বিশেষ প্রতিনিধি, মঙ্গলকোটঃ সম্প্রতি এক দৈনিকের প্রকাশিত প্রাক্তন বিচারকের বিনা নোটিশে রেকর্ড বদলের অভিযোক উঠেছে কাটোয়ায়। খবর প্রকাশিত হবার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছেন অতিরিক্ত জেলা শাসক ও জেলা ভূমি সংস্কার আধিকারিকরা। আধিকারীক আশীষ সাহা কাটোয়া মহকুমার ভূমি সংস্কার আধিকারীকে অভিযোগপত্র এবং তদন্তের ( মেমো নাম্বার ৯৯১ / ৩ ) নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগকারী কোন নোটিশ ছাড়া শুনানি হয়, ওই জমির ( খতিয়ান নম্বর – ২০২৩, দাগ নম্বর – ৬৬৭, পরিমাণ – ৬০ শতক, জে. এল . নম্বর – ০৭, শ্রীঘণ্ড মৌজা)। প্রসঙ্গত মঙ্গলকোট নিবাসী অবসর প্রাপ্ত বিচারক মোল্লা নুরুল হুদা গত ২ জুন কাটোয়া ১ নং ব্লক ভূমি আধিকারীক, কাটোয়া মহকুমা ভূমি আধিকারীক, কাটোয়া মহকুমা শাসক এবং ৫ জুন জেলা ভূমি আধিকারীকদের তাঁর পৈতিক সম্পত্তির রেকর্ড বদলের অভিযোগটি লিখিত ভাবে জানান। কিছু দিন পর ২৭ জুলাই অভিযোগের শুনানির জন্য অভিযোগকারী ও সেই সাথে অভিযুক্ত রেকর্ড করা ব্যক্তি সর্বপরি তৎকালীন ব্লক ভূমি আধিকারীক -কে ডাকা হয়েছিল। তদন্তকারী অফিসার হিসাবে কাটোয়া মহকুমার ভূমি আধিকারীক কমল মণ্ডল দায়িত্বে থাকেন। তারপর সোমবার দুপুরে শুনানির জন্য অভিযোগকারী বিচারক কে কথা বলার জন্য বলতে বলা হয়। বিচারক মোল্লা নুরুল হুদা বলেন, বিক্রি নয় এমন পৈত্তিক সম্পত্তি কি ভাবে বিনা নোটিশে শুনানিতে জমির মালিকানার রেকর্ড বদল হল ? তাঁর উত্তরে তদন্তকারী জানিয়েছেন, মিউটেশনের রেজিষ্ট্রি ডাক অনেক সময় ডাক বিভাগ নেই না, তাহলে প্রশ্ন উঠেছে মিউটেশন করার সময় অগ্রিম রেজিষ্ট্রি ডাকের জন্য টাকা কেন নেওয়া হয়। তাছাড়া ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে কেন ডাকা হয়নি জমির রেকর্ড বদলের শুনানিতে ? অভিযোগকারীর এই রকম নানান প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেন নি মহকুমা ভূমি আধিকারীক কমল মণ্ডল বাবু। এই দাবি জানিয়েছেন অবসর প্রাপ্ত বিচারক মহাশয়। বিশেষজ্ঞদের মতে – প্রকান্তরে ভূমি সংস্কার দপ্তর মেনে নিচ্ছে বিনা নোটিশে শুনানিতে জমির ( মিউটেশন কেস নম্বর – ১৭৭২ / ১৪ কাটোয়া ১ নং ভূমি সংস্কার বিভাগ ) রেকর্ডটি বদল হয়েছে। উল্লেখ্য যে, কোন জমির মালিকানা বদলের জন্য রেজিষ্টি ডাক যোগে নোটিশ ও পরবর্তী ক্ষেত্রে দুপক্ষ কে শুনানির জন্য ডাকা হয়। এই ক্ষেত্রে কোনটাই মানা হয়নি বলে অভিযোগ। অভিযোগকারীর আরও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারীক অসৎ উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছেন রেকর্ডে। অভিযুক্ত ব্যক্তি রেকর্ড বদলের জন্য যে দলিল টি পেশ করেছেন, সেই দলিলের দাতা হালেমা বিবির একমাত্র ওয়ারিশ ওই বিচারক মোল্লা হুদা। তাই শুনানির জন্য বিচারক কে নোটিশ করা আবশ্যিক ছিল বলে প্রাক্তন ভূমি সংস্কার দপ্তরের এক কর্তা মানছেন। কাটোয়া মহকুমা ভূমি আধিকারীক -কে এই বিষয়ে প্রশ্ন কা হলে তিনি বলেন, বিনা নোটিশে রেকর্ডটি হয়েছে কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে, এই বিষয়টি খুব তাড়াতাড়ি জানানো হবে। অভিযোগকারী বিচারক জানিয়েছেন, তদন্ত প্রক্রিয়া দেখা যাচ্ছে ভূমি সংস্কার দপ্তরের একাংশ সংশ্লিষ্ট ব্লক ভূমি আধিকারীক কে তাঁর এহেন ( রেকর্ড বদল) কাজের বিষয়ে আড়াল করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে পেশ হওয়া অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে হাইকোর্ট -এ রিট পিটিশন করব সুবিচারের জন্য, এদিকে কাটোয়া প্রস্তাবিত এনটিপিসি সংলগ্ন এলাকায় জমি নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরী হয়েছে। সেখানে স্থানীয় পঞ্চায়েত, ভূমি সংস্কার দপ্তর, জমি দাদাল, শাসক দলের একাংশ মিলে জমির মালিকানা বদল করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিচারক। এই রকম ষড়যন্ত্রের শিকার বেশ কয়েকজন, তার মধ্যে একদা শ্রীখন্ডের ভূমিপুত্র বর্তমানে মঙ্গলকোট নিবাসী মোল্লা নুরুল হুদা অন্যতম বলে জানা গেছে। ( ছবিঃ প্রতিকী )
প্রাক্তন বিচারকের জমির মালিকানা বদলের তদন্ত শুরু হল
বুধবার,০৫/০৮/২০১৫
817