রায়গঞ্জে শুধুমাত্র প্রাতঃভ্রমণ কারীদের কেন্দ্র করে গজিয়ে উঠলো নতুন একটি বাজার


মঙ্গলবার,২১/০৭/২০১৫
631

বিকাশ সাহাঃ    উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জে শুধুমাত্র প্রাতঃভ্রমণ কারীদের কেন্দ্র করে গজিয়ে উঠলো নতুন একটি বাজার। রায়গঞ্জ রেল স্টেশনের দক্ষিন দিকে অর্থাৎ সেন্ট্রাল মার্কেটের পাশে গজিয়ে ওঠা এই নতুন বাজারে ক্রেতার সংখ্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। খদ্দেরের চাহিদা মেটাতে বাড়ছে বিক্রেতাদের সংখাও। গোটা রায়গঞ্জ শহরে রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছে এই নতুন বাজার। প্রাতঃভ্রমণ কারীদের বক্তব্য অনুযায়ী টাটকা সবজিতে ভরপুর এই নতুন বাজারে সবজির সাথে সাথে পাওয়া যাচ্ছে টাটকা মাছ ও মাংশ। ফলে রায়গঞ্জের অন্য বাজার গুলির থেকে নতুন গজিয়ে ওঠা বাজারে দিন দিন ভিড় বাড়ছে। এখানে অন্য বাজারের মত নেই ফড়েদের উৎপাত। ফলে রায়গঞ্জের অন্যান্য বাজারের তুলনায় অনেক কম দামে টাটকা জিনিস হাতে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন সকালে রাধিকাপুর কাটিহার লোকাল ট্রেন, কলকাতা থেকে আসা রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ট্রেন, শিলিগুড়িগামী ডিএমউ, দিল্লী থেকে আসা আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস রায়গঞ্জ স্টেশনে ঢুকলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১ নম্বর লাইনে ট্রেনটি আসায় ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মই বেশি ব্যবহার হয়। মাঝে মধ্যে ২ নম্বর লাইনে ট্রেন আসলেও অল্প সময়ের মধ্যেই ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের ভিড় কমে যায়। ফলে বেশিরভাগ সময়টায় ফাঁকা পড়ে থাকে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম। তাই প্রতিদিন ভোর হতে না হতেই রায়গঞ্জ শহরের স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ প্রাতঃভ্রমণের জন্য কোলাহলহীন এই ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মকেই বেছে নিয়েছেন। ফলে সতেজ হওয়ায় ভরপুর টানা লম্বা প্ল্যাটফর্মে ঘাম ঝরাতে ছুটে আসেন শহরের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। “মর্নিংওয়াক” করার পর দৈনদিন কাজের ফাঁকে হাতের নাগালে পাওয়া টাটকা সবজি কেনার কাজটিও তাঁরা সেরে ফেলছেন অনায়াসে। গ্রামের কৃষকরা নিজের জমির টাটকা সবজি ও পুকুরের টাটকা মাছ তুলে নিয়ে এই বাজারে বিক্রি করতে আসেন। কাটিহারগামী ভোর সাড়ে পাঁচটার ট্রেনে ডালিমগাঁ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ ও বাঙ্গালবাড়ি এলাকার কৃষকরা টাটকা সবজি ও মাছ নিয়ে চলে আসেন রায়গঞ্জে। প্রথম দিকে রায়গঞ্জ স্টেশনে নামার পর প্রাতঃভ্রমণকারীরা সবজি বিক্রেতা কৃষকদের ডেকে ডেকে দু একটা করে জিনিস নেওয়া শুরু করে ছিলেন। সেই শুরু, এরপর থেকে এক এক করে সবজি বিক্রেতা প্ল্যাটফর্মের ধারে টাটকা সবজি নিয়ে বসতে শুরু করেন। প্রায় শতাধিক প্রাতঃভ্রমণকারীর চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকায় গ্রাম থেকে আসা কৃষকদের অনেকেই এই রেল স্টেশনের পাশে অস্থায়ী ভাবে বসতে শুরু করে। চলে দেদার বেচাকেনা। নেই ফড়েদের উৎপাত। ফলে বিক্রেতা কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবার আশায় ভিড় জমাতে থাকেন এই বাজারে। বিক্রেতারা সাড়ে পাঁচটায় রায়গঞ্জে নেমে নিজেদের দোকান সাজান। আবার বেচাকেনা সেরে ঠিক সকাল সাড়ে আটটায় তাঁরা রাধিকাপুর গামী লোকাল ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরে যান।
ক্রমেই এই বাজারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সবজি ও মাছের সাথে সাথে মাংশ ও হাঁস মুরগির দেশি ডিম মিলছে এই সদ্য গজিয়ে ওঠা বাজারে। এখন আর শুধু প্রাতঃভ্রমণ কারিরাই নন, আসেপাশের লোকজনও এখানে এসে সকালের বাজার সেরে নিচ্ছেন। ক্রেতাদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রায়গঞ্জ শহরের অন্যান্য বাজারের তুলনায় এখানে ক্রেতারা যেমন কম দামে টাটকা বাজার করছেন তেমনি অন্য বাজারের তুলনায় লাভবান হচ্ছেন গ্রাম থেকে আসা বিক্রেতা কৃষকরা।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক গোবিন্দ সাহা বলেন, “মর্নিংওয়াক” করে বাড়ি যাওয়া মাত্র চা খেয়ে বাজার করতে বেড়তে হত। তারপর বাজার থেকে দৌরে এসে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হিমশিম খেতে হত। বাজার দেরিতে আসায় ঠিকমত রান্নাও হতো না। প্রাতঃভ্রমণ করতে এসে এখন প্রতিদিন সকালে এই বাজার থেকে টাটকা সবজি বাজার করে বাড়ি ফিরি।
বিক্রেতা কৃষক পলাশ বর্মণ বলেন, ভোরের ট্রেনে এসে আগে রায়গঞ্জের অন্যান্য বাজারে যেতাম। সেখানে ফড়েদের অত্যাচারে সবজির দাম ঠিকমত পেতাম না। এই বাজারে আমার সব সবজি বিক্রি হয়ে যায়। তুলনামূলক ভাবে লাভও অনেক বেশি থাকে।RSCN7246

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট