পরিতোষ বর্মণঃ দূর্গা পুজাতে দেবীর অলংকার হিসেবে শোলার তৈরি বিভিন্ন সাজের ব্যবহার দীর্ঘ দিন ধরেই হয়ে আসছে। তাই পুজোর সময় নাওয়া-খাওয়া প্রায় ভুলে যায় মালাকার শিল্পীরা। পিতৃপক্ষ শেষ হয়ে মাতৃপক্ষের সূচনা ঘটেছে। শারদ উৎসবকে কেন্দ্র করে অন্যান্য শিল্পিদের মতোই নিজেদের কাজে চরম ব্যস্ত দেবীর শোলার সাজ তৈরির কারিগর ও মালাকাররাও। কিন্তু বর্তমান রোল গোল্ডের সাজের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে কতটা লাভের মুখ দেখবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা তাদের কাটে না। বাপ-দাদা পূর্ব পুরুষদের এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতেই এখন তাদের এই লড়াই চালিয়ে যাওয়া। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই মালাকাররা শোলার সাজ তৈরি করে থাকেন। থার্মোকল বা রোলগোল্ডের তৈরি কৃত্তিম সাজ কম দামের কারণে বাজার দখল করলেও আজও ডাকের সাজের চাহিদা অম্লান। এই জেলার মালাকার শিল্পীদের অভিযোগ, শোলার উৎপাদন দিন দিন কমছে। তার কারন হিসেবে তারা বলেন আগাছা দমনের জন্য কৃষি জমিতে ব্যাপক কীটনাশক ব্যবহারের ফলে শোলার উৎপাদন ব্যাপক হারে কমে গেছে। ফলে শোলার জন্য এখন নির্ভর করতে হচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর। আগে যেখানে এক বোঝা শোলার দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০টাকা। এখন তা বৃদ্ধ পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকায়। ফলে শোলার জোগান কমছে দিন দিন। এরই মাঝে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রং, পুঁথি ও চুমকির দাম। রোলগোল্ডের নকল সাজের দাম ২৫০-৩০০ টাকা সেখানে শোলার সাজের দাম সর্বনিম্ন ৪০০টাকা। এখানেই সমস্যা শুরু হয়েছে। দামের কারণে এবং কাচামালের জোগানের অভাবে প্রায় বন্ধের মুখে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প। লাভ না থাকার কারণে মুখ ফিরিয়েছে নতুন প্রজন্ম। ফলে প্রশ্ন উঠেছ তবে কি বন্ধ হয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী ডাকের সাজ।
বালুরঘাটে সোলার শিল্প
মঙ্গলবার,১৩/১০/২০১৫
686