অনলাইনে পূজো
অমিয় আদক
বলছি আমি দুগ্গা ঠাকুর, মনটি দিয়ে শোন,
আমায় দেখতে না পেয়ে সব, ভয় পেওনা যেন।
এবার পুজোয় সপরিবার, মর্তে যাবোই না,
বিষ ভরপুর হাইব্রিডেরই ফলতো খাবোই না।
গণেশ আমার বড়ই পেটুক, সেও যেতে নয় রাজী।
বলছে গণেশ, “মর্তবাসী, হাড় বজ্জাত পাজি।
ফিবছরে একই পোশাক, ধুতি আর পৈতে,
এ লজ্জ্বার ভারটা আমি, পারিনা বইতে।
নিজেরা সব পরবে পূজোয় দামীদামী ড্রেস,
আমার বেলায় ধুতি পৈতে কিপ্টেমো অশেষ।”
লক্ষ্মী জানায়, “এবার পূজোয় আমাকে বাদ দাও,
সরস্বতী কার্তিককে সঙ্গে নিয়ে যাও।
আমি বাপু শান্ত মেয়ে প্যাঁচ বুঝিনা বেশি,
‘হাই হ্যালো’ বলে মুখে ফোটাই না তো হাসি।
কাগজেরই খবর শুনে পাচ্ছি মনে ভয়,
পূজোর লোভে মর্তে যাওয়া, ঠিক নয় বোধহয়।”
ষড়াননতো এই ব্যাপারে মোটেই নয় রাজী,
ছেলেটা মোর দিনকে দিন যাচ্ছে হয়ে পাজি।
সারাটা দিন ফেসবুকেতে নাওয়া খাওয়া ভুলে,
দিচ্ছে কলপ ফি হপ্তায় কোঁচকানো তার চুলে।
কথাটি তার, “মর্তে গিয়ে চাইনা পূজো আর,
স্মার্টফোনেতে চলুক আমার ফেসবুক ট্যুইটার।”
বিদ্যেবতী সরস্বতী বোলনা তার কথা,
ব্যাপার স্যাপার শুনলে আবার ঘুরেই যাবে মাথা।
কথাটি তার, “পড়ুয়ারা নম্বরতো পায়,
টুকলি করুক ছোট্ট ওরা, কী বা আসে যায়।
দেশটা জুড়ে নেতারা চোর করছে পকেট ভারি,
টুকলি করে পড়ুয়ারা, দোষ কী আহামরি?
চারটে দিনের লম্বা পূজো দাঁড়িয়ে কোমর ধরে,
মাঘের পূজো একটি দিনের, যাব নিয়ম করে।”
তাই বলছি কৈলাসেতে থাকবো একটি ফ্রেমে,
কষ্টকরে মর্তলোকে যাবনা আর নেমে।
অনলাইনে করো পূজো ভাবনা কিসের তরে?
ল্যাপটপতো অনলাইনে সবার ঘরেঘরে।