কাজী হাফিজুল ,ভাঙড়ঃ গত একবছর ধরে পাওয়ার গ্রিড নিয়ে বারে বারে উত্তেজনা ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙড়ে। ভাঙড়ের কাশিপুর থানার অন্তর্গত খামারআইট, মাছিভাঙা, টোনা, গাজীপুর এলাকায় গত একবছর ধরেই কার্যত জমি আন্দোলনকারীদের সাথে কখনো শাসকদলের তো কখনো পুলিশ প্রশাসনের সাথে সঙ্ঘাত হয়েছে। গত ১৭ই জানুয়ারি জমি আন্দোলনকারীরা পুলিশকে মারধর করে একের পর এক পুলিশ গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন লাগিয়ে দেন। অন্যদিকে দুইপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় দুই গ্রামবাসীর। এই ঘটনার পর একাধিকবার উত্তপ্ত হয় ভাঙড়। গত বৃহস্পতিবার ভাঙড়ে একটি বাইক মিছিল করেন জমি আন্দোলনকারীরা।
সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় ভাঙড়ের অনন্তপুরে। একাধিক গাড়ি ও মোটর বাইকে আগুন ও লাগিয়ে দেওয়া হয়। এলাকায় চলে ব্যাপক বোমাবাজী। ঘটনার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শুক্রবারই ভাঙড়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সকল নেতৃত্বকে নবান্নে ডেকে পাঠানো হয়। সেখান থেকেই শনিবার ভাঙড়ে সকলকে একসাথে নিয়ে শান্তি মিছিল করতে নির্দেশ দেয় দলের হাই কম্যান্ড। অন্যদিকে শুক্রবারই জমি কমিটির মিছিলে হামলা চালানোর প্রতিবাদে বকডোবা থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত মিছিল করে জমি কমিটি।
পাল্টা দলের নির্দেশ মত, শনিবার বিকেল তিনটেয় কাশিপুর থানার সামনে থেকে অনন্তপুর পর্যন্ত মিছিল করে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতারা। মিছিলে ছিলেন রেজ্জাক মোল্লা, কাইজার আহমেদ, আরাবুল ইসলাম সহ ভাঙড়ের সমস্ত শ্রেণীর তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার মিছিলের পর অনন্তপুরে ছোট একটি পথসভা ও করে তৃণমূল নেতারা। সেখানে রেজ্জাক মোল্লা, আরাবুল, কাইজাররা আগামী দিনে ভাঙড়ে শান্তি ফেরাবার লক্ষ্যে একে অপরের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার কথা ও বলেন। অন্যদিকে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড চালুর বিষয়ে সমস্ত সাধারণ মানুষ ও চাষিদের বোঝাবার জন্য একাধিক সভা করার কথা ও ঘোষণা করা হয়। অপরপক্ষে শুক্রবারই নবান্নে ভাঙড়ের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের চেকের মাধ্যমে ক্ষতিপুরন দেওয়ার কথা ও আলোচনা করা হয়।
ভাঙড়ের বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা বলেন, “ পাওয়ার গ্রিড হবেই। তার জন্য যে সমস্ত চাষিদের ক্ষতি হয়েছে, যাদের জমির উপর দিয়ে তার গিয়েছে তাদের জন্য সরকার ক্ষতিপুরনের ব্যবস্থা করবে। তবে পাওয়ার গ্রিড না হলে উন্নয়ন হবে না। সেই কারনে যেভাবেই হোক পাওয়ার গ্রিড চালু হবে। আমরা আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই পাওয়ার গ্রিড চালু করব”। নেতারা ভাঙড়ে শান্তি মিছিল করলেন ঠিক তার পরেই পাওয়ার গ্রিড লাগোয়া খামারআইট গ্রামে সাংবাদিক বৈঠক করে আগামীদিনে কিভাবে এই পাওয়ার গ্রিড আন্দোলন হবে সে বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন অলীক চক্রবর্তী। অলীক চক্রবর্তী জানান, পাওয়ার গ্রিড বন্ধ না হলে তাদের আন্দোলন আরও জোরদার হবে। শাসক দল বা প্রশাসন যতই ভয় দেখান না কেন এই আন্দোলন থেকে তারা কিছুতেই সরছেন না।