বিদেশের সুগন্ধি তুলাইপাঁঞ্জি চালের উৎপাদন বৃদ্ধির গবেষণা করে চলছেন গ্রামের ছেলে সুভাষ


রবিবার,০১/০৪/২০১৮
548

পিয়া গুপ্তা ,রায়গঞ্জ:

উত্তর দিনাজপুরের সহজপাচ্য ধবধবে অসম্ভব সুন্দর গন্ধযুক্ত তুলাইপাঞ্জি বিশ্ব জুড়ে প্রতি বার ই খ্যাতি অর্জন করে এসেছে।

উত্তরদিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের ছোট্ট একটি গ্রাম ডালিমগায়ের উত্তর কাচনা গ্রাম।সেই গ্রামের ছেলে অধ্যাপক ডঃসুভাষ চন্দ্র রায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জেলার সুগন্ধি তুলাইপঞ্জি চালের গুণমান ঠিকঠাক রেখে তুলাই ধান নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন ।তিনি তার গবেষণার মাধ্যমে বর্তমানের উৎপাদিত তুলাইপাঞ্জির পরিমাণ দ্বিগুন থেকে কিভাবে চার গুন বৃদ্ধি করা যায় তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ।

শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলা নয় উত্তরবঙ্গের চাষীরা ও অবাক হয়ে গেছেন তার প্রচেষ্টা দেখে ।উত্তরদিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের ডালিম গাঁয়ের ছেলে সুভাষ রায়ের বাবা ছিলেন ডালিম গাঁয়ের একজন বড় কৃষক।সেই সুবাদে সুভাসবাবুর তুলাইপাঁঞ্জি ধানের সাথে ছিল নারীর টান। তখন থেকেই মনে মনে স্বপ্ন ছিল যদি কোনদিন উদ্ভিদ বিদ্যা নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ে পান তাহলে জেলার তুলাই ধান নিয়ে গবেষণা করবেন। জেলার চাষীদের স্বার্থে এই ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করাই তার লক্ষ ।

ডঃ সুভাষ চন্দ্র রায় কালিয়াগঞ্জ লক্ষীপুর মহিমচন্দ্র বিদ্যাভবনের পর রায়গঞ্জ কলেজ থেকে বোটানিতে সাম্মানিক নিয়ে বি .এস .সি পাস করে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বোটানিতে এম .এস. সি.তে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।পরবর্তীতে বায়ো টেকনোলজিতে এম টেক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সুভাষ রায় রায়।এর পর সুভাস রায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ .ডি করেন।অধ্যাপক ডঃ সুভাস রায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিদ্যার অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। ইচ্ছা থাকলে যে উপায় হয তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন কালিয়াগঞ্জের ডালিম গাঁয়ের ছেলে সুভাষ রায় চন্দ্র রায় ।তিনি জেলার তুলাই ধানের গুণমান বজায় রেখে উৎপাদন বাড়ানোর গবেষণা করবার সুযোগ পান ফিলিপিন্সের ম্যানিলার আই .আর .আর .আই এর বিশ্ব ধান গবেষনা কেন্দ্রে।

সেখানে সুভাস বাবু ধানের প্রজনন বিদ্যার গবেষণা করেন।গবেষণা লব্ধ শিক্ষা ও প্রযুক্তিগত বিদ্যা প্রয়োগ করে প্রজননের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির ধানের সাথে প্রজনন ঘটিয়ে তিনি তুলাইপাঞ্জি ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করার ক্ষেত্র সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন। যেমন আই আর-৬৪র সাথেফ তুলাইপঞ্জির প্রজনন ঘটিয়ে গুণমান স্বাদ সুগন্ধী বজায় রেখে ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে সুবোধ বাবু দাবি করেন।

তিনি বলেন বর্তমানে তুলাইপাঁজি ধানের যে পরিমান উৎপাদন হয় তার চারগুন উৎপাদন সম্ভব তার গবেষণার মাধ্যমে তা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেন। অধ্যাপক ডঃ সুভাষ রায় বলেন বাসমতি চালের সাথে আমাদের জেলার তুলাইপাঁজি চাল প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সহজেই যেতে পারে তার জন্য আমাদের সবার উদ্যোগ প্রয়োজন। আধ্যাপক ডঃ সুভাষ রায় বিদেশে গিয়ে শুধুমাত্র তুলাই পাঁজি ধানের গবেষণা করেই ক্ষান্ত হননি।তিনি ইতিমধ্যেই ল্যাম্বার্ট একাডেমি পাবলিশিং থেকে তুলাইপাঁজি ধানের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বই প্রকাশ করেছেন যার নাম মলেকুলার ব্রিডিং এন্ড জেনেটিক রিসোর্সেস অফ তুলাইপাঁজি রাইস।

যে বইটি উত্তরদিনাজপুর জেলার সুগন্ধি তুলাইপাঁজি ধানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের প্রজন্মদের কাছে একটি দলিল হয়ে থাকবে বলেই তার বিশ্বাস।অধ্যাপক ডঃ সুভাষ রায় বলেন পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী উত্তরদিনাজপুর তুলাইপাঁজি সুগন্ধি চাল বিশ্বের বাজারে ছড়িয়ে দিতে তিনি যে সমস্ত উদ্যোগ নিছেন সেইজন্য মুখ্য মন্ত্রীর এই প্রচেষ্টাকে তিনি কুর্নিশ জানান। অধ্যাপক ডঃ সুভাষ রায় বলেন ২০১৭ সালের ২২শে জুন উত্তর দিনাজপুর জেলার সুগন্ধি তুলাই পাঁজি চাল কে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যগ নিয়ে জি আই (জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন) নথিভুক্ত করানো হয়।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট