সুস্মিতা সরকার: কেউ বলছেন ডেঙ্গু, কেউ বা নাম দিচ্ছেন অজানা জ্বর। যে, যে নামেই ডাকুক না কেন এ যেন জেলা জুড়ে এক মৃত্যু মিছিল! মৃতের সংখ্যার এখনও পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি হিসাবের বিস্তর ফারাক। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মৃত ও আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে, এখনও পর্যন্ত শুধু মাত্র উত্তর ২৪ পরগণায় তা ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগণায় বনগাঁ, বসিরহাট, দেগঙ্গা ব্লক থেকে মৃত্যুর খবর এসেছে তুলনামূলক ভাবে বেশি। সেখান থেকে প্রতিনিয়ত দু-চার জন মৃত্যুর সংবাদ এসেই চলেছে। ইতিমধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে দেগঙ্গায়, মৃত ব্যক্তিরা হলেন শাফিকুল আলি মন্ডল(৪৫), আচিয়া বিবি(৫৫), নুরজাহান বেগম (৭০)।
অজানা জ্বর বা ডেঙ্গুর আক্রমণ হাবড়া এলাকায় কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ আনা গিয়েছে ইতিমধ্যে এবং সর্বস্তর থেকেই দেগঙ্গার অবস্থার মোকাবিলা করা হচ্ছে এমনটাই দাবি করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। এই আকস্মিক ভাবে জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বেড়ে চলেছে চিকিৎসা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। বেশ কিছু স্থানে ফ্রী-মেডিক্যাল ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হলেও তা যথেষ্ট নয় বলেই দাবি করেছেন কিছু সংখ্যক মানুষ। সরকারিভাবে করা টেস্টের রিপোর্ট হাতে আসতে বেশ দেরি হয়ে যাচ্ছে এমতাবস্থায় যথাপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে অনেকেই মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন কিছু মৃত ব্যক্তির পরিবার।
গত সপ্তাহে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে ব্লক ও জেলার সদর হাসপাতাল গুলোতে রোগীদেরকে জায়গা পযর্ন্ত দিতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায় প্রয়োজন মেডিক্যাল ক্যাম্প গুলোর উপর আর ও বেশি জোর দেওয়া, জল নিকাশি ব্যবস্থা ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার উপর নজরদারি, মশার উপদ্রব থেকে নিস্তার পাওয়ার সঠিক উপায় বের করা এবং সর্বোপরি প্রাথমিক ও ঘরোয়া পদ্ধতিতে কি ভাবে ডেঙ্গুর চিকিৎসা করা সম্ভব তা জনসাধারণের মধ্যে বেশি করে প্রচার করা।
সরকার ও জনগণের যৌথ প্রচেষ্টায় আগামী দিনে কোনো নিরিহ মানুষকে ডেঙ্গুর কবলে প্রাণ হারাতে হবে না এমনটাই আশা করা যায়।