পরিতোষ বর্মণঃ জলসা শুনতে গিয়ে প্রতিবেশী যুবকদের হাতে ধর্ষণের শিকার হলো তিন কিশোরী। বিষয়টি মিটমাট করিয়ে নেওয়ার জন্য সালিশি সভার প্রস্তাব পুলিশ থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতার। এরপর লজ্জায় এক কিশোরী আত্মঘাতী হন। এমনকি আর এক কিশোরী কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা নেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই কিশোরী বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। গতকাল হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিলে তাকে চাইল্ড লাইন নিজেদের হেফাজতে নেয়। এমনি চাঞ্চল্য কর ঘটনাটি ঘটেছে গত ১১ই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার চৌমহনী এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ১১ই ডিসেম্বর রাতে চৌমহনী এলাকায় জলসার আয়োজন করে স্থানীয়রা। সেই জলসায় সামিনা খাতুন, মঞ্জিলা খাতুন ও রেহেনা খাতুন যায়। সেখানে যাত্রা শুরু আগে গ্রামেরই তিন যুবক তাদের মোটর সাইকেলে করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত তিনজনের নাম আলমগির সরকার, সামিম সরকার ও আক্রাম সরকার বলে জানা গেছে। বিষয়টি নজরে আসে কর্ত্যবরত এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের। অভিযুক্ত তিনজন সহ ধর্ষিতা তিন কিশোরীকে নিয়ে আসা হয় স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে। এরপর খবর দেওয়া হয় তাদের পরিবারকে ও বিষয়টি তাদের মধ্যে মিটিয়ে নিতে বলা হয়। সেই সালিশি সভায় তারা সব মিটিয়ে নেয় বলে জানা গেছে। বিষয়টি সবায় জেনে যাওয়ায় পর দিন সকালে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় মঞ্জিলা খাতুন। এমনকি তারপর দিন কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে রেহেনা খাতুন। তড়িঘড়ি তাকে বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করানো হয়। গত ১৬ই ডিসেম্বর তপন থানায় অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় মৃতা ও নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করে তপন থানার পুলিশ। এখনও একজন অধরা। তার খোঁজে তল্লাশি চালাছে তপন থানার পুলিশ।
এদিকে নির্যাতিতা দু’জন কিশোরীকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয় গতকাল। আজ তাদের চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটিতে তোলা হয়। এর পাশাপাশি দু’জনেরই গোপন জবানবন্দী নেওয়া হয় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালতে। এরপর আজই তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় চাইল্ড লাইনের পক্ষ থেকে। নির্যাতিতা মেয়ে দুটির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে চাইল্ড লাইনের কো-অডিনের্টর সুরোজ দাস জানিয়েছেন।
অন্যদিকে জেলা পুলিশ সুপার শিসরাম ঝাজারিয়া জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে অভিযুক্তরা শাস্তি পাবে বলে আশ্বাসদেন তিনি।