সুস্মিতা সরকার, বাংলা এক্সপ্রেস; বাস ছাড়ার সময় থেকেই দেখেছিলেন চালকের বাঁ হাতে স্টিয়ারিং। এক হাতেই বাস চালাচ্ছেন তিনি আর মোবাইল ফোনে কথা বলে যাচ্ছেন একটানা। বাস চালকের পিছনে ছোট্ট সীটে বসে থাকা সাধন মন্ডল প্রতিবাদ করেন, “ও মশাই, গাড়ি চালাতে চালাতে এতবার ফোন করছেন কেন?”। চালক সেন্টু শেখ সতর্ক হওয়ার পরিবর্তে ক্রুদ্ধ হয়ে উত্তর দেন “কথা বলছি তো কি হয়েছে?”। বাস চালকের ধমকে নিশ্চুপ হয়ে যান সাধন বিশ্বাস, কিন্তু তিনি নিশ্চিত ছিলেন বিপদ অনিবার্য।
ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় সকাল ৭:১৫মিনিট। বহরমপুর – ডোমকল রাজ্য সড়কের সোনা রত্নাকর বিলের উপর ব্রীজের ডানদিকের রেলিং ভেঙে বাসটি নেমে গেল প্রায় ৩৫ফুট নীচে। বিলটির গভীরতা প্রায় ৩৫ফুট, সেখানেই খাঁড়া ভাবে আটকে যায় বাসটি কাঁদায়। চালকের মৃত্যু হলেও প্রাণে বেঁচে যান সাধন মন্ডল। মেডিক্যাল কলেজের বেড়ে শুয়ে সাধন বাবু বলেন, “আর একটু প্রতিবাদ করলে হয়তো এত মানুষকে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হতো না। উপরন্তু দুর্ঘটনায় প্রায় ৭ঘন্টা পর প্রকৃত অর্থে উদ্ধার কার্য শুরু হওয়ায় মৃত ব্যক্তিদের আত্মীয় পরিজন ও এলাকাবাসীর ক্ষোভ উপচে পড়ে বিলের পাড়ে দাঁড়িয়েই। সোমবার প্রায় বিকাল চারটায় উদ্ধার কার্যে নেমে ৩৪জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “৩৪ জনের দেহ শনাক্ত করে ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে দেহগুলি রাতেই তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে”।