খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ হরিয়ানার গোহনাতে পুলিশ হেফাজতে গোবিন্দ (১৫) নামে এক দলিত কিশোরের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ওই কিশোরকে কবুতর চুরি করার অভিযোগে বুধবার পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছিল।
নিহত কিশোরের পরিবারের অভিযোগ, যখন গোবিন্দকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় যাওয়া হয় তখন পুলিশের পক্ষ থেকে টাকা দাবি করা হয়। ওই পরিবারটি দশ হাজার টাকা দিলেও আরো পাঁচ হাজার টাকার দাবি জানায় পুলিশ। পরদিন গোবিন্দ’র মা টাকা নিয়ে থানায় হাজির হলে পুলিশ কর্মীরা তাকে বলে সে পালিয়ে গেছে। যদিও বৃহস্পতিবার তার গ্রামেই গোবিন্দ’র লাশ পাওয়া যায়। তার সারা দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকায় পুলিশ হেফাজতে মারধরের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে ওই পরিবারটি দাবি জানায়।
গোবিন্দ’র লাশ উদ্ধার হওয়ার পর তার পরিবারের লোকজন ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা এই ঘটনার প্রতিবাদে রেললাইন এবং স্থানীয় সড়ক বন্ধ করে দেয়।
লোকাল টিভি বলছে, গোহনা সিটি থানায় কর্মরত দুই পুলিশকর্মী ১৫ বছর বয়সী দলিত কিশোরকে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে ফেলে দেয়। তার লাশ উদ্ধার হওয়ার পরে পরিবারের সদস্যরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং দুই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বিনোদ কুমার জানান, এই ঘটনায় পুলিশ অফিসার বা অন্য যে কেউ দায়ী হোক না কেন তাকে গ্রেফতার করা হবে।
ঘটনাস্থালে পৌঁছে গোহনার কংগ্রেস বিধায়ক জগবীর মালিক এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানান এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান।
এ নিয়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি দুই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার পরে ওই পরিবার অবশেষে বিক্ষোভ দেখানো বন্ধ করে।
হরিয়ানার ফরিদাবাদে গত মঙ্গলবার দুর্বৃত্তরা এক দলিত বাড়িতে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলে জীবন্তদগ্ধ হয়ে দুটি শিশু নিহত হয়। রাজ্যের যমুনানগরে মঙ্গলবার রাতে রজত সিং নামে ২১ বছর বয়সী এক দলিত যুবককে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার এক ১৫ বছর বয়সী দলিত কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে হরিয়ানা পুলিশের বিরুদ্ধে।