সালাম মোল্লা, উত্তর ২৪ পরগনা, বাংলা এক্সপ্রেস: পাটের আঁশ থেকে তৈরী হয় নানা প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি। তাই পাট পচিয়ে পাটের আঁশ ছাড়াতে ও বাজারে বিক্রি করতে ব্যস্ত পাটচাষীরা। কিন্তু আঁশ ছাড়িয়ে পড়ে থাকে পাঠকাঠি। না ছিল তার মর্যাদা, না ছিল তার গুরুত্ব। তাই হয সেগুলি পুড়িয়ে নষ্ট করা হয না হয অকারণে পড়ে পচে নষ্ট হয।
তবে সুখবর হল এবার থেকে ওই অপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে তৈরী হবে চারকোল। তাই সব থেকে বেশি লাভবান হবে এ রাজ্যের পাটচাষীরা। কারণ দেশের মোট ৮০% পাট চাষ হয এ রাজ্যে। তাই পাটকাঠি থেকে চারকোল উৎপন্ন হলে এ রাজ্যের চাষীদের অনেক বেশি লাভ হবে।
জানুন কি সেই চারকোল। এবং কি কাজে লাগে ওই চারকোল। দাঁতের মাজন, মুখের প্রসাধন, কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ, জল প্রতিষেধক যন্ত্র, এবং শুকনো কালি তৈরী করতে চারকোলের ব্যাপক চাহিদা। এর চাহিদা ও বিস্তৃত। ভারত ছাড়া চিন, জাপান, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকাতে চাহিদা আছে। তবে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এই কাজে নেমে পড়েছে। আর মূলত এটাই দেখে বিশ্ব বাজারে পা রাখতে চাইছে ভারত। সম্প্রতি ন্যাশনাল জুট বোর্ডের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরির চুক্তি হয়েছে। পাটকাঠি থেকে কিভাবে উন্নত মানের চারকোল তৈরী করা যায়। এর জন্য কি ধরনের প্রযুক্তি লাগবে, কেমন কারখানা হবে তা ঠিক করবে তা ঠিক করবে ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি।
জানা গেছে ২০১৮ সালের গোড়ায় বেসরকারী ভাবে কয়েকটি ছোট বড় কারখানা করা হবে।
কি ভাবে মেলে চারকোল ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন একটি পাট গাছ থেকে ১০% মতো কাঁচা পাট পাওয়া যায়। বাকি ৯০% পাটকাঠি। প্রযুক্তির মাধ্যমে এই কাঠি পুড়িয়ে তৈরী হয় চারকোল। পাট কর্তারা জানান পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ছয় লক্ষ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। এই এক হেক্টর জমি থেকে ২০টন পাটকাঠি পাওয়া যায়। সুতরাং ওই পাটকাঠির মাত্র ৫% কাজে লাগাতে পারলেই প্রচুর চারকোল উৎপন্ন হবে। তাই পাট আঁশের সাথে সাথে এবার পাটকাঠির চাহিদা ও আকাশ ছোঁয়া হয়ে উঠবে এমনটাই আশা করা যাচ্ছে।