একজন কয়েদীর কথা জানি,
কয়েদী নাম্বার ৪৬৬৬৪।
২৭ বছর জেলে থাকার পরেও উনি নোবেল শান্তি পুরষ্কার জিতেছেন।
তিনি নেলসন মেন্ডেলা।
আরেক পিতৃপরিচয়হীন যুবকের কথা জানি। থাকার কোনো ঘর ছিল না তাঁর।
বন্ধুদের ঘরের মেঝেতে ঘুমাতেন। ব্যবহৃত কোকের বোতল ফেরত দিয়ে পাঁচ সেন্ট করে আয় করতেন, যেটা দিয়ে খাবার কিনতেন। প্রতি রবিবার রাতে তিনি সাত মাইল হেঁটে ISCON মন্দিরে যেতেন শুধু একবেলা ভালো খাবার খাওয়ার জন্য।
তিনি অ্যাপল এবং পিক্সার অ্যানিমেশন এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও- স্টিভ জোবস।
আর এক যুবকের নাম জানি,
মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম। তাঁকে বলা হয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সফল ড্রপ আউট। স্যাট পরীক্ষায় ১৬০০ নম্বরে ১৫৯০ পান তিনি। কিন্তু কম্পিউটার সফটওয়্যার তৈরির নেশায় তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাম কাটান। ড্রপ আউট হওয়ার ৩২ বছর পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন তিনি।
তিনি বিল গেটস।
আর একজনের কথা জানি যিনি ১১ বছর বয়সে অনাথ হন। ১২ বছর বয়সে ঘর থেকে পালিয়ে যান। হতাশ হয়ে ১৯ বছর বয়সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অনেক বিখ্যাত বইয়ের লেখক তিনি, তার মধ্যে “আমার বিশ্ববিদ্যালয়” একটি। যদিও তিনি কোনদিন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সুযোগ পাননি।
তিনি বিখ্যাত লেখক, নাট্যকার আর রাজনীতিবিদ ম্যাক্সিম গোর্কি।
আর একজন বাবার সাথে মুদি দোকান করতো। পরিবারের এতই অভাব ছিলো যে- স্কুল পর্যন্ত পড়েই তাঁকে থেমে যেতে
হয়েছিলো। সেই ব্যাক্তিই একসময় হয়ে ওঠেন বিরাট বিপ্লবী নেতা।
তিনি চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুং।
অভাবের তাড়ানায় কুলিগিরি করতেন। একদিন বাসের কন্ডাক্টরের কাজের জন্য গেলে, তাঁকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। যুবকটি অংকে পারদর্শী নয় বলে বাসের কন্ডাক্টর ও হতে পারেনি। পরবর্তীতে সে-ই হয় ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী। নাম জন মেজর।
আর এক ছেলের, বাবা-মা এতই গরিব ছিলেন যে, তাঁর জন্মের পর নাম রেজিস্ট্রি করতেই দু’দিন দেরি হয়। কে জানেন? সে-ই আজকের ফুটবল কিংবদন্তী! নাম ক্রিশ্চয়ানো রোনাল্ডো।
বাবা ছিলেন জেলে। ছেলেকে সাথে করে বাবা মাছ ধরতেন। কারন তাঁর অন্যকোন উপায় ছিলনা।
সেই জেলের ছেলে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট সুপারস্টার সনৎ জয়সূর্য।
পড়াশোনায় মারাত্মক দুর্বল ছিলেন তিনি। কোন কিছু মনে থাকত না। ক্লাসের শেষ বেঞ্চে বসে থাকতেন। ফেল করেছেন বারবার। ক্লার্কের চাকরিও করছেন তিনি। পরে পুরো পৃথিবীকে অবাক করেছেন তিনি তাঁর থিওরি অফ রিলেটিভিটি দিয়ে। নোবেল ও জিতেছেন তিনি। তার নাম আলবার্ট আইনস্টাইন।
ক্লাসের সবচেয়ে দুর্বল ছাত্র ছিলেন তিনি। স্কুল থেকে বহিস্কারও করা হয়েছিল তাঁকে। পৃথিবীকে তিনি আলোকিত করেছেন তাঁর আবিষ্কার দিয়ে। তাঁর নাম টমাস আলভা এডিসন।
উল্টো করে লিখতেন তিনি শব্দগুলোকে। পড়ালেখায় একদম শূন্য। উড়োজাহাজ আবিস্কারের ৪০০ বছর আগে তিনি উড়োজাহাজের মডেল এঁকে গেছেন। তিনি লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্জি।
পরীক্ষায় তিনি সবসময় ফেল। ২২টা একাডেমিক পুরষ্কার জিতেছেন সারা জীবনে। তিনি মিকি মাউস, ডোনাল্ড ডাক-এর জন্মদাতা। মিকি মউসের গলার স্বর তাঁর নিজের।তিনি ওয়াল্ট ডিজনি।
শব্দের খেলা তিনি বুঝতেন না। 7 নাম্বার কে তিনি বলতেন উল্টো নাক। এই স্প্যানিশ ভদ্রলোক একজন কবি, লেখক, পেইন্টার, কেমিস্ট, স্টেজ ডিজাইনার, ভাস্কর। তিনি পাবলো পিকাসো।
পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষই Unique, তার ভাবনাগুলি তার মতোই। সবাই যা পারে, আমাকেও তা-ই পারতে হবে, এমন কিছুতো নয়। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা দিয়ে নিজেকে প্রমান করতে হবে কেন? আমাদের সমস্যাটা ওখানেই। আমাদের প্রত্যেক ঘরেঘরে Toppers আর Rankers চাই। সবাইকেই ডাক্তার, Engineer, ব্যারিস্টার, ম্যাজিস্ট্রেট…… হতেই হবে!
আঙ্গুলকে টেনে লম্বা করতেই হবে, সে যেভাবেই হোক……দরকার হলে আঙ্গুল যদি ভেঙ্গে যায় ,যাক না কেন!!!
“পৃথিবীতে সবাই জিনিয়াস, কিন্তু আপনি যদি একটি মাছকে তালগাছ বেয়ে ওঠার ক্ষমতা দিয়ে বিচার করেন, তবে সে সারাজীবন নিজেকে অপদার্থই ভেবে যাবে”আলবার্ট আইনস্টাইন।