচু সব সস্তায পাচ্ছি । তবে একদিকে যখন নিপা ভাইরাসের আতঙ্কে সমাজের শিক্ষিত মানুষ গুলো আম লিচু থেকে দূরে দূরে থাকছেন। তখন অন্য দিক শশিকলা দেবীর মতো গরীব মানুষগুলো সেই সুযোগে কম দামে আম লিচুর স্বাদ পাচ্ছেন । তাই তাদের কাছে এখন নিপা যুগ যুগ জিও।