আলোকচিত্র শিল্পী সুশান্ত মুখোপাধ্যায় বিশ্ববন্দিত


মঙ্গলবার,১৫/০৯/২০১৫
566

চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশিক্ষক ভলিবলঃ  আন্তজাতিক সংস্থা UNESCO 2015 সালটিকে আন্তজাতিক আলোকবর্ষ হিসাবে ঘোষণা করেছে। বিশ্ববাসী এই বছরে আলোর নানারকমের আধুনিকিরণ দেখার সুযোগ পাবেন। International Year of The Light ( I.Y.L ) নামে একটি আন্তজাতিক কমিটি গঠিত হয়েছে। যে কমিটির প্রধান আয়োজক UNESCO, NASA & SPIE এরা ছাড়াও আরও একশতটি পৃথিবীর নাম করা সংস্থা যুক্ত আছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই আন্তজাতিক সংস্থাটি সারা পৃথিবীর দেশগুলির মধ্যে আয়োজন করেছিলেন এক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা বিষয় হিসাবে নিধারিত করেছিলেন WORLD OF LIGHT বা আলোর পৃথিবী।
এই প্রতিযোগিতার সংবাদটি ইন্টারনেটে মাধ্যমে পৌঁছে যায় হাওড়া জেলার নাগরিক সুশান্ত মুখোপাধ্যায়’র কাছে। সেই দিনই মনস্থ করেন ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। প্রতিযোগিতার সমস্ত রকম নিয়ম বিধি মেনেই ইন্টারনেটে মাধ্যমে একটি ছবি পাঠিয়ে দিলেন সংস্থাটির সদর দফতরে, ছবিটি তারই তোলা। সুন্দরবনে ছবি তুলতে গিয়ে সুশান্ত একটি প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছে দেখেন, কলকাতার একটি N.G.O. সংস্থা ওখানকার স্কুলে পড়া ছেলেমেয়েরা যাতে রাত্রেও পড়াশোনা করতে পারে তার জন্য পঞ্চাশজন ছেলে মেয়েদের একটি করে SOLAR LIGHT SET দান করে। ওই পঞ্চাশজন ছেলে মেয়ে SOLAR LIGHT SET গুলিকে জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে আছে SOLAR LIGHT -এর আলোয় তাদের হাসিমুখ ও চোখগুলি জ্বলজ্বল করছে। কিছুদিন পর সুশান্ত মুখোপাধ্যায় ইন্টারনেটে মাধ্যমে খবর পান তার প্রেরিত ছবিটি সারা বিশ্বের দেশগুলি থেকে পাঠানো ছবিগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে। তাকে আমেরিকায় এসে পুরস্কারটি গ্রহণ করার চিঠি ও আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়। খবরটি পেয়ে সুশান্ত মুখোপাধ্যায় মুখ ও চোখ উজ্বল হয়ে ওঠে, ভাবতেই পারছিলেন না এও সম্ভব। আমার তোলা ছবি আন্তজাতিক খ্যাতি লাভ করেছে। আমেরিকায় গিয়ে পুরস্কার নিতে পারেননি আর্থিক ও অন্য অসুবিধা থাকার জন্য। তবে UNESCO সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে পুরস্কার ও শংসাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন যথা সময়ে। এবং এটাও জানতে পেরেছেন সারা বছর ধরে পৃথিবীর ৮৫ টি দেশে পুরস্কার প্রাপ্ত ছবিগুলি প্রদশিত হবে। একদিন পেয়ে গেলাম সুশান্ত মুখোপাধ্যায়কে। তাঁর অসামান্য সাফল্যের কথা বলতেই উত্তর দিল যেন এমন কিছু নয়। বললাম তোমার এই সাফল্যে হাওড়াবাসী গর্বিত বিশেষ করে যারা ফটোগ্রাফি নিয়ে জড়িয়ে আছেন। ওর কাছ থেকেই জানতে পারলাম ছোটবেলা থেকে কোনদিনই ফটোগ্রাফি ওকে আকৃষ্ট করেনি। শিবপুরের মুখোপাধ্যায় পাড়ায় মুখোপাধ্যায় পরিবারে জন্ম। পিতা দুর্গাচরণ মুখোপাধ্যায় ও মাতা শ্রীমতী কল্যানী মুখোপাধ্যায় কোনও দিন ফটোগ্রাফি নিয়ে উৎসাহ দেননি, সুশান্তর এক কাকা সারথীচরণ মুখোপাধ্যায় উনি বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা নিয়ে ফটো তুলতেন এই টুকুই দেখতো। তবে ওর শুভ উপনয়ন বাবা আমাকে একটি ক্যামেরা উপহার দিয়েছিলেন। মাঝে মাঝে ওই ক্যামেরা দিয়ে ফটো তুলতাম, ভাবিনি কোন দিন ফটোগ্রাফার হবো, একবার একটি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় আমার একটি ছবি পুরস্কার পায়, আমি যখন পুরস্কারটি গ্রহণ করেছিলাম তখন অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি যিনি আমাকে পুরস্কারটি প্রদান করেছিলেন, তিনি আমাকে বলেছিলেন তোমার ছবিটি দেখলাম খুব ভালো হয়েছে তোমার মধ্যে ভালো আলোকচিত্র শিল্পী হওয়ার সব গুনগুলিই আছে চেষ্টা করলে তুমি একদিন নাম করবে। ব্যস সেটাই আমার অনুপ্রেরণা। আমি সেই থেকে নানা রকমের ছবি তুলতে লাগলাম। আমাকে আমার পাঠানো ছবি UNESCO -এর বিচারে আমেরিকায় স্থান পেয়েছে কোনোদিন ভাবিই – নি আমি আলোকচিত্র শিল্পী হবো। সাঁতরাগাছি কেদার নাথ স্কুলে পড়ে, নরসিংহ দত্ত কলেজ থেকে বিএ, স্নাতক হয়ে বেরিয়ে চাকরী না পেয়ে ছোট একটি ওয়েলডিং -এর কাজ শুরু করে ভালো ভাবেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলো, সেখান থেকে ফটোগ্রাফার। সত্যি ভাবতেও আমার নিজেরই অবাক লাগে। এখনও সুশান্ত বেতড়ের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের এটি এমের উল্টোদিকে সারাদিন ধরে ব্যবসা চালান সাথে ফটোগ্রাফি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেন। ওনার সাথে কথা বলার পর বেরিয়ে আসছি ওনার বন্ধুরা যারা সুশান্তর গর্বে গর্বিত তারা বললো ও আমাদের কাছে ভারতবর্ষের অনন্য আলোকচিত্র শিল্পী মাননীয় রঘু রাই।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট