২২ গজে এসেই মোস্তাফিজ -এর ৫ উইকেট


শুক্রবার,১৯/০৬/২০১৫
690

 খবরইন্ডিয়াঅনলাইনঃ    বাংলাদেশের দেয়া ৩০৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে ভারত। মিরপুরের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ভালো শুরুই পেয়েছিল ভারত। তবে তাসকিন আহমেদ, অভিষিক্ত মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসানের বোলিং তোপে পাঁচ উইকেট হারিয়েছে ভারত। ১৯৭ রানে অষ্টম উইকেট হারায় ভারত।

বাংলাদেশের দুই তরুণ তুর্কি তাসকিন ও মোস্তাফিজ ভারতের প্রথম চার উইকেট দখল করেন। পঞ্চম উইকেটটি নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সাকিবের করা প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে অধিনায়ক ধোনি উইকেটের পেছনে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত হন। ধোনি ৫ রানের বেশি এগুতে পারেননি।

নতুন বলে মোস্তাফিজ, তাসকিন কিছুটা কাঁপিয়েছিলেন ভারতীয় ওপেনারদের। তবে সেটি উইকেট এনে দিতে পারেনি বাংলাদেশকে। মাশরাফির করা ইনিংসের দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে শেখর ধাওয়ানের ক্যাচ ফেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ধাওয়ান তখন ১৫ রানে ব্যাট করছিলেন। সেই ধাওয়ানকে ফিরিয়েছেন তাসকিন নিজের দ্বিতীয় স্পেলে। ১৬তম ওভারের শেষ বলে ধাওয়ান ক্যাচ দিয়েছেন মুশফিকের হাতে। তিনি ৩০ রান করেন। উইকেটে এসে চার বল স্থায়ী হয়েছেন কোহলি। তাসকিনের বাউন্সারে তিনিও মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন।

দ্বিতীয় স্পেলে এসে বল হাতে উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর। ইনিংসের ২১তম ওভারে হাফ সেঞ্চুরিয়ান রোহিত শর্মা বিভ্রান্ত হন বাঁহাতি এই পেসারের স্লোয়ারে। ৬৩ রান করেন রোহিত। নিজের পরের ওভারে আবার আজিঙ্কা রাহানেকে স্লোয়ারের শিকার বানান মোস্তাফিজ। তবে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন  নাসির। রাহানে ৯ রান করেন।

এর আগে তিন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসানের অর্ধশতকে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো তিনশ’ পার হয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। প্রথম ওয়ানডেতে জিততে ৩০৮ রান চাই অতিথিদের।

বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুই বল বাকি থাকতে ৩০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে এটাই তাদের সর্বোচ্চ রান। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে একই মাঠে ৬ উইকেটে করা ২৯৬ ছিল আগের সর্বোচ্চ।

স্বাগতিকদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করা এই দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন পঞ্চম ওভারের পর থেকে।

উমেশ যাদবের করা ষষ্ঠ ওভারে তিন চার ও এক ছক্কায় ১৮ রান নেন তামিম। স্লিপের পাশ দিয়ে হয় প্রথম চার, পরেরটি তিনি হাঁকান পয়েন্টের ওপর দিয়ে। বোলার আর মিডঅনের মাঝ দিয়ে তৃতীয় চারটি আদায় করে নেন তামিম। আর শেষ বলে লংঅফ দিয়ে উড়িয়ে সীমানার বাইরে পাঠান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

৫.৪০ থেকে রান রেট বেড়ে হয় ৭.৫০; এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তামিম-সৌম্যকে। উমেশের সেই ওভারের পর তামিম নিজেকে একটু সামলে রাখলেও অতিথি বোলারদের ওপর চড়াও হন সৌম্য। তাতেই ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

১৩.৪ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটি ভাঙে সৌম্যর (৫৪) রান আউটে। তার ৪০ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি সাজানো ৮টি টি চার ও একটি ছক্কায়।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকেই ফ্লাডলাইট জ্বলে উঠে, বৃষ্টি হানা দেয় তার একটু পরেই। ষোড়শ ওভারে বৃষ্টির বাধায় এক ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকার আগেই অর্ধশতকে পৌঁছান তামিম। ওয়ানডেতে এ নিয়ে মাত্র পঞ্চমবার একই ম্যাচে অর্ধশতক পেলেন বাংলাদেশের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

ষোড়শ ওভারে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় বাংলাদেশের রান রেট ছিল আট ছুঁই ছুঁই। আবার খেলা শুরু হওয়ার পর রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ৫ ওভারের এক স্পেলে তামিম, লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে স্বাগতিকরা।

৬২ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৬০ রান তামিম এগিয়ে এসে তুলে মারতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে আউট হন। একইভাবে আউট হন দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিক। আর এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন অভিষিক্ত লিটন।

১২৩ রানে ১ উইকেট থেকে ১৪৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে পড়া বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে সাকিব আল হাসান ও সাব্বির রহমানের ব্যাটে। শুরুতে সতর্ক ব্যাটিং করেন এই দুই জনে। ২৫তম ওভারে রান রেট নেমে আসে ছয়ের নিচে; তখন রান নিয়ে খুব একটা ভাবেননি এই দুই জনে। সময় গড়ানোর সঙ্গে শট খেলা শুরু করেন তারা, বাড়ে রান তোলার গতিও।

৩৫তম ওভারে রান রেট আবার ছয়ের ওপরে নিয়ে আসেন সাকিব-সাব্বির। তাদের ৮৩ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। রবিন্দ্র জাদেজার বলে সাব্বির বোল্ড হলে ভাঙে ১৪.২ ওভার স্থায়ী জুটি। ৪১ রান করা সাব্বিরের ৪৪ বলের ইনিংসটি গড়া ৫টি চার ও একটি ছক্কায়।

এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি সাকিব। অর্ধশতকে পৌঁছে উমেশ যাদবের বাজে একটি বলে জাদেজাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। বলটি মাঠের যেকোনো জায়গায় পাঠাতে পারতেন ৬৮ বলে ৫২ রান করা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর তিনশ’ পার হতে বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল নাসির হোসেনের দিকে। ২৭ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলা এই ব্যাটসম্যান সেদিকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন দলকে। কিন্তু উমেশের বলে তিনি জাদেজার তালুবন্দি হলে বাংলাদেশের তিনশ’ রানে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা জাগে।

শেষ ওভারগুলোয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান না থাকায় আর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় এই সময়ে খুব বেশি রান সংগ্রহ করতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ঠিকই গড়ে তারা।

শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ২১ রান করেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার দৃঢ়তায় ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো তিনশ’ পার হয় বাংলাদেশের সংগ্রহ।

ভারতের পক্ষে ৫১ রানে ৩ উইকেট নেন অফস্পিনার অশ্বিন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন উমেশ ও ভুবনেশ্বর।

চাক‌রির খবর

ভ্রমণ

হেঁসেল

    জানা অজানা

    সাহিত্য / কবিতা

    সম্পাদকীয়


    ফেসবুক আপডেট